1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজসুইজারল্যান্ড

ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতে নারাজ সুইজারল্যান্ড

২৭ এপ্রিল ২০২২

সুইজারল্যান্ডের তৈরি অস্ত্র কিনেও ইউক্রেনে পাঠাতে পারছে না জার্মানি৷ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুইজারল্যান্ডের নিরপেক্ষ এবং যু্দ্ধাস্ত্র সংক্রান্ত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার সাংবিধানিক দায়৷

https://p.dw.com/p/4AVmf
Schweiz | Ukraine Krieg | Proteste in Bern
ছবি: Peter Klaunzer/KEYSTONE/dpa/picture alliance

সুইজারল্যান্ড থেকে কেনা যুদ্ধ-সামগ্রী ইউক্রেনে পাঠাতে চায় জার্মানি৷ কিন্তু আমদানির চুক্তি অনুযায়ী অন্য দেশে পাঠানোর আগে সুইজারল্যান্ডের অনুমতি নিতে হবে৷সেই অনুমতিই পাচ্ছে না জার্মান সেনাবাহিনী৷ দু-দুবার অনুমতি চাওয়া হয়েছে৷ দুবারই তাতে অসম্মতি জানিয়েছে সুইজারল্যান্ডের অস্ত্র রপ্তানি বিষয়ক সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ স্টেট সেক্রেটারিয়েট ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (এসইসিও বা সেকো)৷ সেকোর মিডিয়া মুখপাত্র মিশায়েল ভ্যুথরিশ ডয়চে ভেলেকে জানান, নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখার স্বার্থে এবং দেশের যুদ্ধ সামগ্রী সংক্রান্ত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার দায়বদ্ধতার কারণে সুইজারল্যান্ডের পক্ষে অনুমতি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷

যে দেশে পাঠানো হবে সেই দেশ যাতে অস্ত্রগুলো আবার অন্য কোনো দেশে না পাঠায়- তা নিশ্চিত করতে গ্রহীতা দেশের কাছ থেকে আগাম নন-রিএক্সপোর্ট ডিক্লারেশন, অর্থাৎ প্রাপ্ত অস্ত্র অন্য দেশে রপ্তানি না করার অঙ্গীকারনামা নেয় সুইজারল্যান্ড৷ এমন অঙ্গীকারনামা না পেলে তারা অস্ত্র রপ্তানি করে না৷ এই আইনটি আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত৷

মিশায়েল ভ্যুথরিচও সেই আইনের আলোকেই জার্মানির অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করলেন৷ তার মতে, ইউক্রেন এখন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত, তাই সুইজারল্যান্ডের তৈরি করা অস্ত্র আগে সরবরাহ করা হলেও পুনঃরপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে জার্মান সেনাবাহিনীকে সেই অস্ত্র সুইজারল্যান্ডে পাঠানোর অনুমতি দেয়া আইন অনুযায়ী অসম্ভব৷

তবে সুইস সরকারের এ অবস্থান ইউরোপের অন্যান্য দেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ দেশেও সরকারের এই নীতিকে সবাই সমর্থন জানাচ্ছে না৷ মধ্য-ডানপন্থি দল সেন্টার পার্টির প্রেসিডেন্ট গেরহার্ড প্ফিস্টার মনে করেন, সরকারের উচিত সংবিধানের ১৮৪.৩ ধারা অনুসরণ করে পুনঃরপ্তানিবিরোধী বিধানকে পাশ কাটিয়ে জার্মানিকে অনুমতি দিয়ে দেয়া৷ তিনি মনে করেন, এর ফলে ইউরোপের একটি গণতান্ত্রিক দেশকে সহায়তা করা হবে এবং তাতে সুইজারল্যান্ডের ‘বৃহত্তর স্বার্থ' রক্ষা করা হবে৷

Schweiz, Sanktionen, Made
ছবি: DW

বিশেষজ্ঞদের এক অংশ আবার ইয়েমেন যুদ্ধে হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য সৌদি আরবকে অস্ত্র সরবরাহের প্রসঙ্গ টেনে সুইজারল্যান্ডের সমালোচনা করছেন৷ তাদের মতে, সৌদি আরবকে অস্ত্র দিলেও ইউক্রেনের বেলায় নিরপেক্ষ থাকা এক ধরনের স্ববিরোধিতা৷

তবে জেনেভা সেন্টার ফর সিকিউরিটি পলিসির গ্লোবাল অ্যান্ড ইমার্জিং রিস্কস-এর প্রধান জঁ-মার্ক রিকলি বলেন, ‘‘দুটি স্বতন্ত্র দেশের মধ্যে যুদ্ধের ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডের এই নিরপেক্ষতার বিষয়টি প্রযোজ্য৷ কিন্ত ইয়েমেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়, কারণ, সেখানে যুদ্ধের উৎপত্তিটা অভ্যন্তরীণ৷ ইয়েমেন সরকার সহায়তা চাওয়ার কারণেই সৌদি আরব হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে৷''

পরিবর্তনের হাওয়ায় নতুন বাস্তবতা

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপে পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে৷ জার্মানিসহ ইইউভুক্ত বেশ কিছু দেশ সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে৷ সুইজারল্যান্ডের ওপর বাড়ছে আরো ন্যাটো-ঘনিষ্ঠ হওয়ার চাপ৷

জঁ-মার্ক রিকলি মনে করেন, সার্বিক পরিস্থিতি অদূর ভবিষ্যতে সুইজারল্যান্ডকে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরতে বাধ্য করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না৷ এমনিতে সুইজারল্যান্ড এবং অস্ট্রিয়ার ন্যাটোর সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল৷ দুটি দেশকেই ঘিরে রেখেছে ন্যাটোভুক্ত দেশ৷তাই ভবিষ্যতে ইউরোপে ভূ-রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তার কারণেও সুইজারল্যান্ডের অবস্থান বদলাতে পারে৷

রব মুজে/ এসিবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য