ইউরোপের আইকনিক শহর প্যারিসে কী দেখবেন?
ইউরোপ মানেই ইতিহাসের হাতছানি৷ ইউরোপের কোন শহরে যেতে চান আপনি? প্যারিস? শিল্পসমৃদ্ধ এই শহরে গেলে কী কী দেখতেই হবে, চলুন দেখে নেওয়া যাক ছবিঘরে..
আইফেল টাওয়ার
১,০৬৩ ফুট লম্বা (৩২৪ মিটার) এই আইফেল টাওয়ার তৈরি হয়েছিল ১৮৮৯ সালে৷ টাওয়ারের স্থপতি গুস্তাভ আইফেল ফরাসি বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তিতে এটি নির্মাণ করেন৷ প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ পর্যটক আসেন শুধু আইফেল টাওযার দেখতে৷ তিনটি তলবিশিষ্ট আইফেল টাওয়ারে (৫৮ মিটার, ১১৫ মিটার, ২৭৫ মিটার) লিফটে ওঠানামা করা যায়৷ তবে অন্য অ্যাডভেঞ্চার করতে এক হাজার ১,৬৬৫ ধাপ সিঁড়িও বাইতে পারেন ৷
দ্য ল্যুভঁ দেখতেই হবে
দ্য ল্যুভঁ মিউজিয়ামে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন সারা পৃথিবী থেকে৷ প্যারিসের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক বিল্ডিং৷ প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে প্রদর্শনীর আয়োজন৷ সারা দিন ধরে থাকলেও এই সংগ্রহশালার সবটা দেখে ওঠা মুশকিল৷ তিন ঘণ্টার একটা 'হাইলাইট' বুকিং করা সম্ভব৷ এর ফলে মোনালিসা, ভেনাস দে মিলো এবং উইংড ভিক্টরি দেখে নেওয়া যাবে৷
অন্য সংগ্রহশালাও দেখতে হবে
শিল্পসাহিত্য রসিকেরা মিউজি ড'সে-তে যেতে পারেন৷ একসময়ে এটা ছিল ট্রেন স্টেশন৷ক্যাফেতেও যেতে ভুলবেন না৷ ১৭ থেকে ১৯ শতকের সময়ের বিশাল বিল্ডিং যেখানে শীতের সময় ফলের গাছগুলিকে সুরক্ষা দেওয়া হত, সেগুলি দেখতে ভুলবেন না যেন৷ শ্যাওলা থেকে তৈরি রং দিয়ে আঁকা ট্যাপেস্ট্রি কিংবা 'ওয়াটার লিলি পেইন্টিং'-ও দেখতেই হবে৷ দেখতে হবে রাডি মিউজিয়ামও৷
এই দ্বীপে প্যারিসের জন্ম
পনউফের মাধ্যমে ইল দে লা সি মূল ভূখণ্ডে সংযুক্ত হয়েছে৷ এখানে রয়েছে কঁসিয়াজেরি৷ এই প্রাসাদকে ফরাসি বিপ্লবের সময় সংশোধনাগারে পরিণত করা হয়েছিল৷ নত্রদাম গির্জাও রয়েছে৷ তবে এখন রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বন্ধ৷ সেইন্ট চ্যাপেল গির্জাও রয়েছে পাশে৷
সবুজের সমারোহে হেঁটে দেখা
প্যারিসীয়রা শহরের বুকে সবুজের মাঝে ঘুরতে ভালবাসেন৷ লুক্সেমবার্গ উদ্যান, লেটরিয়েরি উদ্যানের মতো একাধিক জায়গা রয়েছে৷ প্যারিস শহরের উত্তর-পূর্বে বিট শুম উদ্যানে ঘুরতেও দারুণ লাগবে৷
কী খাবেন প্যারিসে
খাবারের জন্য বিশেষ সুনাম রয়েছে ফরাসিদের৷ বেকিং করা খাবার, ক্রসঁ, শামুক-ঝিনুক-সহ নানা সি-ফুড চেখে দেখতে পারেন৷ মিষ্টিজাতীয় খাবার পছন্দ হলে গ্লাস আইসক্রিম, ক্রেমে ব্রুলি রয়েছে৷ পনির আর রুটির হরেক সম্ভার রয়েছে এবং অবশ্যই ওয়াইন অর্থাৎ পানীয়ের স্বাদ নিতে ভুলবেন না৷
প্যারিস মানেই সংগীতের মূর্চ্ছনা
দ্য পালে গার্নিয়ে-তে সংগীত আয়োজন শুনতে পারেন৷ টিকিট কেনার ক্ষমতা না থাকলে অপেরা হাউস রয়েছে৷ অসাধারণ কারুকার্য এই হাউসের৷ ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখতে চাইলে গাইড-সহ ট্যুর বুকিং করাই ভাল৷
প্যারিসের সেরা ভিউ
আইফেল টাওয়ার থেকে প্যারিসের সেরা দৃশ্যগুলি দেখা যায়৷ মপারনাস ট্যুরের ৫৬ তলা থেকে অসামান্য দেখায় এ শহরকে৷ আর্ক দে ত্রিয়ম্ফ থেকে ১২টি অ্যাভিনিউ দেখতে দারুণ লাগে৷ শঁজেলিজেও রয়েছে এই গাছে ঘেরা রাস্তাগুলির মধ্যে ৷
মমার্ত এবং সাকরে ক্যও
প্যারিসে গেলে মমার্ত অবশ্যই যেতে হবে৷ সাকরে ক্যও বাসিলিকা কিংবা ফিউনিক্যুলা মমার্ত থেকে ঘুরে আসতে পারেন৷ প্লাসে দু তেরতে গিয়ে নিজের পোর্ট্রেট কিংবা ক্যারিকেচার আঁকিয়ে নিতে পারেন শিল্পীদের থেকে৷ শৈল্পিক ক্যাফে আর বুটিক তো আছেই৷
ভিড় থেকে আড়ালে
সেওয়ের মিউজিয়াম কিংবা ক্যাটাকম্বসে মাটির নীচে ঘুরে বেড়াতে পারেন৷অব্যবহৃত রেললাইনে তৈরি উদ্যান, কিংবা পের লাশেসের সমাধিস্থলে হেঁটে বেড়াতে পারেন৷সন্ধ্যা নামলে আইফেল টাওয়ারের লাইট শো দেখতে পারেন৷ সবমিলে প্যারিস ভ্রমণ হয়ে উঠবে জমজমাট৷