সিরিয়ায় ‘খতমের শাসন’
২৭ মে ২০১২খতমের অনুশাসন
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রশাসন কী এভাবেই নির্বিচারে হত্যার শাসন চালিয়ে যাবেন আর গোটা দুনিয়া চুপ করে মুখ বুঁজে থাকবে? এ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ২৬ মে, ২০১২ তারিখের পর৷ হাওলা শহরে নৃশংস বর্বরতা চালিয়েছে আসাদের সেনাবাহিনী৷ ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদেরকেও তারা রেয়াৎ করেনি৷ অবিরাম গোলাবর্ষণ করে মোট ৯০ জনকে হত্যা করেছে তারা৷ মিডিয়া মারফৎ গোটা বিশ্বে সে খবর ছড়িয়ে পড়ের পর স্বভাবতই তার প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে সর্বত্র৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, আসাদের এই ‘হত্যার শাসন' বন্ধ করার সময় এসে গিয়েছে৷ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বলছেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই সপ্তাহেই একটি জরুরি বৈঠক ডেকে সেখানেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ সেই বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করেছে জাতিসংঘ৷ তীব্র প্রতিবাদে মুখর আরব দুনিয়ার আরব লিগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি সহ বিশ্বের প্রতিটি দেশ এবং অঞ্চল৷
কীভাবে এই গণহত্যা?
হাওলা শহরটি হোমস এলাকার মধ্যেই পড়ে৷ বিদ্রোহীদের ছত্রভঙ্গ করতে যে হোমস এলাকায় বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করে চলেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে জানা যাচ্ছে, শুক্রবার হাওলা শহরে একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল৷ সেই মিছিলের পরেই শুরু হয় হাওলা শহরে গোলাবর্ষণ৷ কিছু মানুষ গোলায় নিহত হয়৷ তারপরে সেখানে নামে আসাদের কুখ্যাত ‘শাবিহা' মিলিশিয়া বাহিনী৷ সব মিলিয়ে ভয়ংকর মৃত্যুর তান্ডব চলে শহর জুড়ে৷
সিরিয়ায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা থাকা স্বত্ত্বেও এই ঘটনা
কিছুতেই আসলে এখন কিছু যায় আসেনা আসাদ প্রশাসনের৷ জাতিসংঘের তরফে পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি৷ এবং যথারীতি আসাদ প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, সেনাবাহিনী নয়, এই হত্যাকান্ড চালিয়েছে সশস্ত্র জঙ্গিবাহিনী৷ উল্লেখ্যে, এ পর্যন্ত সিরিয়ায় সহিংসতার প্রসঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে সবসময়েই আড়াল করে চলেছে আসাদ প্রশাসন৷ এবারেও সেই একই ছবি৷ তবে আন্তর্জাতিক চাপ যেভাবে বাড়ছে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়, তাতে এই সপ্তাহের মধ্যে নতুন কোন দিকনির্দেশ মিলতেই পারে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় (ডিপিএ, এপি, এএফপি)
সম্পাদনা: জাহিদুল হক