1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে অভিবাসন সম্পর্কে নতুন ভাবনা

সঞ্জীব বর্মন৯ জুলাই ২০০৮

ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা অনুঃপ্রবেশ ও অভিবাসনের ক্ষেত্রে নতুন নীতি প্রনয়ণের উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ অন্যদিকে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষিত কর্মীদের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে কর্মী আনার উদ্যোগ চলছে৷

https://p.dw.com/p/EZNK
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অজানার পথে পাড়ি দেন অসংখ্য মানুষছবি: dpa

প্রেক্ষাপট

একদিকে বেকারত্বের সমস্যা, অন্যদিকে অনেক পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না৷ তার উপর অবৈধ অনুঃপ্রবেশকারীদের নিয়ে সমস্যা৷ জন্মের হারও পড়তির দিকে৷ জার্মানি তথা ইউরোপের অনেক দেশেই এই চিত্র দেখা যায়৷ আপাতদৃষ্টিতে সমস্যাগুলি বিচ্ছিন্ন মনে হতে পারে - কিন্তু বর্তমান বিশ্ব কাঠামোর নানা চ্যালেঞ্জের মুখে প্রত্যেকটি সমস্যাই একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত৷ এতকাল এই সব সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে জার্মানি তথা ইউরোপের নেতারা অত্যন্ত সতর্ক থাকতেন৷ তাঁরা এমন কিছু করতে চাইতেন না, যার ফলে ভোটারদের মনে অসন্তোষ দেখা দেয় এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার থেকে ফায়দা তুলতে পারে৷ কিন্তু গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের মনেও এবিষয়ে সচেতনতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে৷ ফলে রাজনৈতিক নেতারাও এখন এমন সব সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছেন, যা কয়েক বছর আগেও অকল্পনীয় ছিল৷ জার্মানির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান দফতরের প্রধান ফ্রাঙ্ক ইয়ুর্গেন ভাইজ়ে বলেন, ……বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষ কর্মী রয়েছে৷ কিন্তু আমি নিজে অত্যন্ত অবাক হয়েছিলাম, যখন শুনলাম ইলেকট্রিশিয়ান, চাবিওয়ালার মত সাধারণ শ্রমিকও খোঁজা হচ্ছে৷ বাজারে এবং শিল্পক্ষেত্রে - দুই ক্ষেত্রেই এদের চাহিদা রয়েছে৷ সবেচেয়ে বেশী চাহিদা দেখা যাচ্ছে logistics বা পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে৷ ট্রাক চালক থেকে শুরু করে মাল খালাসের জন্য কর্মীর বিশেষ প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে৷––

জার্মানিতে গত কয়েক বছরে বেকারদের সংখ্যা বিস্ময়কর মাত্রায় কমে গেছে৷ সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮ কোটি ২০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে বেকারদের সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ৷ অন্যদিকে উপযুক্ত প্রার্থীর অভাবে অনেক পদ খালি রয়েছে৷ শুধু উচ্চশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ারদের জন্যই প্রায় ৯৬,০০০ পদ খালি পড়ে রয়েছে৷ এই সব পদ দ্রুত পূরণ করতে না পারায় অর্থনীতির বিপুল ক্ষতি হচ্ছে৷ অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্মীর অভাবে অনেক কাজে হাত দিতে পারছে না, যার ফলে সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানেরই ক্ষতি হচ্ছে৷ এখন প্রশ্ন হল, জার্মানিতে কোন্ ক্ষেত্রে কত কর্মীর অভাব রয়েছে? এই অভাব সাময়িক, না দীর্ঘস্থায়ী? আগেভাগেই কীভাবে এই অভাব সম্পর্কে আঁচ পাওয়া সম্ভব?

Symbolbild Einwanderung Gastarbeiter IT-Branche
শুধু তথ্য-প্রযুক্তি নয়, চাহিদা বাড়ছে ইঞ্জিনিয়ারদেরওছবি: DW/picture-alliance/dpa

জার্মানিতে উচ্চশিক্ষিত কর্মীর চাহিদা

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে জার্মানি এক সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলতে চলেছে৷ এই কাঠামোর আওতায় প্রতি মাসে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে পরের ৬ মাসে কর্মীর চাহিদা সম্পর্কে আগাম মূল্যায়ন চাওয়া হবে৷ এই চাহিদার ভিত্তিতে একদিকে দেশের মধ্যে উপযুক্ত কর্মী গড়ে তোলার কাজে মনে দেওয়া হবে - অন্যদিকে আপাতত কর্মীর চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে দ্রুত কর্মী আনার চেষ্টা করা হবে৷ এই প্রক্রিয়ায় শুধু সরকার ও শিল্প জগতই নয় - অংশ নেবে শ্রমিক সংগঠন ও বিশেষজ্ঞরাও৷ চলতি মাসেই জার্মান মন্ত্রীসভা এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে শুধু তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞই নয়, চাহিদা অনুযায়ী বিদেশী ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য পেশার কর্মীরাও সহজে জার্মানিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন৷ তবে এমন সুযোগ তাদের জন্য কতটা আকর্ষণীয় হবে, তা জানতে হলে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে৷

ইউরোপীয় স্তরে ভাবনা-চিন্তা

শুধু জার্মানি নয়, ইউরোপীয় স্তরেও অভিবাসনের ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা চলছে৷ ইউরোপকে দুর্গের মত দুর্ভেদ্য করে তোলার সাময়িক চেষ্টা বাতিল করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের পথে অগ্রসর হচ্ছে৷ আনুমানিক প্রায় ৬০ লক্ষ বিদেশী অনুঃপ্রবেশকারী ইউরোপে বসবাস করে৷ সামাজিক সুরক্ষার মতো সুযোগ-সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত৷ অতি কম মজুরিতে তারা বে-আইনীভাবে কাজ করে৷ স্পেনের কৃষিক্ষেত্র, ফ্রান্সের হোটেল-রেস্তরাঁ বা জার্মানির নির্মাণ শিল্প - বে-আইনী শরণার্থীদের সস্তার শ্রম ছাড়া এই সব ক্ষেত্রের পক্ষে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকাই অসম্ভব হত৷

Schengen SIS Offene Grenze Deutschland und Tschechien
শেঙেন চুক্তির কল্যাণে সীমান্ত উন্মুক্ত হলেও প্রয়োজন অভিবাসনের ক্ষেত্রে একক ইউরোপীয় নীতিছবি: picture-alliance/ dpa

এতকাল সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়িয়েও অনুঃপ্রবেশ বন্ধ করা সম্ভব হয় নি৷ ভবিষ্যতে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি ই.ইউ.-ভুক্ত দেশগুলি আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে চায়৷ যেমন যেসব দেশ থেকে শরণার্থীরা ইউরোপের পথে পাড়ি দেয়, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো হবে৷ এই সব দেশের উচ্চশিক্ষিত মানুষের জন্য ইউরোপের প্রবেশদ্বার নিয়ন্ত্রিত হলেও খুলে দেওয়া হবে৷

স্পেন, ইটালি ও গ্রীস এতকাল বে-আইনী অনুপ্রবেশকারীদের একাংশকে বৈধ পরিচয়পত্র দিয়ে এসেছে৷ ইউরোপের বাকি দেশগুলি এই নীতির ঘোরতর বিরোধী, কারণ তাদের মতে, এর মাধ্যমে অনুঃপ্রবেশে উল্টে আরও উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে৷ বিশেষ করে ফ্রান্স এই নীতি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল৷ কিন্তু স্পেন তার বিরোধিতা করেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান