ইরাক পরিস্থিতি - হিংসা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না
১ অক্টোবর ২০০৪এই ঘটনার সময়ে ঐ এলাকায় একটি জল-পরিশোধন প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলো৷ মার্কিন সেনা আর ঐ প্রকল্পের মধ্যে কোনটি হামলার মূল লক্ষ্য ছিলো, তা জানা যায় নি৷ এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আবু মুসাব আল জ়ারকাভি-র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি৷ বৃহস্পতিবার মার্কিন বাহিনী ফালুজা শহরের একটি বাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে৷ তাদের মতে, আল জ়ারকাভি-র যোদ্ধারা ঐ বাড়িটি ব্যবহার করতো৷ বাগদাদের উপকণ্ঠে আবু ঘ্রাইব ও উত্তরের তাল আফার শহরেও হামলা ঘটেছে৷ এই সব ঘটনার ফলে সব মিলিয়ে মিলিয়ে ৫০ জনেরও বেশী নিহত হয়েছে৷ এছাড়া একটি ইলেকট্রিক সংস্থার ১০ জন কর্মীকে অপহরণ করেছে এক উগ্রবাদী গোষ্ঠি৷
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মার্কিন বাহিনী বিদ্রোহীদের ঘাঁটি বলে পরিচিত সামারা অঞ্চলে বিশাল এক অভিযান শুরু করেছে৷ তারা শহরের সরকারী ভবনগুলি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে৷ এই অভিযানে ইরাকী বাহিনীও যোগ দিয়েছে৷ শহরের মানুষ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে টেলিফোনে জানিয়েছেন যে প্রবল বিস্ফোরণে শহর কাঁপছে৷ কয়েক ঘণ্টা ধরে শহরের উপর বিমান হামলা ঘটেছে৷ মার্কিন বাহিনী জানিয়েছে, তারা চলতি বছরের মধ্যেই বিদ্রোহীদের সবকটি ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ক্রমশঃ ফিরিয়ে নিতে সামারা, ফালুজা, রামাদি ও বাগদাদের উপকন্ঠে সাদার-সিটি ও হাইফা স্ট্রিটে অভিযান চালাবে, যাতে আগামী বছরের শুরুতে সেই সব এলাকায় সুষ্ঠভাবে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব হয়৷
প্রবল হিংসা সত্ত্বেও পরিকল্পনা অনুযায়ি আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই ইরাকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আবার দাবি করেছেন ইরাকের অন্তর্বর্তীকালিন প্রশাসনের প্রধানমন্ত্রী ইয়াদ আলাওয়ি৷ লন্ডনে এক ভাষণে তিনি বলেন, ইরাকের বেশীরভাগ মানুষ নির্বাচনে অংশ নিতে উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে এবং জানুয়ারি মাসের আগেই ইরাকের প্রায় সব এলাকা তাঁর সরকারের অধীনে চলে আসবে৷ আলাওয়ি ইরাকে ব্রিটিশ পণবন্দি কেনেথ বিগলির অপহরণ ও তাঁকে হত্যার হুমকির তীব্র নিন্দা করেন তবে তাঁর মুক্তি সম্পর্কে তিনি তেমন একটা আশাবাদী নন বলে জানিয়েছেন৷ এদিকে শিয়া সম্প্রদায়ের এক বিশিষ্ট নেতা - সৈয়দ মহম্মদ আল-উলোম বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত, কারণ এর ফলে হিংসা কমে যেতে পারে৷ তাঁর মতে, এমনকী ইরাকের সর্বত্র নির্বাচনের আয়োজন সম্ভব না হলেও এই পরিকল্পনা থেকে সরে আসা উচিত নয়৷
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার প্রচারিত একটি ভিডিওতে বিগলিকে একটি খাঁচার মধ্যে শেকল বাঁধা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছিলেন৷ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক স্ট্র বলেন, তাঁর সরকার অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে বটে, কিন্তু তাদের সঙ্গে কিছুতেই আপস আলোচনা করা হবে না বা তাদেরকে কোনো মুক্তিপণও দেওয়া হবে না৷ অপহরণকারীরা ইতিমধ্যেই দুই জন মার্কিন নাগরিকের মুণ্ড কেটে হত্যা করেছে৷