মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া
১ জুলাই ২০১৬ইসরায়েলের আসল মতলব কী? সে দেশের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী খোলাখুলি বিবৃতি দিয়ে চলেছেন, যে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বপ্ন কখনোই বাস্তব হবে না৷ খোদ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ২০১৫ সালের মার্চ মাসে নির্বাচনি প্রচারের সময় অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পত্তন হবে না৷ পরে অবশ্য তিনি আবার দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানসূত্র মেনে নিয়েছিলেন৷
বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিকোলাই ম্লাদেনভ নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক কোয়ার্টেটের এক রিপোর্টের খসড়া পেশ করেছেন৷ শুক্রবারই আনুষ্ঠানিকভাবে সেটি প্রকাশ করার কথা আছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে যে সমাধানসূত্র তুলে ধরা হচ্ছে, তার মূল ভিত্তিই হলো স্বাধীন ইসরায়েলের পাশাপাশি এক স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গড়ে তোলা৷ অথচ অধিকৃত এলাকায় ইসরায়েলের বসতি নীতির ফলে সেই লক্ষ্য আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে সেই রিপোর্টের খসড়ায় কড়া সমালোচনা করা হয়েছে৷
প্রশ্ন হলো, এতকাল পর আবার মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনার গুরুত্ব কতটা? কারণ তথাকথিত আইএস-এর উত্থান, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ সহ একাধিক সংকটের আড়ালে চলে গিয়েছে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সমস্যার কথা৷ চরম আশাবাদী মানুষও সেই সংকটের সমাধানের আশা ছেড়ে দিয়েছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কয়েক মাস পরেই বিদায় নিতে চলেছেন৷ রাশিয়া ও ইউরোপ যে যার নিজস্ব সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত৷ ইসরায়েলের কট্টরপন্থি সরকার ফিলিস্তিনিদের কোন ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়৷ এই অবস্থায় শান্তির সম্ভবনা আদৌ আছে কি?
কূটনৈতিক মহল অবশ্য কোয়ার্টেটের এই রিপোর্টকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে৷ কারণ এর পেছনে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে৷ ওবামা ও নেতানিয়াহু যে পরস্পরকে একেবারেই পছন্দ করেন না, শুরু থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ তা সত্ত্বেও মার্কিন প্রশাসন এতকাল ইসরায়েলের উপর শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য তেমন চাপ সৃষ্টি করেনি৷
কোয়ার্টেটের রিপোর্টে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ নেবার ডাক দিয়েছে৷ চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলকে পশ্চিম তীরের অধিকৃত এলাকার একটা বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবার কথা৷ অন্যদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে হিংসা বন্ধ করতে যথাসাধ্য পদক্ষেপ নেওয়া৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)