আফগানিস্তানের পরিস্থিতি
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২আফগানিস্তানে মার্কিন ঘাঁটিতে কোরান শরিফ পোড়ানোর ঘটনার পর চলমান বিক্ষোভে একের পর এক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে৷ এখন পর্যন্ত মার্কিন সেনাসহ কমপক্ষে ২৯ জন নিহত হয়েছে এই সহিংস বিক্ষোভে৷ আহত হয়েছে দুই শতাধিক৷ ন্যাটো বাহিনীর কমান্ডারের দুঃখ প্রকাশ এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ক্ষমা প্রার্থনাও শান্ত করতে পারছে না ধর্মপ্রাণ সাধারণ আফগানদের৷ তারা দেশটিতে বিদেশি বাহিনীর উপস্থিতি এবং তাদের হাতে ইসলাম ধর্মের অবমাননার প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে৷
রোববার কুন্দুজ প্রদেশে এমনই এক বিক্ষোভ চলাকালে সাতজন মার্কিন সেনা আহত হয়েছে৷ মার্কিন ঘাঁটির বাইরে বিক্ষোভ চলাকালে ঘাঁটির ভেতরে হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়৷ এই পরিস্থিতিতে রোববার টেলিভিশনে ভাষণ দেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই৷ তিনি সাধারণ আফগানদের শান্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন৷ কারজাই আফগানদের অনুরোধ করেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে যাতে করে শত্রুরা এর সুযোগ না নিতে পারে৷
উল্লেখ্য, আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই মার্কিন সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পরদিন এই আহ্বান জানালেন প্রেসিডেন্ট কারজাই৷ এই হামলার পেছনে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়েছে তালেবান গোষ্ঠী৷ তারা জানিয়েছে, পবিত্র গ্রন্থের অবমাননার জবাব দিতে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে৷ এর আগে তালেবান গোষ্ঠী এক বার্তায় সাধারণ জনগণকে বিদেশি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানায়৷ রোববারের ভাষণে আফগান প্রেসিডেন্ট অবশ্য কোরান পোড়ানোর তীব্র নিন্দা করেছেন৷ একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এই ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দেওয়া উচিত৷
এদিকে শনিবার দুই মার্কিন সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সকল কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে ন্যাটো৷ নিহতদের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি৷ তবে বার্তা সংস্থাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নিহত দুইজন কর্নেল এবং মেজর পদবির কর্মকর্তা৷ তাদের হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার জন্য এখন তদন্ত চলছে৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্স আফগান কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানিয়েছে, আফগান পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে৷ তারা আবদুল সাবুর নামে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে সন্দেহ করছে৷ তবে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে তারা নিশ্চিত হতে পারেনি৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই