ইউরোপে বিভিন্ন ধর্ম পালনে বাধা তুলনামূলকভাবে কম
২২ এপ্রিল ২০২২গতবছর ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে বিভিন্ন দেশে ধর্ম পালনে সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পিউ রিসার্চ৷ আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় বিভিন্ন সংস্থা এবং স্বাধীন ও বেসরকারি সংস্থার প্রকাশিত এক ডজনের বেশি রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়৷
প্রতিবেদনে ‘সরকারি বিধিনিষেধ সূচক’ ও ‘সামাজিক হয়রানি সূচক’ নামে দুটি সূচকও প্রকাশ করা হয়েছে৷ ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলকে এসব সূচকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
সরকারি বিধিনিষেধ সূচক
এই সূচকে একটি দেশের আইন, নীতি ও কার্যক্রম ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতি পালনে কতটা বাধা দেয়, তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে৷ ২০টি মাপকাঠির ভিত্তিতে সূচকটি তৈরি করা হয়৷ এর মধ্যে আছে একটি নির্দিষ্ট ধর্ম বা বিশ্বাসের উপর নিষেধাজ্ঞা, ধর্ম পরিবর্তনে বাধা, ধর্ম প্রচারে বিধিনিষেধ কিংবা এক বা একের বেশি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেয়া ইত্যাদি৷
১০ পয়েন্টের মধ্যে স্কোরের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশে বিধিনিষেধের পরিমাণ ‘অনেক বেশি- স্কোর ৬.৬ ও তার চেয়ে বেশি’, ‘বেশি- স্কোর ৪.৫-৬.৫’, ‘পরিমিত- স্কোর ২.৪-৪.৪’ ও ‘কম-’ এই চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷
এতে দেখা গেছে জার্মানি (স্কোর ৩.২) ও যুক্তরাজ্যসহ (স্কোর ৩.২) ইউরোপের দেশগুলো মূলত ‘পরিমিত' গ্রুপে (স্কোর ২.৪ থেকে ৪.৪) পড়েছে৷ তবে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করা দেশ ফ্রান্স (স্কোর ৪.৬) পড়েছে ‘বেশি’ গ্রুপে৷ বাংলাদেশ (স্কোর ৪.৮), ভারত (স্কোর ৫.৬) ও পাকিস্তানও (স্কোর ৬.৩) আছে এই গ্রুপে৷
পিউ রিসার্চ সেন্টারের হিসাব বলছে ২০১৬ সালে ইউরোপে (তৎকালীন ইইউর ২৮টি দেশসহ নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড) মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল প্রায় দুই কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার৷ সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করতেন ফ্রান্সে (৫৭ লাখ ২০ হাজার)৷ এর পরে যথাক্রমে আছে জার্মানি (৪৯ লাখ ৫০ হাজার), যুক্তরাজ্য (৪১ লাখ ৩০ হাজার), ইটালি (২৮ লাখ ৭০ হাজার), নেদারল্যান্ডস (১২ লাখ ১০ হাজার) ও স্পেন (১১ লাখ ৮০ হাজার)৷
স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব, ধর্মের ইতিহাস ও জেন্ডার স্টাডিজ জানিয়েছে, ইউরোপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ হিন্দু বাস করেন৷ যুক্তরাজ্যে ১০ লাখের বেশি হিন্দু বাস করেন বলে জানিয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ’৷
সামাজিক হয়রানি সূচক
এই সূচকে একক ব্যক্তি, কোনো গোষ্ঠী বা সংস্থা কর্তৃক ধর্মীয় বৈরিতাপূর্ণ কার্যক্রমের বিষয়টি তুলে ধরা হয়৷ ধর্ম সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র সংঘাত কিংবা সন্ত্রাসবাদ, দাঙ্গা, ধর্মীয় পোশাক পরার কারণে হয়রানি, ধর্মের কারণে কাউকে ভয় দেখানো বা লাঞ্ছিত করাসহ মোট ১৩টি মাপকাঠির ভিত্তিতে সূচকটি তৈরি করা হয়৷
