ইইউ বাজেট আলোচনা ব্যর্থ
২৪ নভেম্বর ২০১২২৭টি দেশের জোট ইইউ'তে একটি অদৃশ্য বিভাজনরেখা হল এই বাজেট, কেননা কিছু দেশ ইইউ'র তহবিলে যে পরিমাণ অনুদান দেয়, সে তুলনায় ভরতুকি পায় না, যেমন ব্রিটেন অথবা জার্মানি৷ আর কিছু দেশ, যেমন পোল্যান্ড, ইইউ'র কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ভরতুকি পেয়ে থাকে৷ কিন্তু ইইউ'তে আর্থিক সংকট এবং ঋণ সংকট দেখা দেবার পর নেট দাতা দেশগুলি সতর্ক হয়ে গেছে৷ অপরদিকে ইইউ'র সামগ্রিক বাজেট এক ট্রিলিয়ন ইউরোর মাত্রা ছাড়িয়েছে৷
ক্যামেরন বলছেন, যেখানে তিনি তাঁর স্বদেশবাসীদের কৃচ্ছ্রসাধনের উপদেশ দিচ্ছেন, সেখানে তাঁর পক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজেটবৃদ্ধিতে সম্মত হওয়াটা সম্ভব নয়৷ অপরদিকে ক্যামেরন ভালো করেই জানেন, বাজেটে একমাত্র দেশ হিসেবে ভেটো প্রয়োগ করলে, ব্রিটেন ইউরোপীয় জোটে এবং সেই জোট থেকে আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে৷ দৃশ্যত, অতোবড়ো একটা পদক্ষেপের জন্য ব্রিটেনও আপাতত তৈরী নয়৷ ব্রিটেনের বাণিজ্যের একটা বড় অংশ আবার এই ইইউ দেশগুলির সঙ্গেই৷
ক্যামেরন কিন্তু জানেন এবং এবারও আলাপ-আলোচনা শেষ হবার পর বলেছেন, ইইউ'র ট্যাঁকশাল থেকে নগদ নেওয়া-দেওয়ার ব্যাপারে ব্রিটেন একা নয়৷ জার্মানি, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড এবং ডেনমার্কও ইইউ'র বাজেটের উপর আরো কড়া নিয়ন্ত্রণের সপক্ষে৷ বিশেষ করে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল যে আলাপ-আলোচনায় ক্যামেরনের পক্ষ নেন, সেটা ব্রিটিশ মিডিয়া এবং জনগণের দৃষ্টিকোণ থেকে একটা বড় কূটনৈতিক জয়৷ ইইউ'র কূটনীতিকরাও স্বীকার করেছেন যে, ক্যামেরন তাঁর হাতের তাসগুলো ভালোভাবেই খেলেছেন, যার ফলে তাঁকে শেষমেষ খলনায়কের ভূমিকা নিতে হয়নি৷ ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখেছে, অন্যান্য ইইউ দেশের মধ্যে বিভেদ ক্যামেরনকে সাহায্য করেছে৷
এখন কিন্তু সেই অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের ব্রাসেলসের ব্যর্থতাকে কৌশলগত পশ্চাদপসারণ ইত্যাদি বলে মুখরোচক করে তুলতে হবে, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল যেমন ইতিমধ্যেই করেছেন৷ ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া ওলঁদও বলেছেন, তিনি ‘‘ব্যর্থতা'' কথাটাকে মুখে নিতে চান না, কেননা ওটা সত্যি নয়৷ আর স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয় বলেছেন, আলাপ-আলোচনাটা হল একটা আর্ট৷
ব্রাসেলসে এখন সেই আর্টের প্রদর্শনী চলবে৷
এসি / এএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)