ইউরোপের ওপর নতুন মার্কিন শুল্ক
৩ অক্টোবর ২০১৯বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডাব্লিউটিও) ঘোষণা দেয় যে, মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্র ইউরোপ থেকে সাত দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার ( ছয় দশমিক আট বিলিয়ন ইউরেো)-র সমপরিমাণ আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করবে৷ এর কয়েক ঘণ্টা পর ওয়াশিংটনও জানায়, যেহেতু ইউরোপীয় কোম্পানি এয়ারবাসকে ইইউর দেয়া অন্যায্য ভর্তুকির কারণে মার্কিন উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী বোয়িংয়ের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে, তাই তারা এই শুল্ক আরোপ করবে৷
তবে ওয়াশিংটন ইউরোপ থেকে উড়োজাহাজ আমদানিতে ১০% ও অন্য কৃষি ও শিল্পপণ্য আমদানিতে ২৫% কর আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে তা কার্যকর করা হবে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ইউএস ট্রেড রিপ্রেসেন্টেটিভের দপ্তর৷
তবে এই শুল্ক আরোপের মূল উদ্দেশ্য ইইউর সঙ্গে একটি মীমাংসায় আসা বলে জানায় তারা৷
‘‘বহু বছর ধরে ইউরোপ এয়ারবাসকে ভর্তুকি দিয়ে আসছে৷ এর ফলে মার্কিন বিমান ব্যবসা ও এর কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন,'' বিবৃতিতে বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহিজার বলেন৷
‘‘আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে চাই যাতে করে আমাদের কর্মীরা লাভবান হন,'' বলেন তিনি৷
তবে যেসব পণ্যোর ওপর কর আরোপ করা হয়েছে সেগুলো মূলত ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র৷ এই চারটি দেশই এয়ারবাসকে ভর্তুকি দেয়৷ সসেজ থেকে শুরু করে কুকিজ, এমনকি ক্যামেরার যন্ত্রাংশ সবকিছুতেই কর আরোপ করা হচ্ছে৷
তবে ডাব্লিউটিও পুরো সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলারের ওপরই কর বসানোর সুযোগ দিলেও ওয়াশিংটন আপাতত তা করছে না, যদিও অ্যামেরিকায় ইইউর বাৎসরিক ৬৮৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির তুলনায় এই অংক কিছুই নয়৷ মার্কিনিরা অবশ্য সতর্ক করে বলছেন যে, উড়োজাহাজের ওপর কর আরোপের ফলে এর খরচ বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে সব কিছুর ওপর৷
এদিকে, এই কর আরোপ আটলান্টিকের দুই পাড়ের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনার আগুনে কিছুটা ঘি ঢেলেছে৷ ডাব্লিউটিওর ঘোষণার পর ২৮ দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কমিশনার সিসিলিয়া ম্যালমস্ট্রম বলেছিলেন, ‘‘যদি যু্ক্তরাষ্ট্র ডাব্লিউটিওর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর আরোপ করে, তাহলে ইইউকেও তারা এমন পরিস্থিতিতে ঠেলে দেবে যে, আমাদেরও তেমন কিছু করা ছাড়া উপায় থাকবে না৷''
ওয়াশিংটনের এমন সিদ্ধান্ত ‘অদূরদর্শী' হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
‘‘আমরা ডাব্লউটিও আইনে হেরে গেছি,'' বার্লিনে বুধবার সাংবাদিকদের বলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
‘‘এখন দেখা যাক অ্যামেরিকানরা কী করে,'' যোগ করেন তিনি৷
কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিনিরা কর আরোপ করায় উত্তেজনা বেড়েছে৷ এখন দেখার বিষয় ইইউ এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয়৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)