ইউক্রেনে পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথাও ভেবেছিলাম: পুটিন
১৬ মার্চ ২০১৫গত ৫ মার্চ থেকে জনসমক্ষে আসেননি ভ্লাদিমির পুটিন৷ এ নিয়ে নানা গুজব ডালপালা মেলেছে৷ ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, শারীরিক অসুস্থতা – এ সবের কোনোটাকেই অবশ্য পুটিনের সাময়িক অন্তর্ধানের কারণ হিসেবে মানছে না ক্রেমলিন৷ সোমবার ক্রেমলিন জানায়, তিনি সুস্থ আছেন এবং কিরঘিজস্তানের প্রেসিডেন্ট আলমাজবেক আটামবিয়েভের সঙ্গে সেন্ট পিটার্সবার্গে বৈঠক করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷
রোববার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তিন ঘণ্টার একটি তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়৷ সেখানে পুটিন মূলত ইউক্রেন সংকট নিয়েই কথা বলেছেন৷ তিনি বলেছেন, ক্রাইমিয়া ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হলেও ঐতিহাসিকভাবে সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়ন, অর্থাৎ রাশিয়ারই অংশ ছিল৷ সেখানে এখন রুশ ভাষাভাষীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ তাদের রক্ষা করা রাশিয়ার দায়িত্ব৷ তাঁর মতে, ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময়টায় যে পরিস্থিতি হয়েছিল তা ছিল আশঙ্কাজনক৷ তখন ইউক্রেনে ইয়ানুকোভিচের বিরোধীরা তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল বলেও জানান রুশ প্রেসিডেন্ট, ‘‘আমরা জানতে পেরেছিলাম, শুধু আটক করা নয়, তাঁকে শারীরিকভাবে নিশ্চিহ্ন করারও পরিকল্পনা ছিল৷''
২০১৪ সালের ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার অংশ হয়ে যায় ক্রাইমিয়া৷ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এবং ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলো এর তীব্র নিন্দা জানায়৷ তবে পুটিন মনে করেন ক্রাইমিয়া প্রসঙ্গে রাশিয়া যা করেছে ঠিকই করেছে৷ তথ্যচিত্রে ভ্লাদিমির পুটিন ক্রাইমিয়া-সংকট চলার সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমি তাঁদের (বিশ্বনেতাদের) বলেছি, ঐ অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে আমাদের এবং রাশিয়ার মানুষ সেখানে বসবাস করে, তাঁরা এখন বিপদে আছে৷ আমি তাঁদের পরিত্যাগ করতে পারি না৷ আমার অবস্থানটা খুব স্পষ্ট ছিল৷ আমার মনে হয় সে কারণেই কেউ বিশ্বযুদ্ধের দিকে যায়নি৷''
ক্রাইমিয়া নিয়ে রাশিয়ার জয় হয়েছে বলেই মনে করেন ভ্লাদিমির পুটিন৷ জয়ের কারণও তাঁর জানা, তাই তথ্যচিত্রে এ কথাও বলেছেন, ‘‘আপনার যদি এই আত্মবিশ্বাস থাকে যে আপনি ঠিক কাজ করছেন, দেশের কল্যাণের জন্য এবং রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষার জন্যই তা করছেন, তাহলে সব কিছু ঠিকঠাক মতো হবেই৷''
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬ হাজার মানুষ মারা গেছে৷ মিনস্কে সাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি বলবৎ থাকলেও ইউক্রেন সরকারের নিরাপত্তা এবং অখণ্ডতা নিয়ে আশঙ্কা কাটছে না৷ তাই জার্মানির ‘বিল্ড' পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো বলেছেন, জার্মান চ্যান্সেলরের কাছ থেকে তিনি হাল্কা অস্ত্র চাইবেন৷ বার্লিনে পোরোশেঙ্কো বলেন, যুদ্ধবিরতি সাক্ষরিত হলেও রুশ বিদ্রোহীরা অন্তত এক হাজারবার যুদ্ধবিরতির শর্ত লংঘন করে আক্রমণ চালিয়েছে৷ গত কয়েকদিনে সংঘাতময় এলাকায় অন্তত ৬৮ জন ইউক্রনীয় সৈন্য নিহত এবং ৩৮০ জন আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)