1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষার্থীরা যেন জিম্মি না হয়

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

২০২৫ সাল থেকে নতুন এক শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ৷ এই পরিবর্তন আসছে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে৷ পরীক্ষা, পাঠ্যক্রম ও বিষয় ভিত্তিক বিভাগ সবখানে এই পরিবর্তন আসবে৷

https://p.dw.com/p/40IaF
আগামী বছর থেকেই কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে
আগামী বছর থেকেই কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবেছবি: Mortuza Rashed/DW

নতুন এই ব্যবস্থায় তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষাই থাকবে না৷ পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে থাকছে না কোনো পাবলিক পরীক্ষা৷ নবম ও দশম শ্রেণিতে কোনো বিভাগ থাকবে না৷ সব শিক্ষার্থীর জন্য একই বিষয়৷ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে গিয়ে বিভাগ থাকবে৷ এসএসসি ও এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষা হবে৷ এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ফলের ভিত্তিতে৷ আর যেখানে পাবলিক পরীক্ষা থাকছে না সেখানে ক্লাসভিত্তিক  শিক্ষকদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকছে৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার এই নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করেছেন৷
২০২৫ সাল থেকে এটা পুরো কার্যকর হলেও আগামী বছর থেকেই এটা নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে৷ সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন আগামী বছর থেকে ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটা প্রকল্প আকারে শুরু হবে৷ আর তা হবে প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণীতে৷ ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে পুরোপুরি নতুন ব্যবস্থা চালু হবে৷ ২০২৪ সালে  তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে এই শিক্ষাক্রম শুরু হবে৷ ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে৷
নবম ও দশম শ্রেণীতে বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা ব্যবসায় শিক্ষার  জন্য আলাদা কোনো বিভাগ থাকছে না৷ সবাইকে ১০ টি বিষয় সাধারণভাবে পড়তে হবে৷ দশম শ্রেণীর পাঠ্যক্রমে হবে এসএসসি পরীক্ষা৷ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থাকবে৷ বিভাগের  বিষয়গুলো ঐচ্ছিক হিসেবে পড়বে শিক্ষার্থীরা৷
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন,"এটা বাস্তবায়ন হলে শিক্ষায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে৷ বিশেষ করে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ প্রয়োজনীয় মৌলিক বিষয়গুলো পড়লে তাদের শিক্ষার ভিত অনেক শক্ত হবে৷ পরে তারা যে কোনো বিষয় নিয়ে পড়তে পারবে৷”

ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ

তবে তার মতে,"এজন্য শিক্ষায় ব্যাপক বিনিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি লাগবে৷ শিক্ষকেরা হলেন ছাত্রদের কাছে আদর্শ এবং অনুসরণীয়৷ সেই মানের শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে৷ নিশ্চয়ই সরকার গবেষণা করে পরিকল্পনা করেছে বলে মনে করি৷”
তিনি বলেন,"আরো একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে৷ এই করোনার সময় অনেক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করেছে৷ বড় একটি অংশ সেই সুযোগ পায়নি৷ তাই তাদের শিক্ষায় যে গ্যাপ তৈরি হয়েছে তা পুষিয়ে দিতে হবে৷ তাদের যে অদক্ষতা তৈরি হয়েছে তা এখন পরিকল্পনা করে কাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে৷ তা না হলে এই শিক্ষার্থীরা অপরিপক্কই থেকে যাবে৷”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হালিম নতুন এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ তার কথা, শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষা নয়, ক্লাসের ভিত্তিতেও মূল্যায়নের পদ্ধতি আধুনিক এবং যুগোপযোগী৷ তবে তিনি মনে করেন,"এবিষয়ে সতর্ক থাকতে  হবে যে, শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষকদের হাতে জিম্মি হয়ে না যায়৷ বাংলাদেশে কোচিং-এর একটা প্রভাব আগে থেকেই আছে৷ এখন শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে বা কোচিং না করলে যদি শিক্ষার্থীদের অবমূল্যায়নের শিকার হতে হয় তবে তা একটি নতুন সংকট তৈরি করবে৷”
তার মতে," কতগুলো পবলিক পরীক্ষা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত ভাল৷ কারণ এই পরীক্ষা নিতেই প্রতিবছর অনেক সময় চলে যায়৷ আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে এইচএসসিতে গ্রেডিং-এর সিদ্ধন্ত ভালো৷ এতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমবে৷  তবে এর সুফল পেতে হলে টিচিং- লার্নিং প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে হবে৷”
বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকেরা এখন যথেষ্ট ভালে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন৷ এখন তাদের এই প্রশিক্ষণকে কাজে লাগাতে বিনিয়োগ প্রয়োজন,বললেন এই শিক্ষা বিশেষজ্ঞ৷

অধ্যাপক মো. হালিম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য