ইন্দোনেশিয়ায় বার্লিন প্রাচীর!
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার একটি পার্কে ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীরের কিছু অংশ স্থাপন করা হয়েছে৷ দেশটির এক শিল্পী এই শিল্পকর্ম তৈরি করেন৷
সীমানা পেরিয়ে
ইন্দোনেশিয়ার পেইন্টার তেগুহ অস্টেনরিক জাকার্তার শিশুবান্ধব কালিজোডো পার্কে বার্লিন প্রাচীরের চারটি অংশ স্থাপন করেছেন৷ এই অংশগুলো দিয়ে তিনি একটি শিল্পকর্ম তৈরি করেছেন, যার নাম দিয়েছেন ‘ভাস্কর্য সীমানা পেরিয়ে’৷
ইতিহাসের অংশ
পশ্চিম জার্মানিতে প্রায় ১০ বছর থাকার পর ১৯৮৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ফিরে গিয়েছিলেন অস্টেনরিক৷ এরপর বার্লিন প্রাচীরের পতন হলে তার সপ্তাহ দুয়েক পর জার্মানি গিয়ে প্রাচীরের চারটি অংশ কিনেছিলেন৷ ১৯৯০ সালে সেগুলো জাকার্তায় পৌঁছেছে৷
অদৃশ্য প্রাচীর
জার্মানি থেকে লেখাপড়া শিখে দেশে ফিরে অস্টেনরিক ইন্দোনেশিয়ার সমাজে ধর্ম, বর্ণ, নৃতত্ত্ব ইত্যাদি নানা বিষয়ে বিভাজন দেখতে পান৷ ‘‘আমাদের দেশে একটি অদৃশ্য দেয়াল রয়েছে, যেটা জাভা ও সান্দানের মানুষের মধ্যে পার্থক্য খোঁজে৷ বাতাক জনগোষ্ঠীর মানুষের জন্যও ইন্দোনেশিয়ায় একটি ‘বার্লিন প্রাচীর’ রয়েছে’’, বলেন তিনি৷ উল্লেখ্য, বাতাক হচ্ছে একটি আদিবাসী গোষ্ঠী৷
শব্দ ও ছবির কোলাজ
অস্টেনরিক জার্মানিতে আর্ট নিয়ে লেখাপড়া করেন৷ আশির দশকে বার্লিনে থাকার সময় তিনি প্রায়ই বার্লিন প্রাচীরে গ্রাফিতি এঁকেছিলেন৷ প্রাচীরের যে চারটি অংশ তিনি কিনেছেন সেখানে থাকা ছবি ও শব্দ বাচ্চাদের উপযোগী হওয়ায় শিল্পকর্মটি শিশুবান্ধব পার্কে স্থাপন করা হয়েছে৷
হিউম্যান স্পিরিট
বার্লিন প্রাচীরের অংশগুলো বার্লিনে যেভাবে দাঁড়িয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার পার্কেও সেভাবে না রেখে তার চারদিকে ইস্পাতের ১৪টি মূর্তি স্থাপন করেছেন৷ এগুলো হিউম্যান স্পিরিটকে প্রতিনিধিত্ব করে বলে মনে করেন তিনি৷ ‘‘হিউম্যান স্পিরিট ইস্পাতের মতোই কঠোর হতে পারে৷ আমাদের মধ্যে থাকা ‘দেয়াল’ আমরা ভাঙতে পারি৷ আর যা কিছু আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে তা থেকে আমরা বেরোতে পারি’’, বলেন অস্টেনরিক৷
বৈচিত্র্য উদযাপন
চলতি বছর অক্টোবরের ৩ তারিখ ‘ভাস্কর্য সীমানা পেরিয়ে’ উন্মুক্ত করা হয়৷ সেদিন ছিল বার্লিন প্রাচীর পতনের বার্ষিকী৷ অস্টেনরিক বলেন, ‘‘একজন শিল্পীর প্রধান কাজ হচ্ছে সামাজিক অবস্থা তুলে ধরা৷ ইন্দোনেশিয়ার যে জাতীয় মটো ‘বৈচিত্র্যে একতা’, সেটা ছাড়া ইন্দোনেশিয়া টিকে থাকতে পারে না৷’’