আবর্জনা সমস্যায় জার্মান পন্থা
২৭ ডিসেম্বর ২০১৬চর্চাটা আসলেই ঘরেই শুরু করতে হয়৷ রান্নাবান্নার সময় তৈরি হওয়া যত আবর্জনা তা এক ব্যাগে রাখা, আর কাগজপত্র অন্য ব্যাগে রাখা৷ এরপর রং অনুযায়ী, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কন্টেইনারে সেগুলো ফেলতে হয়৷ রঙের বিষয়টিও জটিল নয়, কালো রঙের কন্টেইনারে ফলতে হবে রান্নাবান্নার সময় উৎপাদিত জৈব আবর্জনা, কাগজপত্রের জন্য নীল কন্টেইনা আর প্লাস্টিক দ্রব্যের জন্য হলুদ কন্টেইনার৷ এই তিন ধরনের কন্টেইনার প্রায় সববাড়ির সামনেই দেখা যায়৷ পাশাপাশি রয়েছে কাঁচের বোতল ফেলার নির্দিষ্ট কিছু কন্টেইনার৷ বাদামি, সবুজ আর সাদা বা স্বচ্ছ বোতলগুলো রং দেখে ফেলতে হয় সেসব কন্টেইনারে৷ তবে ব্যাটারি, অ্যাসিড বা রঙের মতো দ্রব্য ফেলা যায় না এ সব কন্টেইনারে৷ সেগুলোর জন্য আলাদা পাত্র৷
এখানেই শেষ নয়, ধরুন আপনার বাসার আসবাবপত্র পুরনো হয়ে গেছে, যেগুলো ফেলে দিতে হবে বা পুরনো টিভি ফ্রিজ ফেলে দেবেন৷ সেগুলো কি ময়লার কন্টেইনারের পাশে রেখে আসলেই চলবে? মোটেই না, এধরনের বড় জিনসপত্র ফেলার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু দিন৷ এ সব দিনে বাড়ির সামনে সেগুলো ফেলে দিলে নগর কর্তৃপক্ষ কিংবা যাদের সেসব প্রয়োজন তা নিয়ে যাবে৷
ফেলার মতো আর কিছু কি বাকি আছে? হ্যাঁ, পুরনো জামাকাপড় ফেলবো কোথায়? সেই ব্যবস্থাও রয়েছে৷ তবে বাড়ির সামনে নয়৷ বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বা পার্কিং লটে এক ধরনের কন্টেইনার থাকে যেগুলোতে পুরনো জামাকাপড়, জুতো ফেলা যায়৷ সেগুলো আবার দান হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ব্যবহার উপযোগী পোশাক গরিব-দুঃখীদের দান করা হয়৷ আর প্লাস্টিকের বোতল ফেরত দিলে কিছু পয়সা পাওয়া যায়৷ তাই সেই বোতল সবাই নির্দিষ্ট মেশিনে বা দোকানে জমা দেন পয়সা ফেরত পেতে৷
এভাবে পরিকল্পিতভাবে ময়লা, আবর্জনা ফেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে সেগুলোর ব্যবস্থাপনা নিখুঁত করা এবং অবশ্যই যতটা সম্ভব রিসাইকেল করা৷ জার্মানিতে বসবাসরতদের সহায়তায় জার্মান সরকার এক্ষেত্রে বেশ সফলতা পেয়েছে৷ দেশটিতে ৮৭ শতাংশ আবর্জনাই রিসাইকেল করা হয়৷
বাংলাদেশ থেকে এসেছি বলে অনেককিছুতেই দেশটির সঙ্গে জার্মানির তুলনা মনের অজান্তেই করে ফেলি৷ ইউরোপের দেশটির ময়লা আবর্জনা ব্যবস্থাপনা যতটা যুগপোযোগী বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা ততটাই পিছিয়ে৷ ঢাকা শহরে কোনোরকমে নাক চেপে ময়লার পাহাড়ের পাশ কেটে হাঁটার অভিজ্ঞতা অনেকবার হয়েছে৷ এখনো দেখি, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট বক্সের আশেপাশেই ময়লা, আবর্জনা পড়ে থাকে বেশি৷ বর্তমান যুগে এমনটা একেবারেই প্রত্যাশিত নয়৷ বরং জনগণ সচেতন হলে আর সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিলে জার্মানির মতো বাংলাদেশেও ময়লা, আবর্জনা সঠিকভাবে সংগ্রহ করে রিসাইকেল করা সম্বব৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