ইসরায়েলি নীতি
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ গঠিত হয়েছিল ২০০৬ সালে৷ পরিষদের কাছ থেকে ফিলিস্তিনেরও সুবিচারের প্রত্যাশা বেড়ে যায় তখন থেকে৷ তার আগের ৬০ বছর যে পরিষদ সারা বিশ্বে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে সেই সেখানে এমন কিছু দেশ ছিল যাদের নিজেদেরই মানবাধিকার রক্ষার রেকর্ড খারাপ৷ কিন্তু পরিষদে পরিবর্তন এলেও এতদিন ইসরায়েলের বিষয়ে কার্যত তেমন কোনো পরিবর্তন দেখেনি ফিলিস্তিন৷
তবে বৃহস্পতিবার যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে সেখানে প্রকৃত সত্যের প্রকাশ হয়েছে বলেই মনে করে ফিলিস্তিন৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ ‘‘ফিলিস্তিন রাজ্য গড়ার পথে বাধা সৃষ্টির শামিল৷ তাই জাতিসংঘ বসতি নির্মাণকে অবৈধ ঘোষণা করে তা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছে৷’’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অধিকৃত অঞ্চল থেকে আবাস গড়ে থাকতে দেয়া সব ইহুদিদের ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে৷
কিন্তু এরই মাঝে কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ ইহুদির জন্য বসতি গড়ে ফেলা ইসরায়েল জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, প্রতিবেদনটি ‘‘একপেশে, পক্ষপাতদুষ্ট৷ পারষ্পরিক আলোচনাই কেবল সমস্যার সমাধান করতে পারে৷’’
এদিকে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতির মাধ্যমে মহাসচিব বান কি-মুন জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলের দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসা বসতি নির্মাণের বিপক্ষে আগে থেকেই কথা বলে আসছেন৷ বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের ইসরায়েল অধিকৃত সমস্ত এলাকার বসতি নির্মাণই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবৈধ৷’’
জাতিসংঘের তিন সদস্যের যে প্যানেলটি ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন পেশ করেছে তাঁদের নেতৃত্ব দিয়েছেন ফরাসি বিচারক ক্রিস্টিন চ্যানেট৷ তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত করার সময় ইসরায়েল তাঁদের কোনোরকমের সহযোগিতাই করেনি৷ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জর্ডানে গিয়ে ৫০ জন মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে হয়েছে বসতি নির্মাণের পর ফিলিস্তিনিদের জন্য কিভাবে কী কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করা হয়৷ এক সংবাদ সম্মেলনে চ্যানেট বলেছেন, ‘‘ইসরায়েলকে বসতি নির্মাণের কাজ বন্ধ করতেই হবে এবং যাঁরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন অতি দ্রুত তাঁদের ক্ষতিপূরণও দিতে হবে৷’’
জাতিসংঘের প্যানেলের এ প্রতিবেদনে ফিলিস্তিন স্বাভাবিক কারণেই খুশি৷ প্রতিবেদনটিকে ভিত্তি হিসেবে ধরে ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিচার চাওয়ার পথে এগোনোরও ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটি৷
এসিবি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)