1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে মাদক ব্যবসায় রোখার ব্যাপারে নেটোয় মতানৈক্য

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী১০ অক্টোবর ২০০৮

বুদাপেস্টে নেটোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে আফগানিস্তানে মাদক ব্যবসায় রোধ সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট স্ট্র্যাটেজী দেখা যাচ্ছে না৷ তবে হর্ন অফ আফ্রিকায় সোমালি জলদস্যুদের দুর্দ্দিন৷

https://p.dw.com/p/FXMi
আফগানিস্তানে প্রহরায় জার্মান সৈন্যছবি: AP

সমস্যাটি গুরুতর, অথচ তার সমাধান সহজ৷ বৈঠকের প্রথম দিনেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নিলেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে নেটোর সাতটি রণতরীকে সোমালি উপকুলে পাঠানো হবে৷ তাদের কাজ হবে জাতিসঙ্ঘের যে সব জাহাজে আফ্রিকায় খাদ্য সাহায্য যাচ্ছে, সেগুলিকে নিরাপত্তা দেওয়া৷ জাতিসঙ্ঘের সাধারণ সচিব বান কি-মুন স্বয়ং এই অনুরোধ করেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নও অনুরূপ ব্যবস্থা নিচ্ছে, ইত্যাদি৷ এমনকি যে সাতটি ফ্রিগেট পাঠানো হবে, সেগুলি নেটোর স্থায়ী নৌ-প্রতিক্রিয়া বাহিনীর অঙ্গ এবং ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে নিয়োজিত৷

আফিম এবং তালিবান

কিন্তু বুদাপেস্টে মূল আলোচ্য বিষয় যে আফগানিস্তান, সেটাও সকলের জানা ছিল৷ বিশেষ করে আফগানিস্তানে মাদক ব্যবসায় রোধের প্রসঙ্গটি, মার্কিণী এবং ব্রিটিশরা যে প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা করতে বিশেষ ভাবে আগ্রহী৷ এক্ষেত্রে যেন তাদের হয়েই প্রথমে বক্তব্য রাখলেন আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আবদুল রহিম ওয়ার্দাক৷ তিনি চান নেটোর সাহায্য, হেরোইন তৈরীর ল্যাবোরেটরীগুলিকে ধ্বংস করতে, এবং হেরোইন ও তা তৈরীর জন্য যে সব রাসায়নিক বাইরে, অর্থাত্‌ পাকিস্তান থেকে আসছে, সেগুলি বাজেয়াপ্ত করতে৷

কাজটা যে ভালো এবং প্রয়োজনীয়, তা’তে কোনো সন্দেহ নেই৷ কে না জানে যে তালিবান ঐ মাদক বিক্রীর টাকা থেকেই তাদের যুদ্ধ চালাচ্ছে৷ জনসাধারণ থেকে শুরু করে সরকারী মহল অবধি সকলের সঙ্গেই তাদের যোগসাজসের মূল সূত্র হল ঐ আফিম চাষ এবং হেরোইনের চোরাচালান৷ টাকার অঙ্কটাও এবার জানিয়ে দিলেন মার্কিণ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেট্‌স্‌৷ তালিবান মাদক বিক্রীর টাকা থেকে প্রতি বছর ছয় থেকে আট কোটি ডলার আয় করছে৷

বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধা

অথচ তালিবানের এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ কার্য্যকলাপ রোখার দায়ে কিন্তু শুধুমাত্র আফগান পুলিশ, যাদের সংখ্যা, সাজসরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণ, সব কিছুরই অভাব৷ ওদিকে আফগানিস্তানে তালিবান ক্রমেই আরো জোরদার হয়ে উঠছে, নেটো সৈন্যদের উপর আক্রমণের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে৷ কাজেই মার্কিণীরা এবং ব্রিটিশরা আর আফগান পুলিশ কবে লায়েক হয়ে উঠবে, সেজন্য অপেক্ষা করতে রাজী নয়৷ তারা চায় নেটোর সরাসরি হস্তক্ষেপ, গেট্‌স্‌ যাকে বলেছেন বৈধ নিরাপত্তা প্রচেষ্টা৷

জার্মানী, ইতালী আর স্পেনের মত হল, যে ঐ বৈধ নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় যদি অতীতের মতো যথেচ্ছ বেসামরিক আফগানদের প্রাণহানি ঘটে, তবে আফগান জনগণের আস্থা অর্জ্জনের প্রচেষ্টাটা জলে যাবে৷ জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্রান্‌ত্‌স্‌-ইয়োসেফ ইয়ুং একটি বড় জব্বর কথা বলেছেন৷ ইয়ুং বলেছেন, মাদক উত্‌পাদনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের একটি আফগান অবয়ব থাকা প্রয়োজন৷ অপরদিকে জার্মানী মাদকদ্রব্য পাচারের রুটগুলির উপর নজরদারী থেকে শুরু করে পুলিশের প্রশিক্ষণ অবধি সব কিছুতে সাহায্য করতে প্রস্তুত৷ কিন্তু মূল অভিযানগুলি আফগান নেতৃত্বে ঘটা উচিত্‌৷

শেষমেষ হয়তো এটা একটা স্বল্পমেয়াদী বনাম দীর্ঘমেয়াদী স্ট্র্যাটেজীর প্রশ্ন, এবং কর্ত্তব্যের ভাগ-বাঁটোয়ারার প্রশ্ন, এ্যাতোদিন ধরে আফগানিস্তানে ঠিক যে-ভাবে কাজ চলেছে এবং চলছে৷