আবার সামরিক শক্তি দেখালেন কিম জং উন
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১বৃহস্পতিবার ভোররাতে সরগরম পিয়ংইয়ংয়ের কিম উল সাং স্কোয়ার। উড়ছে যুদ্ধবিমান। রাস্তায় সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ চলছে। চলছে যুদ্ধাস্ত্রের প্রদর্শনী। প্রচুর দর্শক দেখছেন। ক্রিম রংয়ের স্যুট পরে কিম জং উন হাত নাড়ছেন দর্শক ও সেনার উদ্দেশে।
এই নিয়ে গত এক বছরে তৃতীয়বার নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করলেন কিম। তিনি আবার বুঝিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালেস্টিক মিসাইল কর্মসূচি থেকে তিনি সরে আসবেন না। বরং প্যারেডে তিনি দেশের সর্বশেষ মিসাইল দেখিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, আগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার কথা তিনি ভাবছেন না। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, ''উত্তর কোরিয়ায় প্যারেড হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। পরবর্তী বিশ্লেষণের জন্য আরো তথ্যের অপেক্ষায় আছিআগের প্যারেড।''
গতবছর অক্টোবরে সামরিক প্যারেডে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল দেখিয়েছিলেন কিম। দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার দূর পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্রের প্রদর্শন করা হয়।
গত জানুয়ারিতেও আবার গভীর রাতে সামরিক কুচকাওয়াজ হয়। সেখানে সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালেস্টিক মিসাইলের প্রদর্শন করা হয়। সরকারি সংবাদসংস্থার দাবি ছিল, এটা হলো বিশ্বের সব চেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
এনকে নিউজ জানিয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ে প্রথমে রাত বারোটা ও তারপর রাত একটার সময় আতশবাজি ফাটে। তারপর শুরু হয় সামরিক প্যারেড। যুদ্ধবিমানের শব্দ তখনই শোনা যায়।
কঠিন সময়
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিম তার দীর্ঘ শাসনকালে সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। করোনার জন্য সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে।
সিওলের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইসলের মতে, ''এই প্যারেডের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষকে বার্তা দেয়া। কিমের শাসনে যে সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের উপর চাপ প্রচণ্ড বেড়েছে। তাই এই প্যারেড ছিল নিজেদের শক্তি দেখানো। এটা মানুষকে উজ্জীবীত করতে পারে।''
গতমাসেই জাতিসংঘের পরমাণু সংক্রান্ত সংস্থা আইএইএ জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়া প্লুটোনিয়াম প্রসেসিং রিঅ্যাকটরকে সক্রিয় করেছে। এটা খুবই চিন্তার বিষয়।
সিওলের কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের গবেষক হং মিন বলেছেন, এই প্যারেড এবং এয়ার শোর মাধ্যমে দেশের মানুষের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দুনিয়াকেও একটা বর্তা দিতে চেয়েছেন কিম।
জিএইচ/এসজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, আল জাজিরা)