1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপ, অ্যামেরিকায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে

২১ অক্টোবর ২০১১

এবছর শিল্পোন্নত বিশ্বে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী দপ্তর৷ গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে ইউরোপ এবং উত্তর অ্যামেরিকায়৷ সবচেয়ে বেশি এসেছে ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে৷

https://p.dw.com/p/12wIA
Ein Asylbewerber in seinem Zimmer im Wohnheim der Zentralen Ausländerbehörde des Landes Brandenburg in Eisenhüttenstadt (Oder-Spree), aufgenommen am 20.06.2011. Seit Jahresbeginn registrierte die Behörde 554 Asylsuchende in Brandenburg. Im gesamten Jahr 2010 waren es 1238. Foto: Patrick Pleul Für Projekt Destination Europe
ব্রান্ডেনবুর্গে পূর্ব ইউরোপের একজন আশ্রয়প্রার্থীছবি: picture-alliance/dpa

জাতিসংঘের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত বছর, অর্থাৎ ২০১০ সালে ইউরোপ এবং অ্যামেরিকায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় চেয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আবেদন করেছিল৷ এ বছরের প্রথম ছয় মাসেই আবেদনপত্র জমা পড়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি৷ বিভিন্ন জরিপে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রায় দুই লক্ষ আবেদনপত্র হাতে পেয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলো৷

Subject: refugees in Tunisian-Libyan border:Abes and his familly in the refugees camps in Rass Jdir    Date: August 2011   Place:Rass Jdir   Photographer:Khedir Mabrouka  Die Bilder hat unser Korri in Tunesien Khedir Mabrouka gemacht. DW hat deshalb die Rechte. Zulieferer: Emad Ghanim
টিউনিশিয়া লিবিয়ার সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীরা অপেক্ষা করছে – এরা কোথায় যাবে?ছবি: DW

মধ্যপ্রাচ্যের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলেও আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে৷ মার্চ মাসে টিউনিশিয়া এবং লিবিয়া সঙ্কটের পর অনেকেই সেদেশগুলো থেকে নিরাপত্তার কারণে পাড়ি জমিয়েছে ইউরোপে৷ জাতিসংঘের শরণার্থী দপ্তরের কমিশনার এ্যান্টোনিও গুটেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে৷ তিনি জানান, ‘‘টিউনিশিয়ার সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই ৪০ হাজার মানুষ অপেক্ষা করছে দেশ ছাড়ার জন্য – যেভাবেই হোক৷ টিউনিশিয়া পড়েছে বিপাকে৷ তারাও এই সমস্যা সামাল দিতে পারছে না৷ প্রতিদিন প্রায় দশ হাজারেরও বেশি মিশরীয় আসছে সেদেশে৷ এদেরও জায়গা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে টিউনিশিয়া৷ আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, পুরো বিষয়টি এগিয়ে যাচ্ছে মানবিক সংকটের দিকে৷ এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে এসব মানুষকে সাহায্য করা সম্ভব হবে না৷ আমাদের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সাহায্য এবং পূর্ণ সহযোগিতা৷''

Seit einer Woche leben diese bosnischen Bürgerkriegsflüchtlinge mit ihren Kindern in Halle-Neustadt. Die Familie Biscanin (r) und Mehic gehören zu den 130 Flüchtlingen, die hier in Dreiraumwohnungen untergebracht wurden. Foto: Waltraud Grubitzsch Für: Projekt Destination Europe : Mangelnde Perspektiven und große Träume
১৯৯২ সালে এরা সবাই বসনিয়া ছেড়ে চলে এসেছে জার্মানিতেছবি: picture alliance/dpa

আফ্রিকা থেকে আশ্রয়প্রার্থী এসেছে কম

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে এই সতর্কবাণীর পরও আশ্রয়প্রার্থীরা হু হু করে আসছে৷ তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে যেভাবে আসবে আশঙ্কা করা হয়েছিল, ঠিক সেভাবে মানুষ আসছে না৷ মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও পশ্চিম আফ্রিকা থেকে মানুষ আশ্রয় চাইছে, তবে তাদের মধ্যে অনেকে আশেপাশের দেশগুলোতেও চলে যাচ্ছে৷ প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে ১৭ শতাংশ বেশি আশ্রয়প্রার্থীরা কোথা থেকে আসছে? জাতিসংঘের শরণার্থী এজেন্সির মুখপাত্র এ্যাড্রিয়ান এডওয়ার্ডস জানান, আরব দেশগুলোতে অভ্যুত্থান অথবা আফ্রিকার অন্যান্য দেশে সংকট – এগুলো মূল কারণ নয়৷ তাঁর কথায়, ‘‘আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে অনেক বেশি সে বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ তবে আমরা যেসব দেশগুলো থেকে আশা করেছিলাম, সেসব দেশ থেকে আবেদনকারীরা আসেনি৷ যে দেশগুলো আমাদের তালিকায় শীর্ষে ছিল, সে দেশগুলো থেকে আশ্রয়প্রার্থী এসেছে কম৷ উদাহরণস্বরূপ আইভরি কোস্টের সংকট অথবা সোমালিয়ায় সংকটের কথা বলা যেতে পারে৷ আমরা ধরে নিয়েছিলাম এরাই আসবে বেশি, অথচ তা হয়নি৷ সবচেয়ে বেশি আবেদনপত্র এসেছে আফগানিস্তান, ইরান, সার্বিয়া এবং কসোভো থেকে৷ এই দেশগুলোতে আমরা সংকট দেখেছি, মানুষ অন্যত্র চলে যাচ্ছে তাও জেনেছি৷ কিন্তু এর সঙ্গে আরব অভ্যুত্থান বা আফ্রিকার সমস্যা সম্পৃক্ত নয়৷''

আফগানিস্তান উদ্বেগের কারণ

নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে, আফগানিস্তান জাতিসংঘের জন্য উদ্বিগ্নের বেশ বড় একটি কারণ৷ দশ বছর আগে ন্যাটো বাহিনী দেশটিতে হামলা চালিয়েছিল৷ কিন্তু এখনো দেশটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ৷ যেসব মানুষ একসময় আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিল তারা ফিরে যেতে আগ্রহী নয়৷ এছাড়া হাজার মানুষ যে কোন মুহূর্তে আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে প্রস্তুত৷ এ্যাড্রিয়ান এডওয়ার্ডস আরো বলেন, ‘‘আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খুবই জটিল এবং চিন্তিত হবার মত বিষয়৷ নিরাপত্তার কারণেই আফগানরা সেখানে থাকতে চাইছে না৷ গত এক দশকে আমরা দেখেছি কয়েক লক্ষ মানুষ আশেপাশের দেশ থেকে আফগানিস্তানে ফিরে গেছে৷ কিন্তু গত দুই বছরে এদের সংখ্যা কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি৷ সেসব আফগান এখন নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইছে না তারা আসতে চাইছে ইউরোপে৷''

অর্থাৎ আফগানিস্তানের পর সার্বিয়া, কসোভো, চীন এবং ইরাক থেকে আবেদনকারীরা ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে ইউরোপের দিকে৷ তবে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি আবেদনপত্র হাতে পাচ্ছে তাদের মধ্যে অ্যামেরিকা রয়েছে শীর্ষে৷ এরপরই রয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন এবং ব্রিটেন৷ জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে এ বছরের শেষে আবেদনকারীদের সংখ্যা হয়তো সাড়ে চার লক্ষের কাছাকাছি হবে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন