হাতে বানানো জুতা
১৪ আগস্ট ২০১৩আঞ্জেলো ইমপেরাত্রিস, বয়স ৭৫৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্লোরেন্সে এই ব্যক্তির কাছে সবাই আসে জুতা তৈরির কাজ শিখতে৷ জলহস্তী থেকে হাঙর – নানা প্রাণীর চামড়া থেকে হাতে সেলাই করে তিনি জুতা তৈরি করেন৷ ইমপেরাত্রিস যে সব শিক্ষার্থীদের জুতা তৈরির কারিগর বা মুচি হিসেবে গড়ে তুলেছেন, তাদের এক-একটি জুতা আজ বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪ হাজার ইউরো দামে৷
নাইজেরিয়া থেকে বুকোলা আসাফা যেমন কাজ শিখতে এসেছেন, তেমনি সৌদি আরব থেকে এসেছেন ডানা আলসেইফ৷ অতীতে কোনো লেখাপড়া বা পুঁথিগত শিক্ষা ছাড়াই জুতা তৈরি করতেন মুচিরা৷ কিন্তু এখন ইমপেরাত্রিসের শিক্ষার্থীরা কেউ স্নাতক পর্যায় শেষ করেছেন আবার কেউবা শেষ করেছেন এমবিএ৷ তারপর এসেছেন এ বিষয়ে শিক্ষা নিতে৷
বুকোলা জানালেন, তিনি লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে লাগোসে ব্যাগ তৈরির কোম্পানি খুলেছিলেন৷ আর এখন তিনি ইমপেরাত্রিসের কাছে ইটালির ঐতিহ্যবাহী জুতা তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন৷
ইমপেরাত্রিসের জন্ম ইটালির দক্ষিণাঞ্চলে বাসিলিকাটা এলাকায়, যেটা একসময় মুচি ও জুতা তৈরির কারিগরদের কাজে মুখরিত হয়ে থাকত৷ সম্প্রতি হাতে তৈরি জুতার ফ্যাশান উঠে গেছে৷ কিন্তু এখনকার প্রজন্ম পুরোনো সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী৷ আকাডেমিয়া রিয়াচি নামে ইমপেরাত্রিসের প্রতিষ্ঠানে আট সপ্তাহের কোর্স আছে৷ একবারে আট জন শিক্ষার্থীকে সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়৷ প্রতি কোর্সের জন্য দিতে হয় ৫ হাজার একশ ইউরো৷
ইমপেরাত্রিস জানালেন, শিক্ষানবীশ হিসেবে যারা চার বছর ধরে বিনা বেতনে কাজ করে গেছে, আজ তারাই নিজেদের তৈরি এক একটি জুতা বিক্রি করছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউরোতে৷
ইমপেরাত্রিসের এই কাজ জুতা তৈরির শিল্পকে যেমন বাঁচিয়ে রাখছে, তেমনি অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে কিছুটা রক্ষা করছে ইটালিকে৷
এপিবি/এসবি (এএফপি)