এই সূচকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ভারত (স্কোর- ৯.১)৷ ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইসরায়েলসহ মোট আটটি দেশকে ‘অনেক বেশি’ গ্রুপে রেখেছে পিউ রিসার্চ৷ বাংলাদেশসহ ইউরোপের দেশ জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন, রাশিয়া, স্পেন, বেলজিয়াম ও ডেনমার্ক আছে ‘বেশি’ গ্রুপে৷ ফ্রান্স আছে ‘পরিমিত’ গ্রুপে৷ অর্থাৎ ফ্রান্সে ধর্মের উপর সরকারি বিধিনিষেধ বেশি থাকলেও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী পর্যায়ে হয়রানি সেই তুলনায় কম৷
সম্প্রতি সুইডেনের উগ্র ডানপন্থি রাজনীতিবিদ রাসমুস পালুদান কোরানের একটি কপি পোড়ান বলে খবর বের হয়েছিল৷ তবে সরকারি বিধিনিষেধ সূচক ও সামাজিক হয়রানি সূচকে দেশটি ‘পরিমিত’ গ্রুপে রয়েছে৷
পিউ রিসার্চের প্রতিবেদনের আরও তথ্য
ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতিনীতির উপর সরকার ও সমাজের বিধিনিষেধ নিয়ে ২০০৭ সাল থেকে রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে পিউ রিসার্চ৷ ২০১৯ সালের তথ্য নিয়ে ২০২১ সালে প্রকাশিত পিউ রিসার্চের সবশেষ রিপোর্ট বলছে, তারা প্রতিবেদন প্রকাশ শুরুর পর বিভিন্ন দেশে ধর্মের উপর সরকারি বিধিনিষেধ ২০১৯ সালেই সবচেয়ে বেশি দেখেছে৷
১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি দেশে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে কোনো না কোনোভাবে হয়রানি করা হয়েছে৷ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের ২০টি দেশেই এমন হয়রানি দেখা গেছে৷ ইউরোপের ৪৫টি দেশের মধ্যে ৪৪টিতেই হয়রানির ঘটনা ঘটেছে৷ সাব সাহারা আফ্রিকার ৯০ শতাংশ, অ্যামেরিকা অঞ্চলের ৮৯ শতাংশ ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ৮৪ শতাংশ দেশে হয়রানির খবর পাওয়া গেছে৷
এছাড়া ১৬৩টি দেশের সরকার প্রার্থনায় কিছু না কিছু বাধা দিয়েছে৷ বাধা বলতে কিছু ধর্মীয় রীতি পালন করতে না দেয়া, প্রার্থনার স্থানে যেতে বাধা দেয়া কিংবা কোনো ভবনে ধর্মীয় কার্যক্রম করতে না দেয়া বোঝানো হয়েছে৷
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় প্রতীক ও পোশাকের উপর বিধিনিষেধ দিতে দেখা গেছে৷ যেমন অস্ট্রিয়ায় প্রকাশ্য পুরো মুখ ঢাকা পোশাক পরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে৷ ১০ বছরের কম বয়সিদের হেডস্কার্ফ পরে স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয়েছে৷
স্লোভেনিয়ায় কোনো প্রাণীকে অচেতন করার আগে জবাই করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে মুসলমান ও ইহুদিরা যথাক্রমে হালাল ও কোশরের নিয়ম মেনে পশু জবাই করতে পারেন না৷
ফ্রান্স
২০১১ সালে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স প্রকাশ্যে মুখ ঢাকা পর্দা পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷
ফ্রান্সে সরকারি স্কুলের কর্মীরা ধর্মীয় পরিচয় বহন করে এমন কোনো প্রতীক পরতে পারেন না৷ শিক্ষার্থীরাও ‘সহজে দেখা যায় এমন ধর্মীয় প্রতীক’ যেমন মুসলমানরা হেডস্কার্ফ, ইহুদিরা টুপি, শিখরা দস্তর ও খ্রিষ্টানরা বড় ক্রস পরতে পারে না৷ পূর্বাঞ্চলের আলজাস-মোজেল এলাকা ও ফ্রান্সের ওভারসিজ ডিপার্টমেন্ট ও টেরিটরি ছাড়া ফ্রান্সের আর কোথাও সরকারি স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হয় না৷ তবে ইতিহাস বিষয়ের পাঠ্যসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হয়৷
