ইউক্রেনে মিলল বেলারুশের সমাজকর্মীর মৃতদেহ
৪ আগস্ট ২০২১ভিতালি শিশোভ। ২৬ বছরের এই সমাজকর্মী কিয়েভে সকালবেলা দৌড়তে বেরিয়েছিলেন। তারপর আর ফেরেননি। তার বান্ধবী কিয়েভ পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে কিয়েভের একটি পার্ক থেকে ভিতালির দেহ উদ্ধার করে। তার দেহটি গাছে ঝুলছিল।
আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে মনে হলেও পুলিশ এবং ভিতালির সংগঠনের অনুমান এটি খুনের ঘটনা। ভিতালিকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবং এর পিছনে বেলারুশের প্রশাসনের মদত আছে। কারণ, কয়েকদিন ধরেই ভিতালি বলছিলেন, কেউ বা কারা তাকে অনুসরণ করছে। বেলারুশে ভিতালির বন্ধুরাও তাকে সাবধান করেছিলেন।
২০২০ সালে বেলারুশের নির্বাচন নিয়ে দেশের ভিতর বিপুল অশান্তি শুরু হয়। দেশের জনগণের একটি বড় অংশ এবং বিরোধী রাজনীতিকরা দাবি করেন, ভোটে বিপুল কারচুপি করে আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ক্ষমতায় এসেছেন। তাকে অপসরণ করতে বিপুল আন্দোলন শুরু হয়। পাল্টা চাপ তৈরি করে প্রশাসন। প্রতিবাদীদের দমন করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জেলে ঢোকানো হয় বহু বিক্ষোভকারীকে। বিরোধী নেত্রী দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। বহু সমাজকর্মী এবং আন্দোলনকারী পালিয়ে পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া এবং ইউক্রেনে আশ্রয় নেন। ভিতালি আশ্রয় নিয়েছিলেন ইউক্রেনে। সেখানে তিনি নতুন একটি সংগঠন তৈরি করেন। যার নাম বেলারুশিয়ান হাউস ইন ইউক্রেন। সংস্থাটির মূল কাজ ছিল দেশ থেকে পালাতে চাওয়া প্রতিবাদকারীদের ইউক্রেনে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া এবং আইনি সাহায্য দেওয়া। বিরোধীনেত্রীর সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভালো ছিল। বস্তুত, ভিতালির মৃত্যুসংবাদ শুনে তিনি টুইটও করেছেন।
ভিতালির বন্ধুরা আগেই তাকে সতর্ক করে বলেছিলেন, বেলারুশের প্রশাসন ভিতালিকে নজরবন্দি করেছে। গত কয়েকদিন ধরে ভিতালিও বলছিলেন, তিনি রাস্তায় বেরোলেই কেউ বা কারা তাকে ফলো করে।
স্বাভাবিক ভাবেই ভিতালির বন্ধুদের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। একটি বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, ভিতালির কাজ তারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। পাশাপাশি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত যাতে হয়, সে দিকে তারা লক্ষ্য রাখবেন। বেলারুশ প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)