ইউক্রেন যুদ্ধে এখনো সাফল্যের আশা পুটিনের
২২ ডিসেম্বর ২০২২প্রায় দশ মাস ধরে হামলা চালিয়েও রাশিয়া ইউক্রেনের সামান্য অংশের উপর কবজা করতে পেরেছে৷ যুদ্ধে আনুমানিক প্রায় এক লাখ রুশ সৈন্য নিহত বা আহত হয়েছে৷ পশ্চিমা বিশ্বের মদতে ইউক্রেন প্রবল সাহস দেখিয়ে রাশিয়ার মোকাবিলা করে চলেছে৷ নাগরিক অবকাঠামোর উপর ক্রমাগত হামলা সত্ত্বেও সে দেশের সরকার ও মানুষের মনোবল ভাঙা যাচ্ছে না৷ এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও অন্তত প্রকাশ্যে অবিচল অবস্থান দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছে রুশ নেতৃত্ব৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ও বাড়তি প্রত্যাশা সত্ত্বেও রাশিয়া হাল ছাড়তে প্রস্তুত নয়৷ তবে ইউক্রেনে আরও মার্কিন অস্ত্র সরবরাহের ফলে যুদ্ধ আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে বলে মস্কো সতর্ক করে দিয়েছে৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন বুধবার বলেছেন, যে যুদ্ধক্ষেত্রে কিছু ব্যর্থতা সত্ত্বেও রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ের পথেই এগোচ্ছে৷ ধাপে ধাপে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি নিশ্চিত৷ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন৷ টেলিভিশনেও সেই ভাষণ প্রচার করা হয়েছে৷ পুটিনের মতে, এই যুদ্ধ রাশিয়ার সেনাবাহিনী আরও মজবুত করার পথে মূল্যবান অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত৷ তিনি সেনাবাহিনীর জন্য আরও অস্ত্র এবং আধুনিকীকরণের ডাক দেন৷ বিশেষ করে ড্রোনের ব্যবহার বাড়াতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি৷ সেই লক্ষ্যে অর্থ কোনো অন্তরায় হতে পারে না, বলেন পুটিন৷ তিনি জানান, রুশ সেনাবাহিনী শীঘ্রই সারমাত ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল হাতে পাবে, যেটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা রাখে৷
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু নর্ডিক দেশগুলিতেও ন্যাটোর সম্প্রসারণের মোকাবিলা করতে রুশ সেনাবাহিনীর সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছেন৷ সৈন্যসংখ্যা আরও সাড়ে তিন লাখ বাড়িয়ে ১৫ লাখের মাত্রা ছুঁতে চান তিনি৷ সেইসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় সাত লাখে আনার লক্ষ্য স্থির করেছেন শোইগু৷ বিশেষ করে রাশিয়ার উত্তর পশ্চিম প্রান্তে আরও সৈন্য মোতায়েন করতে চান তিনি৷ ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগদান করলে সেই অঞ্চলের সুরক্ষা আরও মজবুত করার উপর জোর দিচ্ছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী৷ পুটিনও শোইগুর প্রস্তাবগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷
পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনীতির বেহাল অবস্থা সত্ত্বেও রাশিয়া কীভাবে সামরিক শক্তি বাড়ানোর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কার্যকর করবে, তা স্পষ্ট নয়৷ আপাতত ইউক্রেনের পূর্বে বাখমুত শহরের কিছু অংশে রাশিয়ার সৈন্য প্রবেশ করায় মস্কো কিছুটা সাফল্যের স্বাদ পাচ্ছে৷ ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অবশ্য জোরালো প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে৷ সে দেশের সামরিক নেত্বত্ব জানিয়েছে, যে খাকোভা শহরের কাছে এক বিমানক্ষেত্রে রাশিয়ার হামলা চালানোর এক বড় অবস্থান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি)