1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে শৈবালকে খাবার হিসেবে জনপ্রিয় ...

৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এশিয়া, বিশেষ করে চীন, জাপান ও কোরিয়ায় খাবার হিসেবে সিউইড তথা সামুদ্রিক শৈবালের ব্যবহার অনেক দিনের৷ এবার ইউরোপীয়দের কাছে এই খাবার জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছে আয়ারল্যান্ডের একটি জেলে পরিবার৷

https://p.dw.com/p/2X2tW
Alpen-Rentierflechte Cladonia stellaris
ছবি: Dorothee Killmann/Uni Koblenz

তাদের বাস রাথলিন দ্বীপে৷ উদ্যোক্তার নাম কেট বার্নস৷ তাঁর কোম্পানি ‘ওশান ভেজ আয়ারল্যান্ড' শৈবাল থেকে নুডুলস তৈরি করে৷ এরপর তা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বিক্রি করা হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘অতীতে শৈবালের বহু ব্যবহার ছিল৷ তবে এখন আমি যেটা করছি সেটা একটু ভিন্ন, কারণ আমি এর চাষ করছি, যেটা আরও বেশি ‘সাস্টেনেবল'৷ এর আরেকটি মানে হচ্ছে, আমরা কোন ধরনের শেওলার চাষ করতে চাই সেটা আমরাই নির্ধারণ করতে পারি৷ আমরা এর জন্মানোর সময়টাও ঠিক করে নিতে পারি৷

কেট আর তাঁর দল কৃত্রিম উপায়ে শেওলা জন্মানোর একটি পদ্ধতি বের করেছেন৷ শেওলা জন্মানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় নার্সারির ট্যাঙ্কে৷ নার্সারি ম্যানেজার সারাহ ব্যারি বলেন, ‘‘পানিতে থাকলে শেওলার বীজগুটি পাথরের মতো অমসৃণ কিছু খোঁজে৷ নিজের ছোট্ট লেজের সাহায্যে সাঁতার কেটে তারা সেই পাথরের কাছে গিয়ে থিতু হয়৷ সাগরের মতো সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে আমরা ট্যাংকে কুন্ডলীর মতো অমসৃণ সারফেস তৈরি করেছি, যেন বীজগুটি সেখানে গিয়ে থাকতে পারে৷''

খাবার হিসেবে শৈবাল

নয় সপ্তাহের মধ্যে বীজানুগুলোতে ছোট অঙ্কুর জন্ম নেয়৷ ট্যাঙ্কে শেওলা জন্মানোর সুবিধা হলো, এর ফলে ইকোসিস্টেমের কোনো ক্ষতি হয় না৷ তবে কিছু সমস্যা আছে৷ ব্যারি বলেন, ‘‘ট্যাঙ্কে শৈবালের চাষ করতে গিয়ে প্রথমদিকে একটি সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম আমরা৷ পানি বেশি অ্যাসিডমিশ্রিত হওয়ায় এবং সেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল৷ তবে আমরা সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে জেনেছি কীভাবে পানিতে ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য আনা যায়, আর পানি ব্যাকটেরিয়ামুক্ত রাখা যায়৷''

ট্যাঙ্কে জন্মানোর পর বীজানুগুলোকে দড়ি সহ সাগরে নামিয়ে দেয়া হয়৷ এর কয়েকমাস পর সেগুলো পানি থেকে তুলে আনা হয়৷

‘ওশান ভেজ আয়ারল্যান্ড' শৈবাল চাষের জন্য সাগরের ৩০ একর পরিমাণ জায়গার লাইসেন্স পেয়েছে৷

কেট ও তাঁর ছেলেরা ২০১৩ সালে কোম্পানিটি শুরু করেন৷ তাঁরা এই দ্বীপেই বেড়ে উঠেছেন এবং তাঁরাই দ্বীপের শেষ জেলে পরিবার৷ শৈবালের চাষ জেলেদের আয়ের অন্যতম একটি উৎস হয়ে উঠেছে৷

‘ওশান ভেজ আয়ারল্যান্ড' এবার ২৫ টন শেওলা পাবে বলে আশা করছে৷ চাহিদা মেটাতে ভবিষ্যতে উৎপাদন দ্বিগুন করার পরিকল্পনা করছে তারা৷

খাবার হিসেবে ইউরোপীয়দের কাছে শৈবালকে পরিচিত করাতে চেষ্টা করছেন কেট৷ তিনি বলেন, ‘‘শৈবাল চাষের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, এর জন্য সাগরের নির্দিষ্ট অংশের লাইসেন্স নিতে হয়৷ আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে সমুদ্রের যে অংশে উইন্ডমিল বসানো আছে, তার আশেপাশের জায়গাগুলোর লাইসেন্স শেওলা উৎপাদনকারীদের দেয়া যেতে পারে৷ এর ফলে সাগরের অবকাঠামোর নানবিধ ব্যবহার হবে৷''

শৈবাল চাষের সাফল্য অনেকটা নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর৷ তাই এই কাজে কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে৷

প্রতিবেদন: লুইস অসবোর্ন/জেডএইচ

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