আরবের উত্তাল আন্দোলনে ‘জেনারেশন টেক্স্ট’
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১আন্দোলনকারীদের হাতে এক সময় থাকতো ব্যানার৷ থাকতো প্ল্যাকার্ড৷ এখন যুগ পাল্টেছে৷ সেই যুগে আন্দোলনের খবর বিশ্ববাসীকে পৌঁছে দেবার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির নানা উপকরণ৷ হাতে তাদের কখনো ল্যাপটপ, কখনো ক্যামেরা আবার কখনোবা ভিডিও ক্যামেরা৷ তারা প্রতি মুহূর্তে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট, যেমন ফেসবুক, টুইটারে লিখে দিচ্ছেন চট করে কী হচ্ছে৷ ভিডিও পাঠিয়ে দিচ্ছেন ইউটিউবে৷ স্থিরচিত্রও চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে৷ আর আন্দোলনের গতি থামিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকার যখন সাংবাদিকদের উপর নামিয়েছেন বিভিন্ন বিধিনিষেধের খড়্গ, তখন এই সকল মাধ্যমগুলোই হয়ে উঠছে বেসরকারি এবং স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর জন্য সংবাদ পাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র৷
আল জাজিরার মতো আরব জগতের সবচেয়ে বড় স্যাটেলাইট চ্যানেলে তো নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে অপেশাদার সব চিত্রগ্রাহকের তোলা ভিডিও ফুটেজ৷ সে ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে কী ধরণের আক্রমণ হচ্ছে আন্দোলনকারীদের উপর, সরকারী বাহিনীর অত্যাচার ইত্যাদি৷ আন্দোলনকারীদের উত্তপ্ত কথামালাও থাকছে সেই সব ফুটেজে৷
তবে ইন্টারনেটের উপর নানা প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি করার পর আন্দোলনকারীরা সেল ফোনের মাধ্যমেই ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন বেশী৷ তারা তাদের তোলা ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর জন্য৷ বাদ যাচ্ছে না খুদে বার্তাও৷
রাজনৈতিক এবং প্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগ ‘টেকপ্রেসিডেন্ট' এর সহ প্রতিষ্ঠাতা মিকা সিফরির এ বিষয়ে বলছেন, এটাও এক ধরণের আন্দোলন৷ তরুণরা এগিয়ে এসেছে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে৷ আর যেহেতু ইন্টারনেটের চেয়ে সেখানে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত, তাই সেটাই ব্যবহার করছেন তারা তথ্য বিনিময়ের কাজে৷ একে ‘জেনারেশন টেক্সট' বলেও উল্লেখ করছেন তিনি৷
মিশরের আন্দোলনের একজন, যিনি গুগলের একজন নির্বাহী, তিনি তো মিশর আন্দোলনে রীতিমত একজন নেতা হয়ে গেছেন, সেই ওয়েল গনিম সিবিএস টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে জানালেন, ফেসবুক, টুইটার, গুগল, ইউটিউব ছাড়া মিশরের আন্দোলন সফল হতেই পারতো না৷ তিনি দাবি করছেন, সেখানে যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম না থাকতো, তাহলে এতো আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ এতটা ছড়াতোই না৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন