গণতন্ত্র আছে, নিরাপত্তা নেই
১৮ জুলাই ২০১৩সেই মিন্ট এখন মনে দুঃখ আর ক্ষোভ নিয়ে বলছেন, ‘‘এখন আমাদের গণতন্ত্র আছে কিন্তু আমরা মুসলমানরা শান্তিতে নেই৷ এর চেয়ে সামরিক শাসনামলেই আমরা ভাল ছিলাম৷''
২০১০ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ৪৮ বছরের সামরিক শাসন পেরিয়ে গণতন্ত্রে ফেরে মিয়ানমার৷ যদিও সেই নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর পক্ষের দলই জেতে, তবুও প্রেসিডেন্ট টেইন সেইন সংস্কারপন্থি হওয়ায় তিনি মিয়ানমারে অনেক সংস্কার আনেন৷ এতে খুশি হয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্ব মিয়ানমারের ওপর থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়৷
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা
সেনা শাসনের ৪৮ বছরে মিয়ানমার কোনো বৌদ্ধ-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখেনি৷ শেষটা দেখেছিল তার আগের গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে৷ এবার আবার যখন গণতন্ত্র এলো শুরু হয়ে গেল দাঙ্গা৷ গতবছর এমন এক দাঙ্গায় রাখাইন রাজ্যে ১৬৭ জন নিহত হন, যার বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম৷ এরপর আবার এ বছরের শুরুতে মধ্য ও উত্তর মিয়ানমারে দাঙ্গায় নিহত হন ৫০ জন মুসলিম৷
‘৯৬৯ আন্দোলন'
শুরু এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে৷ বৌদ্ধ ভিক্ষু ভিরাথু এর নেতৃত্বে আছেন৷ ভিরাথু নিজেকে বৌদ্ধ ধর্মের ওসামা বিন লাদেন বলে আখ্যায়িত করেছেন৷ ‘টাইম' ম্যাগাজিন তাঁকে নিয়ে কাভার প্রতিবেদন প্রকাশ করে তাঁকে ‘সন্ত্রাসী' বলে আখ্যায়িত করেছে৷ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য মুসলমানদের মালিকানায় থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন না করতে ও তাদের উৎপাদিত পণ্য বর্জন করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা৷
মিয়ানমারের ‘মন' রাজ্য এই আন্দোলনের শুরু যেখানে সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করেন৷ এরপর সেটা সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ে৷ গতমাসে মন রাজ্যের রাজধানী থেকে ইয়াঙ্গনের যাওয়ার সময় পথে এক মুসলমানের মালিকানাধীন বাসে হামলা হয়৷ হামলাকারীরা বাসের চালককে হত্যা করে আর যাত্রীদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেড়ে নেয়৷ সেসময় হামলাকারীরা যাত্রীদের বলেন মুসলমানদের সঙ্গে চলাফেরা করলে এমনই হবে৷
সরকার নিশ্চুপ
এতোকিছুর পরও সরকার ভিরাথু ও তাঁর আন্দোলনের সমালোচনা করছে না৷ তারা বলছে মুসলমান বিরোধী সহিংসতার সঙ্গে ভিরাথুর আন্দোলনের যোগসূত্র থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ অথচ ভিরাথুকে সন্ত্রাসী বলায় টাইম ম্যাগাজিনের ঐ সংখ্যার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মিয়ানমার সরকার৷
জেডএইচ / এসবি (ডিপিএ)