আসল ‘রোমান হলিডে’ যেমন ছিল
পর্যটন কোনো নতুন কিছু নয়৷ হাজার হাজার বছর ধরে পর্যটনের ইতিহাসের কিছু গল্প জানুন ছবিঘরে...
রোম থেকে পালিয়ে
গ্রীষ্মকালের গরম রোমান রাজাদের সময়েও ছিল বেশ কড়া৷ তাই সেই সময় রাজা আন্তোনিয়াস রোম ছেড়ে পাড়ি দিতেন নেপলসের উদ্দেশ্যে, যেখানে তুলনামূলকভাবে কম গরম পড়তো৷ অতিথিরা আসতেন রাজাকে ছুটির মেজাজে পেতে৷ পাশের স্পা শহর বায়ায়েতে যেতেন সবাই মিলে৷ এই স্পাতে যাবার চল এখনও রোমের বিত্তশালীদের মধ্যে প্রচলিত৷
সবার প্রিয় নেপলস
নেপলস উপসাগর রোমান রাজাদের পছন্দের পর্যটনস্থল ছিল৷ যাদের পকেট ভারী, তারা থাকতেন সাগরের তীরে বা পাহাড়ের কাছে, বড় ভিলায়৷ সন্ধে নামলে সাগরে প্রমোদতরীতে ঘোরাফেরা, রাত বাড়লে মাছ বা ঝিনুকের নানা পদ দিয়ে খাওয়া৷ কবি হরেসও তাই বলেছেন যে বিশ্বের আর কোনো উপসাগর হয়তো এত সুন্দর নয়৷
মধ্যবিত্তের পর্যটন
সেই সময়কার মধ্যবিত্ত রোমানরা ছুটি কাটাতেন উপসাগরেরই অন্যদিকে৷ টিবুর ও আন্তিয়ুম ছিল তাদের পছন্দের জায়গা৷ সেই টিবুর ও আন্তিয়ুম আজকের দিনে পরিচিত টিভোলি ও আনজিও নামে৷ এছাড়া, বায়ায়েতেও যেতেন তারা, তবে সেই সময়ের বায়ায়ে এখন সাগরের তলায়৷
বায়ায়ে কেন এত বিখ্যাত?
চোখধাঁধানো রিসর্ট ছাড়াও, বায়ায়ে যুগ যুগ ধরেই বিখ্যাত ছিল তার উদযাপনের প্রাচুর্য্যের জন্য৷ রোমান চিন্তক সেনেকা বায়ায়ের পরিবেশ দেখে বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘‘কেন আমাকে মাতাল পর্যটক আর প্রমোদতরী থেকে ভেসে আসা উচ্চস্বরে গান শুনতে হবে এখানে?‘‘
রোমানদের পছন্দের চটি
ছুটির মেজাজে রোমানরা খুব শৌখিন জীবনযাপন করতেন৷ পায়ের চামড়া ভালো রাখার জন্য ও তাতে সুগন্ধ ছড়ানোর জন্য রোমান রাজারা কাঁচের চটি পড়তেন, যার ভেতরে ভরা থাকতো সুগন্ধী পানি৷
ছুটির লম্বা পথ
যেহেতু সেই সময় ইউরোপের সব জায়গাতেই প্রায় ল্যাটিন বলার চল ছিল, ফলে বেড়াতে গিয়ে ভাষার অসুবিধে হতো না৷ তাছাড়া, রোম সাম্রাজ্যের রাস্তাঘাটও ছিল উন্নত, রাস্তার কিনারে আজকের মতো এত বেশি না হলেও থাকতো পর্যাপ্ত খাবারের দোকান৷ রাস্তায় কখনো কখনো স্থানীয় ধনকুবেরদের বাসাতেও থাকতেন সম্রাটরা৷
সব চলবে, কিন্ত...
ভ্রমণ করতে কোনো বাধা নেই৷ রোমানরা বেড়াতে বেড়াতে মিশরেও ঘুরে এসেছেন৷ শুধু যাদেরকে রোমানরা ’বর্বর’ বলে জানতো, অর্থাৎ সেই সময় যারাই রোম বা গ্রিক সাম্রাজ্যের বাইরে, তাদের কাছাকাছি যেতে চাইতেন না তারা৷ গ্রিক লেখক পাওসানিয়াস এ বিষয় উল্লেখ করেন তার গ্রন্থে, যা বিশ্বের প্রথম ট্রাভেল গাইড হিসাবে পরিচিত৷
ছুটির কেনাকাটা
কোথাো বেড়াতে গেলে পরে স্মৃতিচারণের জন্য সবাই-ই কিছু না কিছু হাতে করে নিয়ে আসে৷ রোমানরাও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না৷ সম্রাট হ্যাড্রিয়ান তো নিজের বাসার ভেতরেই প্রিয় পর্যটনস্থল টিবুরের ক্ষুদ্র প্রতিকৃতি স্থাপণ করেন৷ সেই সময় শহরের প্রতিকৃতি ছাড়াও ছোট ভাস্কর্য, পিরামিড বা কোনো ভবনের ক্ষুদ্র সংস্করণ সাথে নিয়ে আসার চল ছিল৷