যুব বেকারত্ব কমাবে নেসলে
২৮ জুন ২০১৩ইউরোপে নেসলে-র ব্যবসার পরিমাণটা বোঝাতে গেলে এটুকু বলা যথেষ্ট যে, নেসলে গ্রুপের প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ বিক্রির এক-তৃতীয়াংশই এই ইউরোপে৷ অপরদিকে তারা গত বছরে ইউরোপে হাজার তিনেক নতুন চাকরি সৃষ্টি করেছে, দু'হাজার ট্রেনিশিপ আর অ্যাপ্রেন্টিসশিপ দিয়েছে৷
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবর্গ ব্রাসেলসে সম্মিলিত হয়েছিলেন যুব বেকারত্বের মোকাবিলা করার পন্থা নিয়ে আলোচনা করার জন্য৷ সেই উপলক্ষ্যে নেসলে-র ইউরোপীয় প্রধান লোরঁ ফ্রেশ ইইউ-এর কর্মসংস্থান কমিশনার লাসলো আন্ডর-কে তাঁর পরিকল্পনা পেশ করেন৷
ইউরোপের যুবসমাজের জন্য কাজ চাই
সুইজারল্যান্ডের ভেভে-তে নেসলের মুখ্য কার্যালয়তে ফ্রেশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সরকারেরা একা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না৷ যখন ইউরোপের বাসিন্দাদের বয়স বাড়ছে, ইউরোপ ঋণগ্রস্ত, তখন ইউরোপের যুবসমাজের জন্য কাজ চাই৷''
বয়স ত্রিশের কম, এমন দশ হাজার যুবক-যুবতীকে ২০১৬ সালের মধ্যে চাকরি দেবার পরিকল্পনা করছে নেসলে৷ এছাড়া আরো দশ হাজার ট্রেনি আর অ্যাপ্রেন্টিস নেওয়া হবে৷ নেসলে তার তেষট্টি হাজার সাপ্লায়ারের উপরেও এই পন্থা অনুসরণ করার জন্য চাপ দেবে – ফ্রেশ-এর ভাষায় ‘‘প্রেরণা যোগাবে'', বলে নেসলে প্রধান আশা প্রকাশ করেন৷ ‘‘ইউরোপে বিনিয়োগ করে, ইউরোপে সম্প্রসারণ করে আমরা আমাদের ব্যবসার জন্যই ভালো একটা কিছু করছি৷ সেটা আবার সমাজের পক্ষেও মঙ্গলজনক হবে৷''
ফ্রেশ অবশ্য যোগ করেছেন, নেসলের কর্মীসংখ্যা পুরো দশ হাজার বাড়বে না, কেননা কিছু তরুণ কর্মীকে যে সব প্রবীণ কর্মী অবসরগ্রহণ করছেন, তাদের বিকল্প হিসেবে নেওয়া হবে৷ অন্যদের নেওয়া হবে জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স ও ব্রিটেনে নেসলে-র নতুন কারখানাগুলিতে, যে সব কারখানা নির্মাণের ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছে৷
ফ্রেশ আরো একটি অভিনব কথা বলেছেন: দক্ষিণ ইউরোপের সংকটপীড়িত দেশগুলির তরুণ-তরুণীদের উত্তর ইউরোপের সুস্থ অর্থনীতিগুলিতে কাজের প্রস্তাব দেওয়া হবে৷ তবে নেসলে অপেক্ষাকৃত প্রবীণ, অভিজ্ঞ কর্মীদেরও নিতে থাকবে, বলে জানিয়েছেন ফ্রেশ৷
সকলেই দুশ্চিন্তায়
এক হিসেবে নেসলে-র এই যুব বেকারত্ব হ্রাস পরিকল্পনাকে আত্মবিজ্ঞাপন বলে বাতিল করা যায়৷ অপরদিকে এই পরিকল্পনার মূল কথাটি হলো, যারা তরুণ, যাদের বয়স কম, তাদের একটা সুযোগ দেওয়া৷ এবং সে কাজ নেসলে-র মতো সংস্থারাই সর্বাগ্রে করতে পারে৷ ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট সম্পর্কে ফ্রেশ যা বলেছেন, তা-তে তো আপত্তি করার মতো কিছু নেই:
‘‘সবারই কোনো আত্মীয় কিংবা বন্ধু আছে, যে এই সংকটের মুখে পড়েছে৷ গোটা সমাজকে প্রভাবিত করেছে এই সংকট৷ সকলেই দুশ্চিন্তায়৷ বিশ্বের সবচেয়ে হতাশ, আশাহীন দেশগুলির প্রথম দশটির মধ্যে ন'টিই যে ইউরোপে, তা-তে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷''
এসি/ডিজি (রয়টার্স)