ইথিওপিয়ায় সংঘাত বন্ধে ফের সমঝোতা
৪ নভেম্বর ২০২২সংঘাত নিয়ে আফ্রিকান ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় দক্ষিণ আফ্রিকায় আনুষ্ঠানিক শান্তি আলোচনা শুরুর এক সপ্তাহের কিছু বেশি সময় পর এই সমঝোতার ঘোষণা এল৷ দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সংঘাতে লিপ্ত পক্ষগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয়েছে৷
২০২০ সালের নভেম্বরে টিগ্রের আঞ্চলিক বাহিনীগুলো দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করলে এই সংঘাত সূত্রপাত হয়৷ পরে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অঞ্চল ও প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার বাহিনীগুলো৷
এর আগে সেনাবাহিনী ও টিপিএলএফ এর মধ্যে পাঁচ মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি গত আগস্টে ভেঙে পড়লে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়৷
গত বুধবার নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের পর সংঘাতে লিপ্ত সকল পক্ষই টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে বলে আশা করা হয়৷
এক যৌথ বিবৃতিতে সেনাবাহিনী ও টিপিএলএফ ঘোষণা দেয় যে, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা চিরতরে অস্ত্র ফেলে দিবে৷ এমন প্রতিশ্রুতিকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিশ্বের নেতারা৷
‘‘সংঘাত বন্ধে সমঝোতা চুক্তি করার জন্য দুপক্ষেকে স্বাগত জানাই৷ আশাকরি ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে,'' যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এমন বন্তব্য করেন৷
নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ওলুসেগুন ওবাসাঞ্জো এ চুক্তিকে আফ্রিকান ইউনিয়ন ‘নতুন ভোর' অ্যাখ্যা দিয়েছেন৷
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, পরিষেবাগুলো সচল করা, বাধাহীনভাবে মানবিক সহায়তা পাওয়ার নিশ্চয়তার পাশাপাশি সুশৃঙ্খল, মসৃণ ও সমন্বিত নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে ইথিওপিয়ার সরকার ও টিপিএলএফ একমত হয়েছে৷
বুধবারের যুগান্তকারী এই সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়ে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বলেন, শান্তির প্রতি অঙ্গীকার সুদৃঢ়ভাবে অটুট রয়েছে৷ চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতার বিষয়ে আমাদের অঙ্গীকার সমানভাবে শক্তিশালী৷
টিপিএলএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান গেটাচেউ রেডা বলেন, ‘‘এই চুক্তি বাস্তবায়ন ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত আছি৷''
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘‘এটি (চুক্তি) স্বাগত জানানোর মতো প্রথম পদক্ষেপ, যা তুমুল দুর্ভোগে বিপর্যস্ত লাখ লাখ ইথিওপীয় বেসামরিক নাগরিককে খানিকটা স্বস্তি দিতে শুরু করবে বলে আমরা আশা করছি৷''
যুদ্ধে কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে৷ এছাড়াও লাখো মানুষকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেয় এই সংঘাত৷
গৃহযুদ্ধের এই দুই বছরে টিগ্রে বাইরের বিশ্ব থেকে মোটামুটি বিচ্ছিন্নই ছিল৷ সেখানকার হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ফুরিয়ে যাচ্ছিল, বিদ্যুৎ-ফোন ও ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল৷
যুদ্ধ চলাকালে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বর্বরতা, জাতিগত নিপীড়ন ও যৌন সহিংসতার অভিযোগ এনেছিল৷
আইজ্যাক কালেদজি/একেএ