1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিইসরায়েল

ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যা রোধে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ

২৬ জানুয়ারি ২০২৪

গাজায় গণহত্যা ও গণহত্যার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড রোধে সাধ্যের মধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত৷

https://p.dw.com/p/4bie8
নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত মনে করে, গাজায় ইসরায়েলের কিছু কর্মকাণ্ড অন্তত জাতিসংঘের জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়েছবি: Piroschka van de Wouw/REUTERS

তবে যুদ্ধবিরতি বা ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধের কোনো নির্দেশ দেননি বিচারকেরা৷

শুক্রবার নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-তে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সাউথ আফ্রিকার করা মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে৷ আদালত গাজায় মানবিক সংকট নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷

আইসিজে বিচারক প্যানেলের প্রেসিডেন্ট জোয়ান ডনোঘু বলেন, ‘‘আদালত এই অঞ্চলে উন্মোচিত হওয়া মানবিক ট্র্যাজেডির মাত্রা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত এবং প্রাণহানি ও মানবিক দুর্ভোগের অব্যাহত ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন৷'' তিনি জানান, আদালত মনে করে, গাজায় ইসরায়েলের কিছু কর্মকাণ্ড  অন্তত জাতিসংঘের জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়ে

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশনাসহ নয়টি বিষয়ে সাউথ আফ্রিকা হেগভিত্তিক এই আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল৷ তার মধ্যে গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা সংগঠিত করছে বলেও তাদের অভিযোগ ছিল৷

ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মামলা বাতিলের আবেদন করে, যা আদালত মেনে নেয়নি৷ অর্থাৎ, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে কিনা সেই বিষয়ে বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে৷

যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ না দিলেও আদালত ইসরায়েলকে গণহত্যা ও গণহত্যার উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড রোধে সাধ্যের মধ্যে সব ব্যবস্থা নিতে বলেছে৷ সে অনুযায়ী ইসরায়েল কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা একমাসের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷


আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়া
সাউথ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী নালেদি প্যান্ডর আদালতের রায় মানতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি মনে করেন, ইসরায়েল তা করলে পৃথিবীর ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যাঞ্জক হবে৷ না হলে সব নির্যাতনকারীদের জন্যই তা ‘ভয়ানক নজির স্থাপন করবে’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি৷ 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গণহত্যার মামলাকে ‘ভয়ানক’ বলে উল্লেখ করে বলেছেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে ‘যা প্রয়োজন’ ইসরায়েল তা করা অব্যাহত রাখবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি ইসরায়েল তার প্রতিশ্রুতিতে অবিচল রয়েছে৷ সেই সঙ্গে দেশ ও জনগণকে রক্ষার পবিত্র প্রতিশ্রুতির প্রতিও আমরা সমান অবিচল রয়েছি৷ যে-কোনো দেশের মতোই ইসরায়েলেরও নিজেকে রক্ষার অন্তর্নিহিত অধিকার রয়েছে৷’’

আদালত যেসব ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে তা যাতে বাস্তবায়িত হয় তার জন্য সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ-আল-মালিকি৷ তিনি বলেন, ‘‘আইসিজের নির্দেশ আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে কোনো রাষ্ট্রই আইনের উর্ধ্বে নয়৷ ইসরায়েল ও তার দায়মুক্তির জন্য যারা কাজ করছে, এটি তাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা৷’’

সাউথ আফ্রিকা ও ইসরায়েলের বক্তব্য

সাউথ আফ্রিকার অভিযোগ, ইসরায়েল তার কর্মকাণ্ডে জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে৷ ‘জাতিগত নিধনের উদ্দেশে ফিলিস্তিনি জাতি, বর্ণ এবং নৃগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশের ওপর তারা ধ্বংসযজ্ঞ' চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ সাউথ আফ্রিকার৷

তবে ইসরাইলের আইনজীবী  টাল বেকার সাউথ আফ্রিকার অভিযোগকে বাস্তব ও আইনি চিত্রের বিকৃত উপস্থাপন বলে অভিহিত করেছিলেন৷ সাউথ আফ্রিকার এই মামলার বিরোধিতা করেছে ইসরায়েলের শক্তিশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র৷ প্রত্যাখ্যান করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র ও ব্রিটেন৷

৭ অক্টোবর হামাস ইসারয়েলে হামলা চালিয়ে ১১৪০ জনকে হত্যা করে এবং ২০০ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়৷ এরপর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে৷ এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৯০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়৷ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে৷

এফএস/এসিবি (এপি, রয়টার্স, এএফপি)