ইরান: সভ্যতার এক সূতিকাগার
ইরানের ইতিহাস অনেক পুরনো৷ সেই সময়কার বিভিন্ন নিদর্শন ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে জার্মানির বন শহরে হয়েছিল একটি প্রদর্শনী৷
চার মাসব্যাপী প্রদর্শনী
প্রায় আট হাজার বছর আগে খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ সহস্রাব্দে এই এক ঘরের ভবনটি তৈরি করা হয়েছিল৷ জার্মানির বন শহরের এক মিউজিয়ামে প্রাচীন ইরানের বিভিন্ন নিদর্শনের প্রদর্শনী চলছে৷ খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ সহস্রাব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৫২২ সাল পর্যন্ত ঐ অঞ্চলের মানুষজন কীভাবে বসবাস করতেন, তা প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হচ্ছে৷
দ্য টাওয়ার অফ বাবেল
বিশেষজ্ঞরা এই টাওয়ারকে ইতেমেনানকি নামের একটি ‘জিগুরাত’ বা প্রাসাদ-কমপ্লেক্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মনে করেন৷ আলেকজান্ডার দি গ্রেট এটি ধ্বংস করেন৷ ‘ইহুদিদের বাইবেল’ বলে পরিচিত ‘তানাখ’-এর প্রথম গ্রন্থ ‘জেনেসিস’-এ এই টাওয়ারের কথা উল্লেখ আছে৷ খ্রিষ্টানদের বাইবেলের প্রথম অংশ ‘ওল্ড টেস্টামেন্ট’-এও আছে এই টাওয়ারের কথা৷
দ্য রয়েল গেম অফ উর
অন্যতম প্রাচীন বোর্ড গেম হচ্ছে ‘ব্যাকগ্যামন’৷ বন শহরের প্রদর্শনীতে সোপস্টোন দিয়ে তৈরি কয়েকটি ব্যাকগ্যামন বোর্ডও দেখানো হচ্ছে৷ এগুলোতে সাপ আর পাখির নকশা রয়েছে৷ খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দে পশ্চিম এশিয়ায় ‘দ্য রয়েল গেম অফ উর’ খেলা হতো৷ ‘গেম অফ ২০ স্কয়্যার’ নামে পরিচিত খেলাটি আজও জনপ্রিয়৷
পাঁচ হাজার বছর আগের
ক্লোরাইট দিয়ে তৈরি এই পাত্রটি খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের৷ ইরানের জিরফট শহরের সমতল ভূমি থেকে এটি উদ্ধার করা হয়েছে৷
দক্ষতার পরিচয়
সেই সময়কার ধনি ব্যক্তিরা স্বর্ণখচিত এই ধরণের (ছবি) পাত্রে ওয়াইন পান করতেন৷ এসব পাত্রের নকশা ও কারুকাজ দেখলে তখনকার মানুষদের ব্যবহারিক ও প্রযুক্তি বিষয়ক দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়৷
রাজকন্যাদের সমাধিতে
এসব স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে দুজন এলামাইট রাজকন্যার সমাধিতে৷ পারস্য উপসাগরের কাছে অবস্থিত ইরানের জুবাজি গ্রামে ২০০৭ সালে এগুলো পাওয়া যায়৷ সমাধিতে স্বর্ণালংকার ছাড়াও খাবার ও ধর্মীয় বিষয়াদিও দিয়ে দেয়া হতো বলে জানা যায়৷
রাজার প্রাসাদ
খ্রিষ্টপূর্ব ১২৭৫ থেকে ১২৪০ পর্যন্ত রাজত্ব করা রাজা উনতাশ-নাপিরিশা শোঘা জানবিল শহরে বাস করতেন৷ তিনটি উঁচু দেয়াল দিয়ে শহরটি ঘেরা ছিল৷ ঐ স্থানে হাজার হাজার ইট পাওয়া যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শহরের আকার বাড়ানোর হয়ত পরিকল্পনা ছিল৷
পৃথিবীতেই যেন স্বর্গ
প্রদর্শনীর একটি জায়গায় ছোট আকারে ‘পার্সিয়ান গার্ডেন’ তৈরি করা হয়েছে৷ ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের একটি অংশ হচ্ছে এই বাগান৷ পার্সিয়ান গার্ডেন মানেই হচ্ছে মাঝখানে থাকবে পানির ফোয়ারা আর পাশে ফুলের বাগান৷ সঙ্গে থাকবে বসার জায়গা, যেখান থেকে দর্শকরা সৌন্দর্য্য উপভোগ করবেন৷