1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য জার্মানিতে চাপ

৩০ জানুয়ারি ২০২৪

ইউক্রেনকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার টাউরুস ক্রুজ মিসাইল সরবরাহের জন্য জার্মান চ্যান্সেলর শলৎসের উপর চাপ বাড়ছে৷ বিরোধী ও সরকার পক্ষের একাধিক নেতা প্রকাশ্যে এমন আহ্বান জানাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/4bpC4
প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুর উপর প্রায় নিখুঁতভাবে আঘাত করার ক্ষমতা রাখে টাউরুস ক্রুজ মিসাইল৷
ইউক্রেনকে টাউরুস ক্রুজ মিসাইল সরবরাহের জন্য জার্মান চ্যান্সেলরকে চাপ দেয়া হচ্ছে (ফাইল ফটো)ছবি: Jung Yeon-Je/AFP/Getty Images

প্রায় দুই বছর আগে ইউক্রেনের উপর রাশিয়া শুরু হওয়ার সময় জার্মানি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য শুধু হেলমেট সরবরাহের কথা ভেবেছিল৷ তারপর থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে দ্বিধার ঐতিহ্য ঝেড়ে ফেলে জার্মানি সে দেশকে একের পর এক উন্নত অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়ে গেছে৷ প্রায় প্রতিবারই প্রাথমিক সংশয় কাটিয়ে জার্মানি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ কিন্তু টাউরুস নামের ক্রুজ মিসাইল সরবরাহের প্রশ্নে এখনো আপত্তি করে চলেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ উল্লেখ্য, প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুর উপর প্রায় নিখুঁতভাবে আঘাত করার ক্ষমতা রাখে এই মিসাইল৷ শুধু বিরোধী পক্ষ নয়, সরকারি জোটের শরিকরাও মতবদলের জন্য তাঁর উপর চাপ বাড়াচ্ছেন৷

ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে জার্মানি এতকাল শুধু ‘রক্ষণাত্মক' অস্ত্র পাঠিয়ে এসেছে৷ অর্থাৎ, নিজস্ব ভূখণ্ডে রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে যা প্রয়োজন, মূলত সেটুকুই দিতে প্রস্তুত জার্মানি৷ রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলার ক্ষেত্রে জার্মান অস্ত্র ব্যবহারের প্রশ্নে এতকাল সরকার আপত্তি জানিয়ে এসেছে৷ প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে ইউক্রেন বার বার রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালানোয় সেই সংশয় আরো বেড়ে গেছে৷ কিন্তু রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকার ও সে দেশের পরাজয় এড়াতে আরো সামরিক সহায়তার প্রতিও সমর্থন বাড়ছে৷

জার্মানির তিন দলের জোট সরকারের দুই শরিক উদারপন্থি এফডিপি ও সবুজ দলের কিছু নেতা প্রকাশ্যেই ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর পক্ষে সওয়াল করছেন৷ সবুজ দলের নেত্রী ও সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাটরিন গ্যোরিং-একার্ট এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, ইউক্রেনের সব চাহিদা পূরণ করার প্রতিশ্রুতি পালন করতে অবিলম্বে এই মিসাইল পাঠানো উচিত৷ এফডিপি দলের সংসদীয় নেতা ক্রিস্টিয়ান ড্যোরও সেই সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ রোববার জার্মানির এআরডি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সেই মিসাইল সরবরাহে জার্মান সরকারের অনীহা সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করেন৷

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন শুধু ইউক্রেনে জমি দখল করে থামবেন না বলে জার্মানির অনেক নেতা মনে করছেন৷ দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে ইউরোপের সার্বিক প্রতিরক্ষার স্বার্থে তাই ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করতে চান তাঁরা৷ বিশেষ করে বাল্টিক এলাকার তিন সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য এস্টোনিয়া, লাটভিয়াা ও লিথুয়েনিয়া আক্রান্ত হলে জার্মানিও নিরাপদ থাকবে না, এমন উপলব্ধির ভিত্তিতে ইউক্রেনের জন্য যাবতীয় মদতের পক্ষে সওয়াল করছেন সরকার ও বিরোধী পক্ষের একাধিক নেতা৷ অন্যদিকে চ্যান্সেলর শলৎস অতি সতর্কতার সঙ্গে প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখার নীতি অনুসরণ করছেন৷ বিশেষ করে ন্যাটোর বাকি জোটসঙ্গীদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি যৌথ পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে৷ অর্থাৎ জার্মানির ‘একলা চলো রে' নীতির ঘোর বিরোধিতা করে আসছেন শলৎস৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমেও ইউক্রেনের জন্য পরোক্ষভাবে অস্ত্রের ব্যবস্থা করছেন তিনি৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)