‘আবার নির্বাচন করবো, তবে কঠিন হবে’
২১ নভেম্বর ২০১৬১১ বছর ধরে চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করে আসা ম্যার্কেল যে এমন একটি ঘোষণা দিতে পারেন তা অনেকদিন ধরেই আশা করা হচ্ছিল৷ সম্প্রতি মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর বিশ্ব নেতাদের অনেকেই চেয়েছেন, ম্যার্কেল আবার চ্যান্সেলর হন৷
নিজের দল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন (সিডিইউ)-এর নেতাদের কাছে নিজের আগ্রহের কথা প্রকাশের পর সাংবাদিকদের ম্যার্কেল বলেন, ‘‘ইউরোপ ছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে আমরা এখন আমাদের মূল্যবোধ ও স্বার্থ রক্ষায় কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি৷''
তবে তিনি বলেন, আগের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচন কঠিন হবে, কারণ, বর্তমানে ‘‘আমাদের সমাজ বেশ দ্বিধাবিভক্ত,'' বলেন ম্যার্কেল৷ পপুলিজমের উত্থান এবং ব্রেক্সিট ও ট্রাম্পের জয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সেই অবস্থায় ‘‘দেশের জন্য কাজ করা আমার দায়িত্ব'' এমন কথাও বলেছেন তিনি৷
ম্যার্কেলের প্রতি বিশ্বের অনেক নেতার প্রত্যাশা এবং অনেক বিশ্লেষক যে তাঁকে ‘মুক্ত বিশ্বের পরবর্তী নেতা' বলছেন সে ব্যাপারেও মন্তব্য করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ তিনি বলেন, এসব মন্তব্যে তিনি সম্মানিত বোধ করলেও এগুলো (মন্তব্যসমূহ) সামঞ্জস্যহীন, এমনকি অযৌক্তিকও৷
জার্মান টেলিভিশন এআরডিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যার্কেল ব্রেক্সিট পরবর্তী ইউরোপকে শক্তিশালী করার অঙ্গীকার করেন৷
ম্যার্কেল যখন তাঁর দলের নেতাদের চ্যান্সেলর পদে চতুর্থবারের মতো নির্বাচন করার আগ্রহের কথা জানান, তখন সবাই ‘তুমুল হাততালি' দিয়ে সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান৷ সাক্সনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্টাবিস্লাভ টিলিচ বলেন, ‘‘ম্যার্কেল হলেন পপুলিজমের বিরুদ্ধে আমাদের উত্তর৷''
জরিপ কী বলছে
জার্মান পত্রিকা বিল্ড-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৫ শতাংশ জার্মান ম্যার্কেলকে আবারও চ্যান্সেলর হিসেবে চান৷ গত আগস্টে সংখ্যাটি ছিব ৪২ শতাংশ৷ গত বছর প্রায় এক মিলিয়ন শরণার্থীকে জার্মানিতে প্রবেশ করতে দিয়ে কিছুটা সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ম্যার্কেল৷
তাঁর এই সিদ্ধান্তে ডানপন্থি এএফডি (জার্মানির জন্য বিকল্প) দলের উত্থান ঘটে৷ গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘এমনিড' এর জরিপে দেখা গেছে, ১৩ শতাংশ ভোটার এএফডিকে চান৷ আর ম্যার্কেলের সিডিইউ'এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৩৩ শতাংশ ভোটার (২০১৩ নির্বাচনের চেয়ে সংখ্যাটি ৯ পয়েন্ট কম)৷ এর পরেই আছে এসপিডি দল (২৪ শতাংশ)৷
প্রতিক্রিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পপুলিজমের যে ঢেউ উঠেছে তার বিরুদ্ধে লড়তে ম্যার্কেলই সঠিক মানুষ হতে পারেন বলে মনে করছেন ডয়চে ভেলের কায়-আলেক্জান্ডার শোলজ৷
ম্যার্কেলের ঘোষণায় আনন্দিত ব্রিটিশ লেখক ও রাজনীতিবিদ জনাথন ফ্রায়ার৷ তিনি মনে করছেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে ম্যার্কেলকে ইউরোপের প্রয়োজন৷’’
মার্কিন গায়ক, গীতিকার বিল ম্যাডেন বলেন, রাশিয়া ও মুক্ত বিশ্বের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একমাত্র বিশ্ব নেতা হলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)