উত্তপ্ত হতে পারে চীন-ইইউ সামিট
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০দেখা হওয়ার কথা ছিল জুন মাসে। তিন দিনের সামিটে জার্মানিতে আসার কথা ছিল চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের সামিট। যার মূল উদ্যোক্তা জার্মানি।
সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কনফারেন্স শুরু হওয়ার কথা। বস্তুত আগে এই কনফারেন্সের জন্য তিনদিন ধার্য হয়েছিল। জার্মানির লাউপজিগে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ইইউ-চীন সামিট। কিন্তু করোনার কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। এর পর বিশ্ব রাজনীতি এবং কূটনীতিতে বহু জল বয়ে গিয়েছে। চীনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের পরিবর্তন হয়েছে। তবে ইইউ-র সঙ্গে চীনের এই কনফারেন্স যে গুরুত্বপূর্ণ তা মনে করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। তাই শেষ পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই সামিট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে তিনদিনের বদলে একদিনেই সামিট শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনা কালে চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্ক কার্যত তালানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বাকযুদ্ধ প্রায় প্রতিদিনই লেগে রয়েছে। অ্যামেরিকা চীনের কয়েকটি এবং চীন অ্যামেরিকার কয়েকটি কনসুলেট বন্ধ করে দিয়েছে। চীনের কয়েকজন কনসুলেট কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে অ্যামেরিকা। এই পরিস্থিতিতে ইইউ-র সঙ্গে চীনের আলোচনা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। এবং সেখানে জার্মানির অবস্থানও অত্যন্ত স্ট্র্যাটেজিক।
তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, করোনা কালে ইউরোপীয় ইউনিয়নও চীনকে খুব ভালো চোখে দেখছে না। বস্তুত সাম্প্রতিক কালে চীনের কয়েকটি পদক্ষেপ মোটেই ভালো চোখে দেখেনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তার মধ্যে অন্যতম উইগুর মুসলিমদের সঙ্গে চীনের ব্যবহার। এ ছাড়াও যে ভাবে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের আন্দোলনকে চীন দমন করছে, তা নিয়েও প্রকাশ্যে মুখ খুলেছে ইইউ-র বেশ কিছু সদস্য। কিন্তু চীন কারও কথাই শুনতে চায়নি। উপরন্তু হংকংয়ে বিশেষ নিরাপত্তা আইন জারি করেছে। ইইউ-র কোনও কোনও সদস্য রাষ্ট্র যাকে অগনতান্ত্রিক এবং স্বৈরাচারী বলে মনে করে।
এখানেই শেষ নয়, করোনা কালে চীন 'মাস্ক রাজনীতি' করেছে বলে কোনও কোনও বিশেষজ্ঞের অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, করোনার প্রথম ঢেউ সামলে গোটা বিশ্বের কাছে চীন মাস্ক, মেডিকেল সামগ্রী, ওষুধ এবং করোনা পরীক্ষার কিট বিক্রি করেছে। করোনার সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করলেও চীন বিষয়টিকে ত্রাণসাহায্য পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছে। ইউরোপেও একই কাজ করেছে চীন। যা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের অসন্তোষ আছে। অনেকেই মনে করছে, চীন আধুনিক বিশ্বে অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক স্বৈরাচার তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার ঐতিহাসিক বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে এই সমস্ত প্রসঙ্গই উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকের আহ্বায়ক জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ছাড়াও এতে উপস্থিত থাকবে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন।
এসজি/জিএইচ (ম্যাথিয়াস ফন হেইন)