প্রভাব বাড়াচ্ছে চীন
১২ জানুয়ারি ২০১৩গত বছরের প্রথম ছয় মাসে আফ্রিকায় ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন৷ অর্থের এই হিসেব দেখে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ কেননা, গত তিন বছরে চীনের সঙ্গে আফ্রিকার বাণিজ্য বেড়েছে প্রায় তিনগুন৷ ফলে চীনের এই বিনিয়োগ মোটেই অপ্রয়োজনে নয়৷ দেশটি এবার মনোযোগী হয়েছে আফ্রিকার মিডিয়া খাতে৷ সেখানকার জনসাধারণের জন্য রেডিও, সংবাদ সংস্থা, টিভি চ্যানেল আর সংবাদপত্র চালু করেছে চীন৷
বিবিসি'র আফ্রিকা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মেরি হারপার বলেন, ‘‘আফ্রিকার মিডিয়া খাতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি৷ আপনি যদি কয়েক বছর আগের দিকে তাকান, তাহলে বুঝবেন চীন আফ্রিকাকে ব্যাপক সম্ভাবনাময় অঞ্চল বিবেচনা করেই এগিয়েছে এবং বর্তমানে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী হচ্ছে চীন৷''
২০১২ সালের শুরুতে চীন ইংরেজি ভাষায় সিসিটিভি আফ্রিকা চালু করে৷ এই টিভি চ্যানেল ম্যাগাজিন, টক শো, তথ্যচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও আফ্রিকার মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেট টিভি ম্যাগাজিন প্রচার করছে৷ পাশাপাশি চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া কেনিয়ার একটি মুঠোফোন কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে সাব-সাহারান অঞ্চলে প্রথমবারের মতো মোবাইল নিউজ সার্ভিস শুরু করেছে৷
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আফ্রিকার মিডিয়া খাতে চীন আধিপত্য বাড়াতে এত উৎসাহী কেন? উত্তরটা দিলেন হারপর৷ তাঁর ভাষায়, পশ্চিমা গণমাধ্যম চীন সম্পর্কে সাধারণত নেতিবাচক সংবাদ বেশি প্রচার করে৷ কিন্তু আফ্রিকার জনসাধারণের কাছে চীন নিজেদের এমনভাবে উপস্থাপন করতে চায়, যা পশ্চিমা গণমাধ্যম থেকে ভিন্ন৷ তারা এখন চাইছে, আফ্রিকার জনসাধারণকে সেখানে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানাতে৷
পূর্ব আফ্রিকার মিডিয়া হাব খ্যাত কেনিয়ার নাইরোবিতে বিভিন্ন চীনা গণমাধ্যমের কার্যালয় রয়েছে৷ এদের মধ্যে আছে চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল, যারা গত কয়েকবছর যাবত সেখানে অবস্থান করছে এবং সোহেলি ভাষায় সংবাদ প্রকাশ করছে৷
চীনের এই মিডিয়া অগ্রগতির কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে ইথিওপিয়ার কথা৷ চীন সেদেশে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একটি ব্যবস্থা তৈরিতে অর্থায়ন করেছে৷ ফলে এখন ইথিওপিয়ার গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করতে গেলেই বিপাকে পড়ছে৷ এমনকি সাংবাদিকদের জেলও খাটতে হচ্ছে, যেমনটা চীনে দেখা যায়৷