আফ্রিকার হাতিদের জন্য চীন থেকে সুখবর
গত তিন বছরে হাতির দাঁতের দাম কমেছে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ৷ ‘সেভ দ্য এলিফ্যান্ট’ সংস্থা চীনে জরিপ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে৷
দাম পড়ল
২০১৪ সালে হাতির দাঁতের দাম উঠেছিল চরমে৷ তখন চীনের কালোবাজারে গজদন্তের দাম উঠেছিল কিলো প্রতি ২,১০০ ডলারে৷ কিন্তু ২০১৭ সালের সূচনায় সেই দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৭৩০ ডলারে৷
চাহিদা কমছে
হাতির দাঁতের ব্যবসার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা দুনিয়ায় হাতির দাঁতের সবচেয়ে বড় গ্রাহক দেশ চীনে হাতির দাঁতের চাহিদা কমছে, যার ফলে হাতির দাঁতের দাম কমছে৷ তবুও হাতির চোরাশিকার বন্ধ হয়নি৷
বলি
চীনে হাতির দাঁতের বিপুল চাহিদার কারণে গত এক দশকের মধ্যে আফ্রিকায় হাতির সংখ্যা ১,১০,০০০ কমে ৪,১৫,০০০-এ দাঁড়িয়েছে৷
চাহিদা কমার কারণ
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস এবং সেই সঙ্গে সরকারের দুর্নীতি রোধ কর্মসূচি হাতির দাঁতের চাহিদা কমার জন্য দায়ী, বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান৷ বিশেষ করে যখন সরকারি কর্মচারীদের ঘুস হিসেবে হাতির দাঁতের জিনিসপত্র দেওয়া আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
সচেতনতা বেড়েছে
জনসাধারণের মধ্যে বর্ধিত সচেতনতাও হাতির দাঁতের চাহিদা কমার একটা কারণ হতে পারে৷ সাধারণ মানুষ বুঝতে শুরু করেছে যে, হাতির দাঁতের ব্যবসা চলতে থাকলে, হাতিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে৷
হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান...
‘সেভ দ্য এলিফ্যান্ট’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ইয়ান ডগলাস-হ্যামিল্টনের মতে, হাতির দাঁতের সামগ্রীর সঙ্গে হাতির অস্তিত্বের সংকটের যোগসূত্রটি চীনের মানুষের অজ্ঞাত ছিল না, কিন্তু এখন ক্রমেই আরো বেশি মানুষ তার গুরুত্ব উপলব্ধি করছেন৷
কারখানা বন্ধ
হাতির দাঁতের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লাইসেন্স-প্রাপ্ত ৩৪টি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে চীন৷ ২০১৭ সালের মার্চ মাসে এই আজ্ঞা বলবৎ হয়৷ এ বছর শেষ হওয়ার আগে হাতির দাঁতের সামগ্রী বিক্রির বিপণীগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হবে৷
বেআইনি ব্যবসা
এখন প্রশ্ন হলো, হাতির দাঁত নিয়ে অবৈধ ব্যবসা কিভাবে রোখা যায়, কেননা, তা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে চোরাশিকার পুরোপুরি বন্ধ করার কোনো উপায় নেই৷
নিষেধাজ্ঞা
হাতির দাঁতের আন্তর্জাতিক ব্যবসা ১৯৮৯ সালে নিষিদ্ধ করা হয়৷ কিন্তু কালোবাজারে হাতির দাঁত কেনা-বেচা যতদিন চলবে, ততদিন হাতির চোরাশিকার বন্ধ হবে না, কেননা, অপরাধী আর দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তারা হাতির দাঁতের চোরাচালান থেকে বিপুল মুনাফা করে থাকে৷
অগ্নিতে আহুতি
২০১৬ সালে কেনিয়া সরকার কোটি কোটি ডলার মূল্যের হাতির দাঁত জনসমক্ষে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেন৷ উদ্দেশ্য ছিল, সর্বসাধারণের কাছে জ্ঞাপন করা যে, কেনিয়া সরকার হাতির দাঁত নিয়ে ব্যবসা করার বিরোধী৷ মালাউয়িতেও এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়৷
দূর অস্ত
‘সেভ দ্য এলিফ্যান্ট’ সংগঠনের ইয়ান ডগলাস-হ্যামিল্টনের মতে, চীনে যে হাতির দাঁতের চাহিদা কমেছে, সেটা খুব ভালো খবর৷ কিন্তু হাতিদের বাঁচানোর জন্য তা পর্যাপ্ত নয়, কেননা, চীনে যখন চাহিদা কমছে, ঠিক তখনই লাওস, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামে হাতির দাঁতের চাহিদা বাড়ছে৷