‘ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার তৎপরতা বাড়ছে'
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য কমানোর বদলে বরং আরও বাড়াচ্ছে রাশিয়া – পশ্চিমা বিশ্ব মস্কোর বিরুদ্ধে এমন মারাত্মক অভিযোগ করছে৷ এমন ‘লোক দেখানো' পদক্ষেপের আড়ালে রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিন আসলে ইউক্রেন আক্রমণের প্রস্তুতি আরও জোরালো করছেন৷ অর্থাৎ সে দেশ ‘সামরিক মহড়া'-র শেষে সেনা প্রত্যাহারের যে ঘোষণা করেছে, বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে তা মোটেই খাপ খাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে৷ উল্লেখ্য, আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার সামরিক ইউনিটগুলি নিজেদের স্বাভাবিক ঘাঁটিতে ফিরে যাবে৷
একাধিক দেশ রাশিয়ার বাড়তি তৎপরতার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছে বলে দাবি করছে৷ ব্রিটেনের এক গোয়েন্দা ইউনিটের সূত্র অনুযায়ী আরও সাঁজোয়া গাড়ি, হেলিকপ্টার ও একটা গোটা অস্থায়ী হাসপাতাল স্থানান্তর করতে দেখা গেছে৷ মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়া গত কয়েক দিনে বাড়তি সাত হাজার সৈন্য ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করেছে৷ তবে তিনি এমন দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেন নি৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, রাশিয়ার কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই৷ এস্টোনিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র অনুযায়ী ইউক্রেন সীমান্তে ইতোমধ্যে আনুমানিক এক লাখ ৭০ হাজার রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে৷ আরও দশটি সামরিক ইউনিট সেখানে আনা হচ্ছে৷ সে দেশের এই সংস্থার প্রধান মিক মারান মনে করছেন, ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বোমা বর্ষণ করে রাশিয়া ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ মোটকথা রাশিয়া কোনো ভূমিকা ছাড়াই আচমকা হামলা শুরু করতে পারে বলে পশ্চিমা বিশ্ব আশঙ্কা করছে৷
এমন হুমকির মুখে সামরিক জোট ন্যাটোও তৎপরতা বাড়াচ্ছে৷ বুলগেরিয়া, রুমেনিয়া, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় নতুন সামরিক ইউনিট মোতায়েনের পরিকল্পনা চলছে৷ পোল্যান্ড ও বাল্টিক সাগরের দেশগুলিতে আগেই এমন ‘কমব্যাট ইউনিট' পাঠানো হয়েছে৷ সংঘাত শুরু হলে এমন ইউনিটের সৈন্যরা দ্রুত প্রতিরোধ চালাতে পারবে এবং বাড়তি সৈন্য পাঠানোর জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে৷ জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট বলেন, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে পূর্ব সীমান্তে ন্যাটো আরও সক্রিয় হবার কথা ভাবনাচিন্তা করছে৷ তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না৷ ইউক্রেনও রাশিয়ার সহযোগী দেশ বেলারুশ সীমান্তে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আরও সৈন্য মোতায়েন করছে৷ গোটা দেশে সামরিক মহড়া চলছে৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বুধবার টেলিফোনে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন৷ উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাবার পাশাপাশি তারা অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে সমন্বয় চালিয়ে যাবার গুরুত্ব তুলে ধরেন৷ দুজনেই মনে করেন, যে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার ঝুঁকি এখনো দূর হয় নি৷ শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে এলে সে বিষয়ে আরও আলোচনা হবার কথা৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)