‘আয়রন ডোম’
২০ নভেম্বর ২০১২হামাস এবং বিভিন্ন কট্টরপন্থী গোষ্ঠী গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছুড়ছে আর তা আকাশেই বিধ্বস্ত হচ্ছে – এরকম ভিডিও চিত্র অনেকেই দেখেছেন ইতিমধ্যে৷ গত কয়েকদিনে গাজা থেকে কয়েকশত রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকা লক্ষ্য করে৷ আর সে সবের অধিকাংশই প্রতিরোধ করেছে আয়রন ডোম৷
উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের রাষ্ট্র পরিচালিত প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস' তৈরি করেছে এই আয়রন ডোম৷ উদ্দেশ্য হচ্ছে, ৪ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে শত্রুপক্ষের ছোড়া রকেট এবং গোলা যাত্রাপথেই ধ্বংস করে দেওয়া৷ পুরো প্রক্রিয়াটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত৷ ফলে এই ব্যবস্থার আওতায় কোনো রকেট ধরা পড়লেই সেটিকে ধ্বংস করতে স্বয়ংক্রয়ভাবেই পাল্টা গোলা ছোড়ে আয়রন ডোম৷ তবে এর সাফল্যের মাত্রা ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত৷ ফলে কিছু রকেট গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে৷
আয়রন ডোম প্রথম সফলভাবে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করে গত বছর৷ সে বছরের এপ্রিল মাসে গাজা থেকে ছোড়া একটি রকেট আকাশেই ধ্বংস করে দেয় এই আয়রন ডোম৷ আর সর্বশেষ গাজা সংকট শুরুর পর প্রথম তিন দিনে ২৪৫টি রকেট ধ্বংস করেছে এই ব্যবস্থা৷
হামাসের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র এখন পৌঁছে যাচ্ছে ইসরায়েলের তেল আভিভ অবধি৷ আকাশপথেই এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে তাই তেল আভিভেও কাজ শুরু করেছে আয়রন ডোম৷ ইতিমধ্যে সেখানকার আকাশসীমায় পৌঁছানো একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসও করেছে এই ব্যবস্থা৷
বিবিসি জানিয়েছে, আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত ব্যয়বহুল৷ ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত পাঁচটি আয়রন ডোম ব্যাটারি সক্রিয় রয়েছে৷ আগামী বছরের মধ্যে আরো আটটি এ ধরনের ব্যাটারি সক্রিয় করতে চলেছে দেশটি৷ জানা গেছে, একেকটি ব্যাটারি স্থাপনে খরচ প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ আর একেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে এই ব্যবস্থায় খরচ হয় মোটামুটি ৬০ হাজার মার্কিন ডলার৷
অবশ্য এই প্রতিরোধ ব্যবস্থার নির্মাতা দাবি করছেন, আয়রন ডোম ব্যয় সাশ্রয়ী৷ কেননা, এই ব্যবস্থা প্রথমে নির্ধারণ করে শত্রুপক্ষের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি কোথায় গিয়ে পড়তে পারে, জনবসতিপূর্ণ কোনো অঞ্চলে নাকি মনুষ্যবিহীন মরুভূমি বা পানিতে? যখন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, শুধুমাত্র তখনই সক্রিয় হয় এই আয়রন ডোম৷