আরাভের নামে ইন্টারপোলের রেড নোটিস
২৪ মার্চ ২০২৩আন্তজার্তিক পুলিশ সংস্থাটির ওয়েবসাইটে শুক্রবার রেড নোটিসের তালিকায় থাকা অন্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে তার নামও দেখা যায়৷ খুনের অভিযোগে নোটিসে তার নাম লেখা হয়েছে- রবিউল ইসলাম রবিউল, বয়স ৩৫, জন্মস্থান বাগেরহাট৷
রেড নোটিসের তালিকায় যে ৬৩ বাংলাদেশির নাম রয়েছে, সেখানে সর্বশেষ সংযোজন রবিউল ওরফে আরাভ খান, যার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে ইন্টারপোলে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তারা৷
পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) মনজুর রহমান ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, রেড নোটিস জারির পর প্রথম দুই-তিন দিন ‘পাবলিক' হয় না৷ শুধু এনসিবি সদস্য দেশ সমূহের কর্মকর্তারা দেখতে পান৷ পরে সেটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলে সবাই দেখতে পান৷
ইন্টারপোলের আট ধরনের নোটিসের মধ্যে রেড নোটিসের অর্থ হলো, ওই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও বিচার বিভাগ বিচারের মুখোমুখি করতে, অথবা দণ্ড কার্যকর করার জন্য খুঁজছে৷
সদস্য দেশগুলো ইন্টারপোলের মাধ্যমে পলাতক আসামির সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করতে পারে৷ বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এবং সে দেশের সরকার তা খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে৷
অবশ্য সেক্ষেত্রে সে দেশের সরকারই তার বিচার শুরু করবে৷ তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হলে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির প্রয়োজন হবে, কিন্তু বাংলাদেশ ও আরব আমিরাতের মধ্যে এই চুক্তি নেই৷ ফলে রেড নোটিস জারি হলেও রবিউল ওরফে আরাভকে ফেরানো কঠিন৷
সম্প্রতি আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ‘আরাভের' একটি গয়নার দোকান উদ্বোধন হয়েছে৷ সেটি উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ থেকে উড়ে যান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, অভিনেত্রী ফারদিন দীঘি, ইউটিউবার হিরো আলমসহ বিনোদন জগতের বেশ কয়েকজন৷ আর সেই আয়োজন ঘিরে দেশে শুরু হয় তোলপাড়৷
ওই অনুষ্ঠানের আগে আগে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, এই আরাভ আর কেউ নন, ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম, যিনি ভারতীয় পাসপোর্টে দুবাই গেছেন৷
আরও প্রকাশ পায়, এই আরাভ বা রবিউল একেক সময় একেক নামে পরিচিতি পেয়েছেন৷ তার বাবা ছিলেন নিম্ন আয়ের একজন মানুষ, যিনি ঢাকায় এসে হোটেলে শ্রমিকের কাজ করেছেন৷ সেই আরাভই এখন শত শত কোটি টাকার মালিক, যার অর্থের উৎস নিয়ে আছে ধোঁয়াশা৷
এর আগে আরাভের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালী পাড়ার একজন জনপ্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, রবিউলের জন্ম বাগেরহাটের চিতলমারিতে, মামার বাড়িতে, সেখানেই তার অনেকটা বেড়ে ওঠা৷ এরপর তিনি ঢাকায় আসেন৷ ইন্টারপোলের রেড নোটিসেও তার জন্মস্থান বাগেরহাট লেখা হয়েছে৷
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানায় আরাভ বা রবিউলের বিরদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গেছে নয়টি, তবে মামলার সংখ্যা আরও বেশি৷
মামুন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান ২০২১ সালের ২ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন৷ সেখানে রবিউল ইসলামসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)