ইমরানের পাকিস্তানে হামলা ও চাপের মুখে গণমাধ্যম
১০ নভেম্বর ২০২১গত ছয় মাসে শুধু রাজধানী ইসলামাবাদেই হামলার শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন সংবাদকর্মী৷ বরাবরের মতো একজন হামলাকারীকেও আইনের আওতায় আনা হয়নি৷ হামলা, হুমকি তাই কমছে না৷ বরং গণমাধ্যমকে নীরব করার চেষ্টা বাড়ছে৷
গত সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তান প্রেস ফাউন্ডেশন (পিপিএফ)৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত হামলা, ঘৃণাসূচক বক্তব্য, হুমকি এবং নিপীড়নের শিকার হয়ে চলেছেন৷ এসবে সরাকারি ইন্ধনের অভিযোগও করা হয় প্রতিবেদনে৷
সম্প্রতি গণমাধ্যম সংক্রান্ত নতুন আইন প্রণয়নের একাধিক উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় পাকিস্তানে৷ গত জুনে পাকিস্তান মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (পিএমডিএ)-র জন্য এমন এক আইনের খসড়া করা হয় যা কার্যকর হলে গণমাধ্যমের ওপর সরকারি সংস্থাটির পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে৷
বিষয়টির কঠোর সমালোচনা করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)৷ তারপরও অক্টোবর মাসে অনলাইন গণমাধ্যমকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য আসে আরেকটি আইনের প্রস্তাব৷ আরএসএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তানের তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব করা সেই প্রস্তাবিত আইনে ‘বেআইনি অনলাইন কন্টেন্ট অপসারণ ও ব্লক করা'র কথা বলা হলেও এর মাধ্যমে আসলে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে৷
‘পাকিস্তানে ভিন্নমত পোষণ করা অপরাধ'
আরএসএফ-এর প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে পাকিস্তান এখন ১৪৫ নম্বরে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া শাখার রিমেল মোহিদীন মনে করেন, দেশটির গণমাধ্যম ক্রমাগত ভয়াবহ সংকটময় পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, পাকিস্তানে মিডিয়া হাউসগুলোকে সবসময় নানাভাবে চাপে রাখা হয়৷ বিজ্ঞাপন বন্ধ করে, হামলার বিচার না করে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হুমকি দিয়ে এখন এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে যা দেখে মনে হয় ‘‘ প্রতিনিয়ত যেন ভিন্নমত পোষণ করাকে অপরাধের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷''
ইমরানের শাসনামলে গণমাধ্যম কতটা নিরাপদ?
গত জুলাইয়ে আরএসএফ-এর লাল তালিকায় ছিলেন ইমরান খান৷ সাবেক এই ক্রিকেটারের নেতৃত্বে মুসলিমপ্রধান দেশটিতে অচিরেই সাংবাদিকদের জন্য অনুকুল পরিবেশ তৈরি হবে বলে মনে করেন না মাইকেল কুগেলমান৷ উড্রো উইলমন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষক বিশেষজ্ঞ পরিস্থিতি আরো খারাপ হলেও অবাক হবেন না, কারণ, ‘‘সেখানে সাংবাদিকদের নিয়মিত হুমকি দেয়া হয়, একটুতেই মিডিয়া হাউজগুলোর বিজ্ঞাপন বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া হয়, নানাভাবে সেল্ফসেন্সরশিপে বাধ্য করা হয়৷'' কুগেলমান মনে করেন, পাকিস্তানের গণমাধ্যম এ মুহূর্তে জঘন্য একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷
হারুন জানযুয়া (ইসলামাবাদ)/ এসিবি