ইমরানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ পুলিশের
২৩ আগস্ট ২০২২গত শনিবার ইমরান খান একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি পুলিশ ও বিচারবিভাগের কড়া সমালোচনা করেন। এরপরই পুলিশ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ আনে। পুলিশের অভিযোগ, ইমরান বিচারবিভাগ ও পুলিশকে হুমকি দিয়েছেন।
এরপরই ইমরানকে গ্রেপ্তার করার সম্ভাবনা প্রবল হয়। তাই সোমবার সকাল থেকে তার সমর্থকেরা বাড়ি ঘিরে রাখেন। বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেন।
তেহরিক-ই-ইনসাফ(পিটিআই) নেতারা বলেন, ভোর থেকেই সমর্থকরা ইমরানের বাড়িতে পৌঁছে গেছেন। সংবাদপত্র ডন জানাচ্ছে, পিটিআই নেতারা হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইমরানকে গ্রেপ্তার করা মানে সব সীমা অতিক্রম করে যাওয়া।
বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। দলের তরফ থেকে নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়, প্রয়োজন হলেই যেন তারা মানুষকে জড়ো করে বিক্ষোভে নেমে পড়েন।
সাবেক মন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর বলেন, ''ইমরানকে গ্রেপ্তার করলে আমরা ইসলামাবাদ নিজেদের হাতে নিয়ে নেব।''
ইমরানের আরেক সহকর্মী ও সাবেক মন্ত্রী মুরাদ সইদ স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, পুলিশ ইমরানকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ জারি করেছে। পুলিশ অবশ্য এনিয়ে কোনো কথা বলেনি।
রাজনৈতিক লড়াই
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন জোটের নেতা শাহবাজ শরীফের এখন তীব্র রাজনৈতিক লড়াই চলছে। শনিবার ইমরানের ভাষণের পর তা আরো তীব্র হয়েছে।
শনিবারের ভাষণে ইমরান খান তার এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেপ্তার ও নিগ্রহের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান এবং এক নারী বিচারকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রয়টার্স জানাচ্ছে, ইমরান বলেছিলেন, পুলিশ প্রধান ও নারী বিচারককে ছাড়া হবে না।
পুলিশের বক্তব্য, বিচারবিভাগ ও পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করছেন ইমরান। তিনি চান না, পুলিশ ও বিচারবিভাগ তাদের কাজ করুক।
রাজনৈতিক স্বার্থে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ব্যবহার পাকিস্তানে নতুন কিছু নয়। ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ উঠেছিল।
প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়ার পর ইমরানের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে তাকে এখনো পর্যন্ত আটক করা হয়নি।
পাক মিডিয়াকে নির্দেশ
পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটি শনিবারই নির্দেশ দেয়, কোনো চ্যানেলে ইমরানের ভাষণ লাইভ দেখানো যাবে না। তবে রেকর্ড করে রাখা ভাষণ পরে দেখানো যাবে।
মিডিয়া রেগুলেটরের অভিযোগ, ইমরান সমানে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে যাচ্ছেন। ঘৃণা ছড়ানোর মতো ভাষণ দিচ্ছেন। উসকানিমূলক কথা বলছেন। তার ভাষণের ফলে শান্তি নষ্ট হতে পারে।
এই নিষেধাজ্ঞার পর ইমরানের দল পাঁচশর বেশি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক লাইভ করে সেই ভাষণ সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছাবার ব্যবস্থা করে। ইমরানের অভিযোগ, সরকার লাইভস্ট্রিমিং-ও আটকাবার চেষ্টা করেছে।
জিএইচ/এসজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)