সিরিয়ার সংকট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযান
বিরোধীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হোমস শহরে মঙ্গলবারও সেনাবাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবি করছে বিরোধীরা৷ গত কয়েক দিনের মধ্যে আজই শহরের উপর সবচেয়ে বেশি গোলাবর্ষণ করেছে সেনাবাহিনী৷ লাগাতার অবরোধ ও হামলার ফলে শহরের অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে৷ আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে খাদ্য, পানীয় সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ শহরের বাবা আম্র এলাকায় প্রায় এক লক্ষ নিরীহ মানুষ কার্যত বন্দি হয়ে রয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে৷ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনর নাভি পিল্লাই সোমবারই হোমস সহ সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন৷
চাপের মুখে চীন
সিরিয়ার উপর আন্তর্জাতিক চাপের পথে সবচেয়ে বড় বাধা রাশিয়া ও চীন৷ কিন্তু সিরিয়ার প্রশ্নে আরব লিগের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এই দুই দেশকে কিছুটা সমস্যায় ফেলেছে৷ আরব লিগের কিছু সদস্য দেশ এমনকি সরাসরি বিরোধীদের অস্ত্র সরবরাহ করার কথাও ভাবছে৷ সেক্ষেত্রে গৃহযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী এবং সেই সংঘাত গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ রাশিয়া ও চীন সাধারণত সিরিয়ার মতো দেশের সংকটকে তাদের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়' হিসেবে তুলে ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার পক্ষে৷ তবে আরব লিগ জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিরিয়ায় শান্তি বাহিনী পাঠানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তার বিরোধিতা করা এই দুই দেশের পক্ষে সহজ হবে না৷ মঙ্গলবার বেইজিং'এ ইইউ-চীন শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও বলেছেন, তাঁর দেশ বাশার আল আসাদের সরকারকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে না৷ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, চীন কোনো রকম পক্ষপাতিত্বের বিরোধী৷ সিরিয়ায় যুদ্ধ ও অরাজকতা প্রতিরোধ করাই চীনের প্রধান উদ্দেশ্য৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোগ
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল নীতিগতভাবে সিরিয়ায় জাতিসংঘ ও আরব লিগের যৌথ শান্তি বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাবের পক্ষে৷ বার্লিনে আরব লিগ'এর প্রধান নাবিল আল আরাবি'র সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্ভবত সিরিয়ার উপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপাতে চলেছে, যদিও তিনি এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানান নি৷ ফ্রান্সও এই প্রস্তাব লুফে নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক