আফ্রিকা ভ্রমণে কোথায় যাবেন?
৫০ টিরও বেশি দেশ নিয়ে বিশাল এক মহাদেশ আফ্রিকা৷ ডয়চে ভেলের প্রতিনিধি আদ্রিয়ান ক্রিশ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নানা দেশে ঘুরে তার পছন্দের একটি তালিকা করেছেন৷ দেখুন ছবিঘরে৷
দ্বীপস্বর্গ কমোরোস
ভারত মহাসাগরে মোজাম্বিক এবং মাদাগাস্কারের মধ্যে অবস্থিত কমোরোস৷ আফ্রিকার চারপাশে সমুদ্রের মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কার জল এখানে৷ এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য শ্বাসরুদ্ধকার, কিন্তু পর্যটকদের আনাগোনা একেবারেই কম৷ সারা বছরই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়া৷ ফলে মানুষের ভিড় থেকে দূরে এসে নীরবতায় ছুটি কাটানোর জন্য কমোরোস দারুণ এক স্থান৷
দুই মহাদেশের মিলনস্থল মরিশাস
যারা বিলাসী ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য আদর্শ জায়গা মরিশাস৷ ভারত মহাসাগরের দ্বীপটিতে অনেক হোটেলেই নিজস্ব সমুদ্র সৈকত এবং আরো নানা ব্যবস্থা রয়েছে৷ আফ্রিকা ও এশিয়ার সংস্কৃতির মিলন ঘটেছে এখানে৷ রেইনফরেস্ট, পাহাড়, সমুদ্র সৈকত, জলপ্রপাত মিলিয়ে প্রকৃতিও বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ৷
সাংস্কৃতিক রত্ন জাঞ্জিবার
এরই মধ্যে পর্যটকদের কাছে জাঞ্জিবার বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য৷ কিন্তু তারপরও এই দ্বীপটিতে যাওয়া উচিত৷ সুন্দর সমুদ্র সৈকত ছাড়াও জাঞ্জিবার শহরের প্রাচীনতম স্টোন টাউন দেখার মতো এক জায়গা৷ এখানে সংকীর্ণ গলির মধ্য দিয়ে হাঁটলেই পুরো দ্বীপের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে৷ প্রতি সন্ধ্যায় ফোরোধানী ফুড মার্কেটে নানা মজার মজার স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়৷
সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে, ক্যারিবীয় ছোঁয়া
এটিও একটি দ্বীপরাষ্ট্র৷ এর অবস্থান পশ্চিম আফ্রিকার গিনি উপসাগরে৷ সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে মাত্র দুই লাখ মানুষের আবাসস্থল৷ অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্ত্বেও এই দ্বীপগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা তেমন একটা নেই৷ কারণ খুব কম এয়ারলাইনসেরই ফ্লাইট রয়েছে দেশটিতে৷
চিত্তাকর্ষক কেপটাউন
কেপটাউনের মতো জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে যেতে বিদেশ থেকে ফ্লাইট খুঁজে পাওয়া কঠিন নয়৷ সাউথ আফ্রিকার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত বন্দরনগরটি চিত্তাকর্ষক টেবিল মাউন্টেন আচ্ছাদিত উপদ্বীপে অবস্থিত৷ এখানে সকালে আপনি সার্ফিংয়ে যেতে পারেন, বিকেলে ক্লাইম্বিং এবং সন্ধ্যায় যেতে পারেন আঙ্গুর বাগানে৷
হাসির দেশ গাম্বিয়া
গাম্বিয়াকে বলা হয় ‘আফ্রিকার হাস্যোজ্জ্বল উপকূল’৷ গাম্বিয়াতে বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষের দেখা সহজেই পাওয়া যায়, দারুণ সব সৈকতে বিশ্রাম নেওয়া যায়৷ এছাড়াও ভাল পর্যটন অবকাঠামোও রয়েছে৷ ‘স্মাইলিং কোস্ট’ ডাকনামের একটি ভৌগলিক কারণও রয়েছে৷ মানচিত্রে একটু ভালো করে তাকালেই বোঝা যায়, আফ্রিকার মূল ভূমিতে অবস্থিত ক্ষুদ্রতম অ-দ্বীপ দেশটির আকৃতি হাসিমুখের মতোই৷
নিঃসঙ্গ পিরামিডের সুদান
সুদানের মানুষ খুবই দয়ালু প্রকৃতির৷ সুদানিরা রসিকতার করে এটিকে ‘আগ্রাসী বন্ধুত্ব’ বলেও ডাকে৷ কারণ কারো সঙ্গে পরিচয় হলেই তাকে কিছুক্ষণ পর পর চা পানের আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ অবশ্য সুদানের কিছু অংশে সশস্ত্র সংঘাত চলছে৷ ফলে অনেক দেশের সরকার সুদান ভ্রমণের সুপারিশ করে না৷ আপনি সুদানে এলে, মেরো নুবিয়ান পিরামিডগুলি দেখতে ভুলবেন না৷ মিশরের পিরামিডগুলোর তুলনায় আকারে বেশ ছোট হলেও এগুলো কম চিত্তাকর্ষক নয়৷
প্রকৃতির সঙ্গে নামিবিয়ায়
দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার বিশাল এলাকা জুড়ে কিন্তু কম জনবহুল দেশটিতে সুউচ্চ বালির টিলাসমৃদ্ধ বিখ্যাত নামিব মরুভূমির অবস্থান৷ দেশটির মধ্য দিয়ে যাত্রা করলে চারপাশের প্রকৃতি আপনাকে মুগ্ধ করবে৷ সাফারি পর্যটকদের কাছেও নামিবিয়া জনপ্রিয়, কারণ এটি নানা ধরনের প্রাণীর প্রজাতির আবাসস্থল৷
সংগীত উপভোগে লাগোস
শান্তি ও নীরবতার পরিবর্তে আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চারে বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে যেতে হবে নাইজেরিয়ার রাজধানী লাগোসে৷ ব্যাপক হৈহল্লা, ব্যস্ততা রয়েছে এই শহরে৷ কিন্তু গ্যালারি, ফ্যাশন আর মুইজিকে পরিপূর্ণ এই শহরের সাংস্কৃতিক আবহ দারুণ৷
স্থাপত্য দেখতে মাপুতো
দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতোর একটি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে৷ মোজাম্বিকের সংস্কৃতি, ইস্টার্ন ব্লকের স্থাপত্য এবং পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক আমলের সুসংরক্ষিত ভবন, সবই এই আকর্ষণীয় জায়গায় পাওয়া যাবে৷ তবে কেবল স্থাপত্য যাদের পছন্দ নয়, তাদের জন্য রয়েছে সুন্দর কিছু সমুদ্র সৈকতও৷