আসন্ন নির্বাচনে শুলৎস-ম্যার্কেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইউনিয়ন দলগুলি অবশেষে সোমবার তাদের ‘সম্প্রীতি বৈঠকে' নিজেদের অভ্যন্তরীণ কাজিয়া শিকেয় তুলে রেখে ম্যার্কেলকে যৌথ প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
বিশেষ করে ম্যার্কেলের উদ্বাস্তু নীতি নিয়ে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ও খ্রিষ্টীয় সামাজিক, এই দুই ‘সহোদরা' দলের মধ্যে বিবাদ না হলেও, বিভেদ শুরু হয়৷ সিএসইউ প্রধান হর্স্ট জেহোফার এখনও বলে চলেছেন যে, বছরে দু' লাখের বেশি উদ্বাস্তুকে জার্মানিতে ঢুকতে দেওয়া চলবে না এবং যেহেতু সিডিইউ প্রধান ম্যার্কেল তাঁর নিজের অবস্থান থেকে এক চুল নড়তে রাজি নন, সেহেতু সিএসইউ দল তাদের নিজস্ব নির্বাচনি কর্মসূচিতে এই ‘সর্বোচ্চ সীমার' ব্যবস্থা রাখবে৷ ওদিকে সিএসইউ দলের কর্মপরিধি বাভেরিয়ায় সীমিত হওয়ায় ম্যার্কেল অথবা সিডিইউ দলের তাতে আপত্তি না থাকারই কথা৷
সিডিইউ-সিএসইউ দলের সংসদীয় গোষ্ঠীর নেতা ফল্কার কাউডার এখন আগামী নির্বাচনি প্রচার অভিযানে উভয় দলের সংঘবদ্ধ আবির্ভাবের কথা বলছেন৷ অপরদিকে ম্যার্কেলকে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী ঘোষণায় একটু দেরি হয়ে গিয়ে থাকতে পারে৷ গত ২৪শে জানুয়ারি তৎকালীন এসপিডি প্রধান জিগমার গাব্রিয়েল মার্টিন শুলৎস-কে দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে পেশ করেন৷ মাস শেষ হবার আগেই দলের সভাপতিমণ্ডলী সেই সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে ঘোষণা করে৷ এর পরে যা ঘটেছে, তা বুঝতে হলে জরিপের দ্বারস্থ হতে হবে৷
এসপিডি সিডিইউ-সিএসইউ-কে ছাড়িয়ে!
এই অঘটন ঘটেছে গত সোমবার৷ জনপ্রিয় ‘বিল্ড' ট্যাবলয়েড পত্রিকার ফরমায়েশে ‘ইনসা' জনমত সমীক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের জরিপে দেখে যে, এসপিডি দলের সমর্থন আগের সপ্তাহের চেয়ে আরো চার শতাংশ বেড়ে মোট ৩১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে সিডিইউ-সিএসইউ দল আরো তিন শতাংশ হারিয়ে ৩০ শতাংশে নেমে গেছে৷
ইনসা জরিপে বামদলের সমর্থন এক শতাংশ বেড়ে ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে; সবুজরা দুই শতাংশ হারিয়ে মোট সাত শতাংশে নেমে গেছে; এএফডি ও এফডিপি যথাক্রমে ১২ শতাংশ ও ৬ শতাংশেই থেকে গেছে৷
‘এমনিড' সংস্থার প্রথাগত রবিবারের জরিপেও দেখা গেছে যে, এসিপিডি এবং সিডিইউ-সিএসইউ দলগুলির মধ্যে ব্যবধান এক সপ্তাহের মধ্যে ১৪ শতাংশ থেকে কমে চার শতাংশে দাঁড়িয়েছে: এসপিডি ২৯ বনাম সিডিইউ-সিএসইউ ৩৩ শতাংশ৷
ইউনিয়নের স্ট্র্যাটেজি
ইউনিয়ন দলগুলির সম্প্রীতি বৈঠকেই তাদের নির্বাচনি স্ট্র্যাটেজির একটা আভাস পাওয়া গিয়েছিল যখন, সরাসরি এসপিডি-কে প্রতিদ্বন্দ্বি না করে, এসপিডি, বামদল ও সবুজদলের মধ্যে জোটের সম্ভাবনা ও সেই সম্ভাবনাকে রোখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়৷
ইতিমধ্যে ইউনিয়ন দলের নেতৃস্থানীয় রাজনীতিকরা মার্টিন শুলৎসকে উপেক্ষা বা তুচ্ছ না করে, তাঁকে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন৷ সিডিইউ দলের সহসভাপতি ইউলিয়া ক্ল্যোকনার অভিযোগ করেছেন যে, শুলৎস জার্মানিতে অসাম্যের কথা বলে এএফডি-র হাত শক্ত করছেন৷ বামদলও এ থেকে লাভবান হচ্ছে, বলেন ক্ল্যোকনার৷
এসপিডি দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাল্ফ স্টেগেনার দেখছেন, আঙ্গেলা ম্যার্কেলের পিছনে ইউনিয়ন দলগুলির পূর্ণ সমর্থন নেই৷ মঙ্গলবার বিলেফেল্ডের ‘ভেস্টফালেন-ব্লাট' পত্রিকার সাক্ষাৎকারে স্টেগেনার ম্যার্কেলের উদ্বাস্তু নীতি সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘আঙ্গেলা ম্যার্কেলের অনেক অর্জন আছে, কিন্তু তাঁর ভবিষ্যতের জন্য কোনো নতুন ধারণা নেই৷ চার বছর ধরে তিনি কোনো অভিমত প্রকাশ করেননি; শেষমেশ যখন তাঁর সত্যিই একটা অভিমত হলো, তখন সিএসইউ দল আর সিডিইউ দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসে৷''
এসি/এসিবি (এএফপি,ডিপিএ)