আফ্রিকায় সৌর বিদ্যুতের অভিনব প্রয়োগ
৩০ মার্চ ২০১৫তানজানিয়ার আরুশা শহরের সঙ্গে স্কাইপ-সংলাপ চলছে৷ ‘মোবিসোল' কোম্পানির কর্মীদের কাছে পৃথিবীটা ছোট হয়ে গেছে৷ ডিসেম্বর মাসেই আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে বিক্রির হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে এক সহকর্মী জানালেন৷ সৌর প্যানেল-এর চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা৷
বছর চারেক আগে টোমাস গটশাল্ক এই কোম্পানিটি শুরু করেন৷ উদ্দেশ্য ছিল এমন সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা, যেখানে এখনো তা পৌঁছায়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘সহ প্রতিষ্ঠাতার মাথায় এই আইডিয়াটি এসেছিল৷ তাঁর স্ত্রী আফ্রিকায় গিয়ে এই সমস্যা দেখেছিলেন৷ বেশিরভাগ মানুষের বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, অথচ মোবাইল টেলিফোন রয়েছে৷ তাছাড়া গত কয়েক বছরে সোলার মডিউল অনেক সস্তা হয়ে গেছে৷ এক ঢিলে দুই পাখি মারতে ‘মোবিসোল' কোম্পানি গঠন করা হয়৷''
সবচেয়ে ছোট সোলার প্যানেল ৩০ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে৷ দাম ২৫০ ইউরো৷ তা দিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ করা, আলো জ্বালানো বা রেডিও চালানো যায়৷ তিন বছর ধরে কিস্তিতে দাম মেটানো যায়৷ মোবাইল ফোন দিয়েই সেটা করা সম্ভব৷ টোমাস গটশাল্ক বলেন, ‘‘আমাদের বেশিরভাগ গ্রাহকেরই কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই৷ কিন্তু সবার কাছেই মোবাইল ফোন আছে৷ সঙ্গে আছে ‘মোবাইল মানি অ্যাপ্লিকেশন' যা দিয়ে গ্রাহক টাকা পাঠাতে পারে৷ সেই টাকা গ্রহণ করার জন্য লোকবলের প্রয়োজন নেই৷ হাতে নগদ টাকাই নেই৷ সস্তায় অর্থ সংগ্রহের এটা ভালো পথ৷''
কাছেরই এক ছোট কর্মশালায় ইঞ্জিনিয়ার-রা এই প্রযুক্তিকে ব্যবহারের আরও উপযোগী করে তুলছেন৷ এই বক্স-টিই হলো তার প্রাণকেন্দ্র৷ এর মধ্যে রয়েছে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ও নেটওয়ার্ক সংযোগ, যার সাহায্যে বার্লিনে সদর দপ্তরে তথ্য পাঠানো হয়৷ এই যন্ত্র নিয়ে কোনো সমস্যা রয়েছে কি? এটি কতটা বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে? মোবিসোল সংস্থার টোমাস ডুভো বলেন, ‘‘এটা শক্তির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে৷ এর মধ্যে যোগাযোগের ইন্টারফেস রয়েছে, যা দিয়ে তথ্যভাণ্ডারের মধ্যে সব তথ্য সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়৷ ফলে মেরামতি, আরও বিকাশ ও গ্রাহক পরিষেবা আরও সহজ করা সম্ভব৷''
আফ্রিকার পূর্বাঞ্চল ও বার্লিন – দুই জায়গায়ই কর্মীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে৷ এখানে কনট্রোল সেন্টার রয়েছে, এখানে জার্মান, ইংরাজি ও চীনা ভাষায় ডেভেলপমেন্ট, উৎপাদন ও বিপণনের মধ্যে সমন্বয় করা হয়৷ সোলার প্লান্ট চীনেই তৈরি হয়৷ গটশাল্ক বলেন, ‘‘মোবিসোল কোম্পানি তিনটি মহাদেশে সক্রিয় রয়েছে৷ আমরা জার্মানি ও চীনে উৎপাদন করি, বিক্রি করি আফ্রিকায়৷ বিভিন্ন দেশের মধ্যে ‘লজিস্টিক্স' সামলানো সত্যি বড় এক চ্যালেঞ্জ৷ কখনো ট্রাক উলটে যায়৷ ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট সংখ্যায় প্লান্ট প্রস্তুত রাখতে হয়, যা এক বড় চ্যালেঞ্জ৷''
এই চ্যালেঞ্জ এখনো পর্যন্ত সামলানো গেছে৷ মোবিসোল-এর অফিসে জায়গাই হচ্ছে না৷ আরও বড় দপ্তরে যাবার পরিকল্পনা হয়ে গেছে৷