ইতিহাসের চিহ্ন ছড়িয়ে রোমে, কী কী দেখবেন বেড়াতে গেলে?
ইটালির ঐতিহ্যপ্রাচীন শহর রোম৷ কলোসিয়াম নাকি সিস্টিন চ্যাপেল, কীভাবে ঘুরবেন রোমে, দেখে নেওয়া যাক ছবিঘরে..
সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহনকারী কলোসিয়াম
১৭০০ বছরের প্রাচীন স্টেডিয়াম কলোসিয়াম৷ গ্ল্যাডিয়েটররা যুদ্ধ করতেন এখানেই৷ বছরের যে কোনও সময়ে বেড়ানোর জন্য আদর্শ৷ তবে বৃষ্টি হলে সাবধানে পা ফেলুন৷ প্রাচীন আমলের পাথরের রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটতে হবে আপনাকে৷ কলোসিয়ামের টিকিট কিনুন প্যালাটিন হিল থেকে৷ কলোসিয়ামের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই৷
আইকনিক ট্রেভি ফাউন্টেন
এই মাস্টারপিস সারা বিশ্বের ঝরনাধারার অন্যতম৷ লা ডলচে ভিটা সিনেমায় দেখেছেন নিশ্চয়ই৷ রোমের অন্যতম প্রাচীন এই জলধারার জল পান অবশ্য বর্তমানে নিরাপদ নয়৷ সৌভাগ্য ঘিরে থাকবে এমন বিশ্বাস থেকে এ ঝরনায় পয়সা ফেলেন কেউ৷ তবে সেই পয়সা চুরি ফৌজদারি অপরাধ৷
আধুনিক শিল্পের প্রথম সংগ্রহশালা
সমসাময়িক শিল্পের ক্ষেত্রে ইটালির প্রথম জাতীয় সংগ্রহশালা প্রমাণ করে যে এই শহর শুধু প্রাচীন স্থাপত্যে থেমে নেই৷ জাহা হাদিদ আর্কিটেক্টস সংস্থা নির্মিত এই সংগ্রহশালা দেখতে খানিকটা কৌণিক৷ ২০১০ সালে এটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়৷ আধুনিক ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন৷
রোমান খাবার চাখতেই হবে
কেউ পিত্জা, কেউ বা সুস্বাদু জেলাটো খেতে চান৷ কিন্তু পাস্তা কাচো-ই-পেপে না খেলে হবে? এটা যে বহু পুরনো একটা পদ৷ ক্রিমের একটা সস, স্থানীয় এক ধরনের পনির এবং অল্প এক চিমটে নুন দিয়ে পাস্তা - শুনে জিভে জল এল তো নাকি!
শহরের মধ্যে শহর
ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম শহর৷ তবে সেখানে যেতে পাসপোর্ট লাগবে না৷ রোমের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ শহরে থাকেন পোপ৷ বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাবান ব্যক্তি তিনি৷ এখানে এলে ভ্যাটিকান সেনার উর্দি, সুইস রক্ষীদের অসামান্য পোশাক এবং সেন্ট পিটার ব্যাসিলিকার সামনে চিত্তাকর্ষক প্লাজাটি দেখতে ভুলবেন না যেন৷
শিল্পপ্রেমীদের আকর্ষণ করবে সিস্টিন চ্যাপেল
সিলিংয়ে রেনেসাঁ যুগের শিল্পী মিকেলাঞ্জেলোর আঁকা ছবি৷ গিনেস বুকের কাহিনি আঁকা সেখানে৷ বতিচেল্লি, কারাভাজ্জো-সহ একাধিক কিংবদন্তি শিল্পীদের আঁকা ছবি রয়েছে ভ্যাটিকান মিউজিয়াম কমপ্লেক্সে৷ তিন হাজার বছরের সুপ্রাচীন সে ছবি দেখতে হলে সংগ্রহশালার ওয়েবসাইটে টিকিট প্রি-বুকিং করুন৷
পিয়াৎসা নাভোনা
ছবির মতো পিয়াৎসা দেখুন পাশের ক্যাফেতে বসে৷ বারোক-রোমান স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন পিয়াৎসা নাভোনা৷ পাশে রয়েছে বিখ্যাত ঝরনাধারা৷ এখানকার চার মূর্তি বিশ্বের অন্যতম প্রধান চার নদী গঙ্গা, দানিউব, নীল নদ এবং রিও দে লা প্লাতাকে মনে রেখেই নির্মিত৷
গান শুনবেন কোথায়?
তারকা স্থপতি রেনসো পিয়ানো পার্কো ডে লা মুজিকা কমপ্লেক্স নির্মাণ করেন৷ এখানে রয়েছে তিনটি কনসার্ট হল, দুটি সংগ্রহশালা৷ সর্বোত্কৃষ্ট ধ্বনিকে মাথায় রেখে তৈরি ২,৮০০ আসনবিশিষ্ট সালা সান্টা সেসিলিয়া৷ সবচেয়ে বড় এই হলে সেরা সংগীতশিল্পীরা অর্কেস্ট্রার আয়োজন করেন, সংগীত পরিবেশন করেন৷
সেরা সবুজের হাতছানি
রোমের তৃতীয় বৃহত্তম উদ্যানে হেঁটে বেড়ানোর পাশাপাশি গালেরিয়া বরগেজে যান৷ কিংবদন্তি শিল্পীদের আঁকা ছবি রয়েছে সেখানে৷ শাস্ত্রীয় সংগীত যেমন ওট্টোরিনো রেসপিগির অর্কেস্ট্রা (পাইনস অফ রোম) শুনতে পারেন৷ রয়েছে শেক্সপিয়ারের গ্লোব থিয়েটারের প্রতিলিপিও৷
সূর্য ডোবার পালা
পৃথিবীর অন্যতম রোম্যান্টিক শহরে হেঁটে বেড়ান৷ আলতো হাওয়ার স্পর্শ সঙ্গে নিয়ে প্রিয়জনের পাশে দাঁড়িয়ে পন্টে সিস্টো কিংবা পন্টে সান্ট’আঞ্জেলোতে যান সূর্যাস্ত দেখতে৷ ট্রাস্টেভেরের পাশে কোনও পানশালায় গেলে স্ন্যাকসের সঙ্গে খাবারের আগে একটা বিশেষ পানীয় দেয়, তার আস্বাদও নিতে পারেন৷
প্রার্থনার আদর্শ স্থান-দ্য প্যান্থেয়ন
২৫ থেকে ২৭ খ্রিস্টপূর্বের মাঝামাঝি সময়ে রোমান ঈশ্বরের উদ্দেশে প্যান্থেয়ন নির্মিত৷ পরবর্তীতে এটি সম্প্রসারিত হয় রাজা হাদ্রিয়ানের আমলে৷ সাধারণ নাগরিকদের জন্য নির্মিত প্রথম মন্দির এটি৷ প্যান্থেয়নের ভিতরে অকিউলাস দেখতে উপরে তাকালে খেয়াল করুন৷ নয় মিটার ব্যাসের এই ছিদ্র এই স্থাপত্যের আলোর উত্স৷