আবারো সংলাপের প্রস্তাব
১১ মে ২০১৩এদিকে, বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিবকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারকে চাপ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি৷
বিএনপিকে এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের আহ্বানের পরই চিঠি দেয়ার কথা বলেছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷ কিন্তু এর পরপরই খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন৷ সেই সময়ও শেষ হয়ে গেছে৷ আর এরমধ্যে গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের পর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ এবং অবস্থানকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে ঘটে গেছে তুলকালাম কাণ্ড৷ সরকার দাবি করছে খালেদা জিয়া যে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তার সঙ্গে হেফাজতের অবস্থানের সম্পর্ক আছে৷ এর মাধ্যমে তারা সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করেছিল৷ তাই হেফাজতকে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে শাপলা চত্বর থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে৷ আর বিএনপি'র দাবি শাপলা চত্বরে রাতের আধারে ‘গণহত্যা' চালানো হয়েছে৷ এই অবস্থায় বিএনপি সোমবার ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে৷
আর এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আবারো বিরোধী দলকে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি ঢাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক ঘরোয়া সমাবেশে বলেছেন, সংলাপের আহ্বান অব্যাহত আছে৷ তাই ধ্বংসাত্মক পথ পরিহার করে বিরোধী দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী৷
এর জবাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শাসসুজ্জামান দুদু বলেন, বিএনপি সংলাপের পক্ষে, বিরুদ্ধে নয়৷ তবে আগে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে৷ বিষয়বস্তু স্পষ্ট করতে হবে৷ তিনি বলেন বিএনপির নেতাদের কারাগারে রেখে, নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে সংলাপ হয়না৷
এদিকে ঢাকা সফররত জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারি মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হয়৷ সেখানে সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ দিতে সহকারি মহাসচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷
আর এইসব বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, যে যাই বলুন না কেন সামনের নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে সংলাপ লাগবেই৷ বিরোধী দলকে যেমন তার দাবি নিয়ে গো ধরে থাকলে চলবেনা৷ তেমনি সরকারি দলকে সংলাপের আহ্বানের নামে কূটকৌশলের আশ্রয় নিলে চলবে না৷ মূল কথা হলো নির্বাচন যে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে তা কাজে প্রমাণ করতে হবে সরকারকে৷ আর সরকার যদি সত্যিই সেই উদ্যোগ নেয় তাহলে বিরোধী দলকেও ছাড় দিতে হবে, পদ্ধতি যা-ই হোক না কেন৷