ইইউর পরিধি বাড়ানোর ধীর ও কঠিন পথ
২ অক্টোবর ২০২৩কদিন আগে তারা প্রস্তাব পেশ করেছেন৷ এই দলের একজন বার্লিনের জ্যাক দেলোর সেন্টারের সিনিয়র পলিসি ফেলো থু নুয়েন৷ তার মতে, একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২৭ সদস্যের জোট ইইউ বর্তমানে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, জোট বড় করার পথে রাজনৈতিকভাবে সেটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের হতে পারে৷
ইইউর সদস্য হতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করা দেশগুলো হচ্ছে ইউক্রেন, মলদোভা, আলবেনিয়া, মন্টেনিগ্রো, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, নর্থ মেসিডোনিয়া, সার্বিয়া ও তুরস্ক৷ জর্জিয়া ও কসোভোকে ‘সম্ভাব্য প্রার্থী' বিবেচনা করা হচ্ছে৷
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইইউর সব সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন৷ এক্ষেত্রে আলোচনা কয়েক মাস পর্যন্ত গড়াতে পারে৷ কেননা, কোন পণ্য এবং কাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে সব সদস্যকে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে৷
অভিবাসন ও আশ্রয়ের শর্তাবলী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ‘বেশিরভাগ' ইইউ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন৷ সংখ্যার হিসেবে, অন্তত ১৫ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়৷
ইইউতে বর্তমানে যে ব্যবস্থা চালু আছে সেটা অনুযায়ী, চার কোটির বেশি মানুষের দেশ ইউক্রেন সদস্যপদ পেলে ইইউর অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে৷
‘‘সদস্য যত বেশি হবে, ভেটো প্রয়োগের কারণে সিদ্ধান্ত আটকে যাওয়ার ঝুঁকি তত তৈরি হবে,'' বলে ডয়চে ভেলেকে জানান থু নুয়েন৷ তাই তিনি ও তার সহ-বিশেষজ্ঞরা ইইউর সিদ্ধান্তগ্রহণ সহজ করতে ‘সর্বসম্মতি'র নিয়ম বাতিল এবং ‘বেশিরভাগ' বিষয়টি কীভাবে গণনা করা হবে, সেই পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন৷
কিন্তু এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করতে চাইলে ইইউ প্রতিষ্ঠার আইনে পরিবর্তন আনতে হবে এবং সেটি করতে, আইন পরিবর্তনের কারণে যে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতা কমবে, তাদেরও সমর্থন প্রয়োজন হবে৷
এদিকে, ইইউর সদস্য হতে যারা আবেদন করেছে তাদের বেশিরভাগেরই জিডিপি, বর্তমানে ইইউর সবচেয়ে দরিদ্র সদস্যরাষ্ট্র বুলগেরিয়ার চেয়ে কম৷ আর বর্তমানে ইইউর বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ খরচ হয় কৃষিখাতে ভর্তুকিতে৷ তাই ইউক্রেনের মতো কৃষিখাতের বড় এক শক্তি ইইউর সদস্য হলে ভবিষ্যতে বর্তমান সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রাপ্ত বরাদ্দে পরিবর্তন আসবে৷
ইইউর সাবেক ট্রেড কমিশনার ফিল গোগান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ইউক্রেন একটি বড় দেশ, যার কৃষিখাতে বড় স্বার্থ আছে৷ তাই ইউক্রেন সদস্য হলে প্রাতিষ্ঠানিক ও বাজেট বরাদ্দে বড় পরিবর্তন আসবে৷ এরপরও তিনি ইইউর পরিধি বৃদ্ধির পক্ষে৷ ‘‘কারণ, তা না হলে, ঐ দেশগুলো এমন কোনো পক্ষে চলে যেতে পারে যাকে আমরা হয়ত পছন্দ করি না,'' বলেন তিনি৷ এই মন্তব্যের মাধ্যমে হোগান ঐ দেশগুলোর উপর রাশিয়ার সম্ভাব্য প্রভাবের কথা বলতে চেয়েছেন৷
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শার্ল মিশেল সম্প্রতি বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ তার পরিধি বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত হতে পারে৷
রোজি বিরশার্ড/জেডএইচ