২০২১ সালের ২১ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ‘২০২০ রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল রেলিজিয়াস ফ্রিডম’ প্রতিবেদনে ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অফ দ্য মুসলিম ফেইথের হিসাব উল্লেখ করে বলা হয় ২০২০ সালে ফ্রান্সে মুসলমানদের লক্ষ্য করে ২৩৫টি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে৷ একই বছর ৩৩৯টি ইহুদি-বিদ্বেষী ঘটনা ঘটে বলে জানায় দ্য জিউস কমিউনিটি প্রোটেকশন সার্ভিস৷ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অ্যামেরিকান জিউস কমিটির এক জরিপে অংশ নেয়া ৭০ শতাংশ ইহুদি জানান, তারা তাদের জীবনে অন্তত একবার ইহুদি-বিদ্বেষী ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন৷ মার্কিন এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ফ্রান্সে খ্রিষ্টানদের উপর হামলার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি৷ তবে যত হামলা হয়েছে তার বেশিরভাগই গির্জা ও কবরস্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়৷
২০১৫ সালে প্যারিসের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলায় ১৩০ জন নিহত হয়েছিলেন৷ মাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পাঁচ মাস পর ২০১৭ সালের অক্টোবরে দেশটির সংসদ একটি নতুন সন্ত্রাসবিরোধী আইন পাস করে৷ এর আওতায় ঘৃণা ছড়ানো সন্দেহে মসজিদ বন্ধ করে দিতে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা বাড়ানো হয়৷ এছাড়া পুলিশের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাও বাড়ানো হয়৷ এই আইনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে৷
গত ৫ এপ্রিল রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব উল্লেখ করা জানানো হয়, গত ১৮ মাসে দেশটিতে ২২টি মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে৷ এই সংখ্যা তার আগের তিন বছরে মোট মসজিদ বন্ধের তুলনায় অনেক বেশি বলে রয়টার্সকে জানান ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা৷ অধিকার কর্মী, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের অভিযোগ, ফ্রান্সে ধর্মীয় স্থান বন্ধের জন্য কর্তৃপক্ষকে এত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে, যথাযথ পরীক্ষা না করেই মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, ফ্রান্সে প্রায় আড়াই হাজার মসজিদ রয়েছে৷
ফ্রান্স ক্রমে মুসলমানদের জন্য বৈরী হয়ে উঠছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদন জানিয়েছে৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব বলছে, ২০২১ সালে মুসলিমবিরোধী বৈষম্যমূলক আচরণ বেড়েছে৷ আর অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা কমেছে৷
২০২০ সালের অক্টোবরে ফ্রান্সের নিস শহরের এক গির্জায় ঢুকে তিন ক্যাথলিককে হত্যা করেছিলেন টিউনিশিয়ার এক নাগরিক৷ এর প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ দেশের ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শোক প্রকাশ করে সব ধর্মের মানুষকে এক হওয়ার এবং ‘বিভাজন নীতিতে যোগ না দেয়ার' আহ্বান জানিয়েছিলেন৷
জার্মানি
সম্প্রতি জার্মানির বুন্ডেসলিগার এক ম্যাচ চলার সময় মুসলমান এক ফুটবলারের রোজা ভাঙার সুবিধার্থে কিছুক্ষণের জন্য খেলা বন্ধ রাখা হয় - যা আগে কখনও হয়নি৷
কেন্দ্রীয় পশু নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী অ্যানেস্থসিয়া ছাড়া পশু হত্যা নিষিদ্ধ৷ হালাল ও ইহুদিদের কোশর রীতির ক্ষেত্রেও এই আইন প্রযোজ্য৷
২০১৫ সালে জার্মানির ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত সরকারি স্কুলে শিক্ষকদের হেডস্কার্ফ পরার উপর নিষেধাজ্ঞা ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থি বলে রায় দেয়৷ তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাজ্যগুলোর উপর ছেড়ে দেয়া হয়৷
২০১৯ সালে দুই হাজার ৩২টি ইহুদি-বিদ্বেষী ঘটনা ঘটে৷ এর মধ্যে ৭২টি সহিংস ছিল৷ বাকিগুলো মৌখিক হয়রানি, হুমকি, বৈষম্য ও ভাঙচুরের ঘটনা ছিল৷
২০২০ সালে এক হাজার ২৬টি মুসলিমবিরোধী হামলা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে৷
গত অক্টোবরে কোলন শহরের মসজিদগুলোকে আগামী দুই বছরের জন্য প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে তিনটার মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটের মধ্যে মাইকে আজান দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়৷ তবে মসজিদের অবস্থান ভেদে মাইকের শব্দ মাত্রা ঠিক করে নিতে বলা হয়েছে৷ কোলনের কেন্দ্রীয় মসজিদ জার্মানির মধ্যে সবচেয়ে বড়৷ জার্মানির উগ্র ডানপন্থি দলগুলোর মুসলিমবিরোধী তৎপরতার লক্ষ্য হচ্ছে এই মসজিদ৷
২০২০ সালে বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ স্কুল শিক্ষার্থীদের মুখ ঢাকা পোশাক পরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়৷ শিক্ষকদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা আগে থেকেই কার্যকর ছিল৷
বিভিন্ন কোম্পানি কিছু শর্তের আওতায় কর্মীদের হেডস্কার্ফ পরে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে বলে গত জুলাইতে একটি রায় দিয়েছিল ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস৷ জার্মানিতে দুজন মুসলিম নারী কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়ার কয়েক বছর পর মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে ফিরে হেডস্কার্ফ পরা শুরু করলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়৷ এরপর তারা মামলা করলে ইউরোপীয় আদালত ঐ রায় দেয়৷
যুক্তরাজ্য
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে আইন করে ধর্মীয়ভাবে অনুপ্রাণিত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান এবং শব্দ ব্যবহার বা লিখিত উপাদান প্রকাশ বা বিতরণের মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
সরকারি স্কুলগুলোতে তিন থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রার্থনা বাধ্যতামূলক৷ ধর্মীয় শিক্ষার পাঠ্যসূচিতে ‘খ্রিষ্টান মূল্যবোধের’ প্রতিফলন ঘটাতে বলা হয়েছে৷ তবে বাবা-মা চাইলে তাদের বাচ্চাদের ধর্মীয় শিক্ষা থেকে অব্যহিত চাইতে পারে৷
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সরকারি স্কুলগুলোতে প্রতিদিন সম্মিলিতভাবে প্রার্থনা (পুরোপুরি বা প্রধানত... খ্রিষ্টান ধর্মীয়) আয়োজনও বাধ্যতামূলক৷ তবে এক্ষেত্রেও মা-বাবা চাইলে তাদের বাচ্চাদের প্রার্থনা থেকে অব্যহিত চাইতে পারে৷
স্কুলের পোশাক নির্ধারণের সময় কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর রীতিনীতি বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে৷
নিউজিল্যান্ডে মসজিদের হামলার এক বছর পূর্তিতে ২০২০ সালের মার্চে যুক্তরাজ্য সরকার মুসলিম, খ্রিষ্টান, শিখ ও হিন্দুদের প্রার্থনাস্থলে নিরাপত্তা বাজেট দ্বিগুন করার ঘোষণা দেয়৷
রাজনৈতিক দলের উদ্যোগ
অর্থোডক্স, ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট, ইসলাম ও ইহুদিদের মধ্যে ধর্মীয় শান্তি বজায় রাখতে প্রতিবছর সম্মেলন আয়োজন করে ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি৷ ইউরোপীয় সংসদের সাংসদ, ধর্মীয় নেতা, সরকারি প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা এসব সম্মেলনে অংশ নিয়ে থাকেন৷
জাহিদুল হক (পিউ রিসার্চ, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন)