যুদ্ধের জন্য অ্যামেরিকা প্রস্তুত
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯শনিবার সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে দু-দুটি পেট্রোলিয়াম কেন্দ্রের উপর ড্রোন হামলার ফলে আঞ্চলিক স্তরে উত্তেজনা বাড়ছে৷ রাষ্ট্রীয় আরামকো কোম্পানির এই দুটি স্থাপনা গোটা বিশ্বে পেট্রোলিয়াম সরবরাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে৷ হামলার ফলে দিনে ৫৭০ কোটি ব্যারেল উৎপাদন কমে যাবার কারণে পেট্রোলিয়ামের আচমকা মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কাও দূর হচ্ছে না৷ সেই ধাক্কা সামলাতে অ্যামেরিকা ও সৌদি আরব প্রয়োজনে জরুরি অবস্থার জন্য মজুত তেলের ভাণ্ডার কাজে লাগাতে পারে৷ তবে আন্তর্জাতিক জ্বালানি এজেন্সি আইইএ জানিয়েছে, যে বর্তমান পরিস্থিতিতে পেট্রোলিয়ামের বাজারে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা নেই৷
হামলার উৎস সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও সন্দেহের তির ইরানের দিকে৷ দক্ষিণে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করলেও এমন দূরপাল্লার জটিল ড্রোন হামলার পেছনে অন্য কোনো শক্তি ছিল বলে সৌদি ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছে৷ ইরাকের দক্ষিণ থেকে ড্রোন পাঠানো হয়েছিল, এমন সন্দেহও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ সেখানেও ইরানের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে৷ ইরাকের সরকার অবশ্য এই হামলার সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে চলেছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর দেশ পালটা হামলার জন্য প্রস্তুত৷ রবিবার এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘‘সৌদি আরবের তেলের সরবরাহের উপর হামলা হয়েছে৷ আমরা অপরাধীকে চিনি, এমনটা ভাবার কারণ রয়েছে৷'' ট্রাম্প আরও দাবি করেছেন, যে যাবতীয় তথ্য যাচাইয়ের পর অ্যামেরিকা পালটা হামলার জন্য প্রস্তুত৷ তবে সৌদি আরবের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷
শনিবারের হামলার জন্য হুথি বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তাতে বিশ্বাস না করে ইরানকে সরাসরি দায়ী করেছেন৷ এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘‘সৌদি আরবে প্রায় ১০০ হামলার জন্য ইরান দায়ী৷ একই সময়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ জাভাদ জরিফ কূটনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকার ভান করছেন৷
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি পম্পেও-র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইরানের উপর যতটা সম্ভব চাপ সৃষ্টি করার নীতি বিফল হওয়ায় অ্যামেরিকা এখন তার বদলে যতটা সম্ভব মিথ্যাচারের নীতি বেছে নিয়েছে৷ তাঁর দাবি, ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধাপরাধের প্রতিশোধ নিতে হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলা চালিয়েছে৷
এই অবস্থায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সংঘাত সত্ত্বেও পুরোপুরি যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন না মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা৷ অ্যামেরিকা অবশ্য ইরানের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ সংবাদ সংস্থা এএফপি একাধিক বিশেষজ্ঞের মতামত তুলে ধরে এখনই বড়সড় সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)