উইলিয়ম রাদিচে - এক রবীন্দ্রমগ্ন অনুবাদক
৯ আগস্ট ২০১১রবীন্দ্রনাথ কৃত ‘গীতাঞ্জলি'র ইংরেজি অনুবাদ আইরিশ কবি ডব্লিউ বি ইয়েটস'এর ভূমিকা নিয়ে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১২ সালে৷ প্রকাশক লন্ডনের ইন্ডিয়ান সোসাইটি৷ প্রথম ম্যাকমিলান সংস্করণ বেরোয় ১৯১৩ সালে৷ ঐ বছরেই রবীন্দ্রনাথের নোবেলপ্রাপ্তি৷ তিনিই এশিয়া মহাদেশের প্রথম লেখক যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন৷ ‘গীতাঞ্জলি'র যে-অনুবাদ রবীন্দ্রনাথ নিজে উপহার দেন তা এক শাশ্বত মর্যাদায় অধিষ্ঠিত৷ সেই মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেও কবি ও অনুবাদক উইলিয়ম রাদিচে ‘গীতাঞ্জলি'র কবিতা অনুবাদ করেছেন৷ ২০০৯ সালে এই অনুবাদের কাজ শুরু করেন তিনি৷ গত বছর শান্তিনিকেতনে অতিথি অধ্যাপকের পদে বৃত হয়ে অনুবাদ শেষ করেন দ্রুত৷ ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি'র ১০৩টি কবিতার অনুবাদ স্থান করে নিয়েছে তাঁর গ্রন্থে৷ রাদিচের নিজের কথায় - ‘‘পুনর্ভাষান্তর''৷
রাদিচি কিন্তু ডক্টরেট করেছেন মাইকেল মধুসূদনের ওপর থিসিস লিখে৷ তাঁর ‘‘টিচ ইওরসেল্ফ বেঙ্গলি'' বহুল ব্যবহৃত বই৷ লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ'এ দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করে সদ্য অবসর নিয়েছেন৷ তবে লেখালেখি, অনুবাদের কাজ চলেছে তাঁর৷
কথায় কথায় রবীন্দ্রনাথের গদ্য রচনার কাব্যিক চরিত্রের কথা উল্লেখ করেলেন রাদিচে: ‘‘ছন্দের বৈশিষ্ট্য - সেটা ওনার গদ্যেও পাওয়া যায়৷ যখন উনি এইসব সুন্দর ছোটগল্প লিখতেন উনবিংশ শতাব্দির শেষের দিকে - যখন উনি পদ্মা এলাকায় ছিলেন, তখন ঐ একউ সময় উনি খুব সুন্দর চিঠি লিখতেন৷ ...এইসব চিঠি প্রকাশিত হয়েছে৷ ওনার চিঠি দারুণ৷ চমৎকার৷''
রবীন্দ্রনাথের দীর্ঘ কবিতা ‘দেবতার গ্রাস' অবলম্বনে অপেরার টেক্সট রচনা করেছেন রাদিচি৷ এতে সুরারোপ করেছেন পরম বীর সিং৷ এটা তাঁর এক ভিন্ন মেজাজের কাজ৷ যা তাঁকে আনন্দ দিয়েছে৷
দীর্ঘদিন ধরে বাংলা সাহিত্য আর সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত উইলিয়ম রাদিচি৷ কাজ করছেন রবীন্দ্রনাথ নিয়ে৷ পশ্চিমে রবীন্দ্রনাথকে কী অনেক বেশি গ্রহণ করছে সাহিত্যানুরাগীরা? অনেক পরিবর্তন হয়েছে ইতোমধ্যে, মনে করেন তিনি৷ রবীন্দ্রনাথ একেবারে অচেনা কেউ নন৷ আর রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে নানা আয়োজন চলেছে সারা বিশ্বে৷ বহু আয়োজনে তিনিও অংশ নিয়েছেন৷ ছুটে যাচ্ছেন উইলিয়ম রাদিচে এক দেশ থেকে অন্য দেশে৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন