কালো তালিকাভুক্ত সৌদি জোট
৬ অক্টোবর ২০১৭জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার তাঁর বার্ষিক ‘শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেন, ২০১৬ সালে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের শিকার হয়ে আট হাজারেরও বেশি শিশু হতাহত হয়েছে৷
প্রতিবেদন বলছে, ইয়েমেনে মোট হতাহতের শিকার হওয়া শিশুদের মধ্যে ৬৮৩ জনের জন্য দায়ী সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট৷ কারণ এই সময়ে কয়েকটি স্কুল ও হাসপাতালে হামলা চালায় এই জোট৷ এজন্য জাতিসংঘের বার্ষিক ঐ প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা কালো তালিকায় সৌদি জোটের নাম রয়েছে৷ গতবছরেরও প্রতিবেদনেও সৌদি আরবের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল৷ তবে পরে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি-মুন এই নাম প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন৷ সেই সময় তিনি দাবি করেছিলেন, নাম প্রত্যাহার করতে সৌদি আরব চাপ দিয়েছিল৷ তা না হলে শিশুদের জন্য সৌদি আরব যে তহবিল দিত তা হুমকির মুখে পড়ত বলেও জানান তিনি৷ সৌদি আরব অবশ্য হুমকি দেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে৷
বিতর্ক এড়াতে জাতিসংঘের মহাসচিব এবার কালো তালিকাটি দুই অংশ ভাগ করেছেন৷ প্রথম অংশে যেসব দেশ ও গোষ্ঠী শিশুদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তাদের নাম রয়েছে৷ আর দ্বিতীয় অংশ আছে তাদের নাম যারা শিশুদের রক্ষায় ‘ব্যবস্থা নিয়েছে’৷ সৌদি আরবের নাম আছে তালিকার এই অংশে৷ অর্থাৎ দেশটি শিশুদের রক্ষায় কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে৷
কালো তালিকায় সৌদি আরবের নাম অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডাব্লিউ, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ওয়াচলিস্ট অন চিলড্রেন অ্যান্ড আর্মড কনফ্লিক্ট৷
এদিকে, সৌদি আরবের বিরোধিতা সত্ত্বেও ইয়েমেনের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেখানে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ৷
শিশু হত্যা বন্ধ না করা পর্যন্ত সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা এইচআরডাব্লিউ৷
সংস্থার শিশু অধিকার বিষয়ক পরিচালক জো বেকের বলেন, ‘‘ইয়েমেনে এই বেআইনি হামলা বন্ধ করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া ও আক্রান্ত শিশুদের প্রয়োজনীয় সাহায্য নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘সব সরকারকে সৌদি অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে হবে৷’’
এএম/জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি, এপি)