বাংলাদেশের দিকে নজর আল কায়েদার
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের মুসলিম ভাইয়েরা, ইসলামের বিরুদ্ধে যারা ক্রুসেড ঘোষণা করেছে, তাদের প্রতিরোধ করার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি৷ উপমহাদেশ ও পশ্চিমের শীর্ষ ক্রিমিনালরা ইসলামের বিরুদ্ধে, ইসলামের নবীর বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র করছে, মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, যাতে আপনাদেরকে তারা অবিশ্বাসীদের দাসে পরিণত করতে পারে৷''
বাংলাদেশকে ‘বিরাট এক জেলখানা' উল্লেখ করে এই বার্তায় বলা হয়, ‘‘এই দেশে মুসলমানদের সম্মান আজ ভূলুন্ঠিত৷ বাংলাদেশ আজ এমন এক ষড়যন্ত্রের শিকার, যাতে ভারতীয় এজেন্ট, পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সেনা নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষমতালোভী, বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিবিদরাও জড়িত৷'' ঐ বার্তায় যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়েও নেতিবাচক মন্তব্য করেন তিনি৷
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদুল আনাম খান (অব.) ডয়চে ভেলেকে জানান, আল কায়েদা নেতার এই ভিডিও বার্তাকে হাল্কাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই৷ তারা সরাসরি বাংলাদেশে হামলার হুমকি না দিলেও ‘ইসলাম বিরোধীদের' প্রতিরোধের আহ্বান ইঙ্গিতপূর্ণ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা নিশ্চিত যে আল কায়েদা এখন বাংলাদেশের দিকে নজর রাখছে৷ কারণ তারা নিজেদের ‘ইসলামের রক্ষক' মনে করে৷
‘‘আল কায়েদা সরাসরি বাংলাদেশে সক্রিয় এমন কোনো তথ্য এখনো পাওয়া না গেলেও তাদের অনুসারী আছে বলে ধারণা করা যায়৷''
তিনি বলেন, ‘‘আল কায়েদা এতদিন বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন আগ্রহ দেখায়নি৷ কারণ বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বিরোধী কার্যক্রমে তেমন সক্রিয় নয়৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের সহিংস তত্পরতা এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত অবস্থান আল কায়েদাকে বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে৷''
শাহেদুল আনাম খান বলেন, ‘‘সরকারকে এখনই সতর্ক হতে হবে৷ নয়তো বাংলাদেশ আল কায়েদার টার্গেটে পরিণত হতে পারে৷ আয়মান আল-জাওয়াহিরির বার্তা বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোকে উদ্বুদ্ধ করবে৷ আর বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনগুলোর একাংশ সরাসরি না হলেও আল কায়েদার ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ৷ তাই সরকারকে শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি নয়, সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে৷''
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নিয়ে এর আগেও আল কায়েদা অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে৷ আর যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার পর তেহরিকই তালিবান পাকিস্তান নামের একটি জঙ্গি সংগঠন পাকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাস বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল৷